শনির উপগ্রহের মহাসাগরের জলে তীব্র আলোড়ন, সামনে আসলো গবেষকদের বিস্ময়কর তথ্য

পৃথিবীর যেমন উপগ্রহ অর্থাৎ চাঁদ রয়েছে, ঠিক তেমনই শনি গ্রহেরও চাঁদ রয়েছে। শনি গ্রহের এই চাঁদের নাম ‘এনসেলাডাস‘। শনি গ্রহের এই উপগ্রহতে গবেষকরা এক বিস্ময়কর বস্তু লক্ষ্য করেছেন, যা হতবাক করেছে বিজ্ঞানীমহলকে। ঠিক পৃথিবীর মতোই এই উপগ্রহের বিশাল মহাসাগরের জলে প্রতিমুহূর্তে হয়ে চলেছে তীব্র আলোড়ন সাথেই প্রচন্ড ঘূর্ণিঝড়।

শনির উপগ্রহের মহাসাগরের জলে তীব্র আলোড়ন

গবেষকদের মতে এমন আলোরনের সৃষ্টির পিছনের কারণটা কিছুটা এমন হতে পারে, শনির চাঁদের মহাসাগরের জল গরম হয়ে গেলে তা হালকা হয়ে উপর দিকে উঠে যায়। উপরে ওঠার পর চন্দ্রপৃষ্ঠের প্রচণ্ড ঠান্ডায় সেই জল ঠান্ডা হয়ে পুনরায় নিচে নেমে আসে। আর ঠিক এই উপরে উঠা ও নিচে নামার কারণেই চাঁদের মহাসাগরে প্রতিমুহূর্তে হয়ে চলেছে তীব্র আলোড়ন।

আরো পড়ুন – ৮ই এপ্রিল মঙ্গলের বুকে উড়তে চলেছে নাসার হেলিকপ্টার INGENUITY

শনি গ্রহকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার জন্য ‘ক্যাসিনি‘ নামক একটি মহাকাশযান পাঠানো হয় ২০১০ সালে। মহাকাশযান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, শনির চাঁদ-এর মহাসাগরের গভীরতা কমপক্ষে ৩০ কিলোমিটার, যেখানে পৃথিবীর মহাসাগরের গড় গভীরতা মাত্র ৩.৭ কিলোমিটার হয়ে থাকে। উপগ্রহের মহাসাগরের উপরিতলের প্রায় ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বরফের আস্তরণ দিয়ে ঢাকা। যে আস্তরণটি এই উপগ্রহের ভূপৃষ্ঠের নিচে ক্রাস্ট-এ অবস্থিত।

শনি গ্রহের এই চাঁদ এনসেলাডাস শনি গ্রহকে প্রদক্ষিণ করতে সময় নেয় পৃথিবীর দিন অনুযায়ী ১.৩৭ দিন। প্রদক্ষিণ করা কালীন এটি শনি গ্রহের কাছে চলে আসে এবং আবার দূরে চলে যায়। যার ফলে অভিকর্ষ বলের টান বাড়ে এবং কমে। আর এই টানের পরিবর্তনের কারণেই উপগ্রহের ভিতরে প্রচণ্ড তাপের সৃষ্টি হয়। যে তাপ নিচের বস্তুকে উপরের দিকে ঠেলে দেয় এবং উপরের ঠান্ডা বস্তুকে নিচে নামিয়ে দেয়। এই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ‘জিওথার্মাল অ্যাক্টিভিটি’। উপগ্রহে এই কারণেই মোটা বরফের আস্তরনে ফাটল ধরে। আর এই ফাটল দিয়েই মহাসাগরের জল ফোয়ারার মত বেরিয়ে আসে ভূপৃষ্ঠে এবং পুনরায় ঠান্ডা হয়ে জমে যায়।

১৯৮১ সালে ‘ভয়েজার-২‘ যখন শনি গ্রহের পাশ দিয়ে চলে যায়, তখনই এই উপগ্রহের উপরে বরফের গোলক লক্ষ করা গিয়েছিল। এর পরবর্তীতে ২০১০ সালের ক্যাসিনি মহাকাশযানটির পাঠানো ছবিতে দেখা যায়, এই বরফের গোলকের ফাটল থেকেই ফোয়ারার মত জল বেরিয়ে আসছে।

“শনির উপগ্রহের মহাসাগরের জলে তীব্র আলোড়ন, সামনে আসলো গবেষকদের বিস্ময়কর তথ্য”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন