মহাকাশে খোঁজ পাওয়া গেলো সোনার খনির। নাসা আবিষ্কার করলো এমন এক গ্রহাণু যা সম্পূর্ণ সোনার তৈরি

মহাকাশ হল এমন একটি জায়গা যার শেষ নেই শুরু নেই। সেই মহাকাশের একটি ছোট্ট গ্রহ হল আমাদের পৃথিবী। সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে পৃথিবীর সাথে সাথে আরও সাতটি গ্রহ। এই গ্রহগুলোকে নিয়ে তৈরি আমাদের সৌরমন্ডল। এরকম অগুন্তি সৌরমন্ডল কে নিয়ে আমাদের মহাকাশের সৃষ্টি। মহাকাশে অবস্থিত এইরকমই গ্রহ নক্ষত্র ও উপগ্রহের মধ্যে নাসা এমন এক গ্রহাণু কে খুঁজে পেয়েছে যার মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে সোনা। অর্থাৎ মহাকাশে ভাসমান সোনার খনি।

২২৬ কিলোমিটার অর্থাৎ ১৪০ মাইল ব্যাস বিশিষ্ট এই গ্রহাণুটি খুঁজে পেয়েছে নাসার বিজ্ঞানীরা। যদিও গ্রহানুটির আবিষ্কার অনেক পূর্বেই হয়েছে, এটিকে সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ইতালির জ্যোতির্বিদ অ্যানিবেলে দে গ্যস্পরিও, ১৮৫২ সালে ১৭ ই মার্চ নেপলস থেকে। এবং গ্রীক পৌরাণিক চরিত্রের নাম অনুসারে নামকরণ করেছিলেন ১৬ সাইকি

১৬ সাইকিয়ের নাম দেখেই বোঝা যায় এটি ছিল গ্রহাণুর মধ্যে ১৬ তম গ্রহাণু। ১৬ সাইকির অবস্থান মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝে যে গ্রহপুঞ্জ রয়েছে তারই মধ্যে। নাসা বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই গ্রহাণুটির ওজন চাঁদের ওজনের প্রায় ১ শতাংশ। এত ছোট গ্রহাণুটি পরিপূর্ণ বিভিন্ন ধাতু দিয়ে। গ্রহাণুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে লোহা, সিলিকা ও নিকেল।

আরও পড়ুন-পৃথিবীর ভেতর কি আছে। পৃথিবীর ভেতরের ভূভাগ কেমন।

১৬ সাইকিতে উপস্থিত ধাতু গুলি কোটিপতি করে তুলতে পারে পৃথিবীর মানুষদের কে। এতে অবস্থিত ধাতুর পরিমাণ ১০ হাজার কোয়াড্রিলিয়ন পাউন্ড। অর্থাৎ ১০ হাজারের পিছনে আরো ১৫ টি শুন্য। তবে সোনার গ্রহাণুর খোঁজ পাওয়া গেলেও তা দিয়ে যে সমগ্র বিশ্বে অর্থের অভাব থাকবে না এই ধারণা একেবারেই ভ্রান্ত। কারণ একবার এই ধাতু গুলি বাজারে প্রচুর পরিমাণে সরবরাহ শুরু হলে তা বেশিদিন মূল্যবান হওয়া সম্ভব হবে না। কারণ দাম আপেক্ষিক ঘাটতির একটি প্রকারভেদ। সরবরাহ বেড়ে গেলে তার দামও কমে যাবে।

নাসার বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন ওই গ্রহাণুতে মজুদ যত পরিমাণ ধাতু রয়েছে তা বিক্রি করলে পৃথিবীর মানুষ জনপ্রতি ১০ হাজার কোটিরও বেশি টাকা করে পাবেন। মঙ্গল ও বৃহস্পতি মাঝে ঘুরে বেড়ানো এই ১৬ সাইকি সূর্যকে ১ বার প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় প্রায় ৫ বছর।

স্পেস এক্স এর সি.ই.ও ইলন মাস্ক জানান; তিনি নাসার সঙ্গে যোগ দিয়ে ২০২২ সালে এই গ্রহানুতে গিয়ে নমুনা সংগ্রহের জন্য সাহায্য করবে। ইলন মাস্ক জানান ২০২২ সালে স্পেসএক্স ও নাসা যৌথভাবে এই মিশনটি চালাবে। মিশনটির নাম দেওয়া হয়েছে ” মিশন সাইকি”

তবে এই ধরনের মিশন যে প্রথমবার করা হচ্ছে তা নয়, এর আগেও জাপানের স্পেস এজেন্সি এর একটি মিশন চালু হয়। এই মিশনটির নাম ছিল “হায়াবুসা ২”। জাপানের স্পেস এজেন্সি দ্বারা পাঠানো “হায়াবুসা ২” গ্রহাণু থেকে নমুনা নিয়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে রওনা দেয় এবং ২০২০ সালের ৬ ই ডিসেম্বর পৃথিবীতে এসে পৌঁছাবে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।   এই ধরনের আবিষ্কারে সারা বিশ্ব হতবাক। আগামী দিনে নাসা ও স্পেস এক্স এর যৌথ প্রচেষ্টা কতটা ফলপ্রদ হয় এখন সে দিকেই তাকিয়ে বিশ্ব।

“মহাকাশে খোঁজ পাওয়া গেলো সোনার খনির। নাসা আবিষ্কার করলো এমন এক গ্রহাণু যা সম্পূর্ণ সোনার তৈরি”-এ 1-টি মন্তব্য

Leave a Reply