মুঘল আমলের কুন্ডের আবিষ্কার, মাটি খুঁড়তেই অবাক প্রত্নতাত্ত্বিকরা

আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে আবিষ্কার হলো মুঘল আমলে তৈরী কুন্ডের, প্রত্নতাত্ত্বিকদের এই ধরনের  আবিষ্কার গোটা দেশে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। জানা গিয়েছে এই ধরণের কুন্ড অর্থাৎ পুকুর গুলি মুঘল আমলের অনেক প্রাসাদের বাগানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

মুঘল আমলের কুন্ডের আবিষ্কার, মাটি খুঁড়তেই অবাক প্রত্নতাত্ত্বিকরা

সম্প্রতি আবিষ্কৃত কুণ্ডটি মুঘলদের প্রাসাদে বা বাগানে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এটি আবিষ্কৃত হয়েছে রাজা টোডরমলের আবাসগৃহে। কিছুদিন ধরেই আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে টোডরমলের আবাসগৃহটি সংরক্ষণ এবং নতুন ভাবে সাজিয়ে তোলার কাজ চলছিল। বহু প্রাচীন এই আনবাসগৃহ যেটির নাম টোডরমল বারাদারি, এটির খুবই করুন অবস্থা হয়ে পড়েছিল। যে কারণে এটিকে পুনরায় সংরক্ষণ করা হচ্ছিলো, আর এই কাজ চলাকালীন কিছু খোঁড়াখুঁড়িতেই আবিষ্কৃত হয় অতি প্রাচীন কুণ্ডটি।

আরো পড়ুন – সম্প্রতি মিশরে পাওয়া গেলো আরো এক প্রাচীন ইতিহাস

বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম গুলিকে আগ্রার সুপারিনটেনডেন্ট আর্কিওলজিস্ট বসন্ত স্বরানকর জানান, শুধু যে কুন্ড টি আবিষ্কার করা হয়েছে তাই নয়, ওই কুণ্ডটির মাঝেই একটি জলের ফোয়ারাও আবিষ্কার করেছে তারা। জলের ফোয়ারা টি ৮.৭ মিটার লম্বা এবং এটির গভীরতা ১.১ মিটার। কুণ্ডটির চারপাশ বেশ সুন্দর করে সাজানো, এবং এটির মেঝে ও দেওয়ালে পঙ্খের কাজ করা রয়েছে। প্রাচীন কালে দেওয়াল গুলোতে এমনই পঙ্খের কাজ করা থাকতো। পঙ্খের কাজ করা হতো ঝিনুক জাতীয় প্রাণীদের খোলস কে পুড়িয়ে সেগুলো গুঁড়ো করে তাতে শঙ্খের গুঁড়ো মিশিয়ে। এই মিশ্রণ দ্বারা তৈরী আস্তরণ দেয়ালে লাগিয়ে সুন্দর নকশা বানানো হতো।

এই কুন্ডটি আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার তত্ত্বাবধানে যেখান থেকে আবিষ্কার করা হয়েছে সেই জায়গাটির নাম টোডরমল বারদারি। প্রাসাদটির মোট ১২টি দরজা থাকার কারণেই এটির নাম রাখা হয়েছিল টোডরমল বারদারি। সমসাময়িক মোঘল সম্রাট আকবরের নবরত্ন সভার অন্যতম পর্ষদ এবং মুঘল শাসিত ভারতের অর্থমন্ত্রী ছিলেন টোডরমল। তার আবাসগৃহে আবিষ্কৃত কুণ্ডটির মতোই আরো কুন্ড আবিষ্কার করা হয়েছিল ফতেপুর সিক্রি এবং দিল্লির লালকেল্লাতেও। এই ধরণের কুন্ডের আবিষ্কারে বেশ খুশি হয়েছে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া। তারা জানিয়েছেন ভবিষতে এটি পর্যটকদেরকে অনেক বেশি আকর্ষিত করবে। 

Leave a Reply