আমেরিকার আকাশে ভয়ংকর উল্কা বিস্ফোরণ, ক্ষমতা ছিল ২০০ কেজি TNT-এর সমান

আচমকাই আমেরিকার আকাশ কেঁপে উঠল এক ভয়ঙ্কর উল্কা বিস্ফোরণে। প্রথম থেকে এই বিস্ফোরণের কোন আভাস না থাকায় সকলেই হতভম্ব হয়ে যায়। আমেরিকায় অবস্থিত ভারমন্টের মাটি থেকে বেশ খানিকটা উপরে বিশাল এক উল্কা বিস্ফোরন হয়েছে। এই বিস্ফোরণের শক্তি ছিল প্রায় ২০০ কেজি TNT বিস্ফোরণের সমান। আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা এই উল্কা বিস্ফোরণ সম্পর্কে বলে, এটি যখন বিস্ফোরণ হয় তখন সেই অঞ্চলে চারপাশ বিস্ফোরণের তীব্র শক্তির জন্য কেঁপে উঠেছিল, চারপাশে দিয়ে কেবল গোঁ গোঁ শব্দ শুনতে পায় প্রত্যক্ষদর্শীরা।

আমেরিকার আকাশে ভয়ংকর উল্কা বিস্ফোরণ

পৃথিবীতে এমন ঘটনা সচরাচর দেখা যায় না। তবে এই ধরনের উল্কার শক্তি এতটাই যে মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা সব সময় থেকেই যায়। মহাকাশে ঘুরে বেড়ানো গ্রহাণু বা ASTEROID এর ছোট টুকরো ছিল এই উল্কাখন্ডটি। নাসা জানায় এই ছোট অংশটি পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে কোন কারনে ঢুকে পড়ে এবং প্রচন্ড গতিতে পৃথিবীর ভূপৃষ্ঠের দিকে ধেয়ে আসে। বায়ুমণ্ডলের সাথে সংঘর্ষে ভূপৃষ্ঠ পর্যন্ত পৌঁছানোর আগেই ধ্বংস হয়ে যায় এটি।

গ্রহাণুর টুকরোটি যখন পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছিলো তখন এটির গতিবেগ ছিল শব্দের গতিবেগ এর ৫৫ গুণ এর থেকেও বেশি। আমাদের বায়ুমন্ডলে শব্দের গতিবেগ যেখানে ঘন্টায় ১২৩৫ কিলোমিটার সেখানে এই উল্কাখন্ডটির গতি ছিল ৬৮ হাজার কিলোমিটার প্রতি ঘন্টায়। নাসার তরফ থেকে জানানো হয়, এই উল্কাখন্ডটি ছিল ৪ কিলোগ্রাম ওজনের ও ৬ ইঞ্চি ব্যাসের। এটি প্রায় ২০০ কেজি ওজনের TNT বোমার সমান শক্তি উৎপন্ন করেছিল।

আরো পড়ুন – Viral Video: RPF বাঁচালো এক যুবকের প্রাণ। চলন্ত ট্রেনে ওঠার পরিণাম

এই খণ্ডটি আমেরিকার ম্যান্সফিল্ড পর্বতের ৮৪ কিলোমিটার উপর দিয়ে এগিয়ে যায় কানাডা সীমান্তের আকাশের দিকে। যখন একটি কানাডা সীমান্তে পৌঁছায় তখন মাটি থেকে উচ্চতা ছিল ৫৩ কিলোমিটার। এরপর যখন এই বিস্ফোরণ ঘটে তখন এর অবস্থান ছিল নিউপোর্ট শহর। এই শহরের আকাশে প্রায় ৫৩ কিলোমিটার উপরে এটি বায়ুমন্ডলে মিলিয়ে যায়। শুধু আমেরিকাতেই নয়, এই উল্কাপাত দেখা গিয়েছে নিউ ইংল্যান্ড ও কানাডা থেকেও।

তবে অবাক করার বিষয় হলো, মাত্র ৪ কেজি ওজনের একটি উল্কাখন্ড কিভাবে এত শক্তি উৎপন্ন করতে পারে? নাসার বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এত কম ওজন ও এত কম ব্যাস হওয়া সত্ত্বেও এটির এত শক্তি হওয়ার কারণ হল এর গতিবেগ। যখন এটি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে তখন এর প্রচন্ড গতির কারণে পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে চাপের সৃষ্টি হয় এবং সেই চাপের কারণে বাতাসে ফাঁকা জায়গা তৈরি হয়। যার থেকেই প্রবল আওয়াজ ও বিস্ফোরণের উৎপত্তি। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে এমন দৃশ্য সত্যিই অদ্ভুত ও দারুণ অভিজ্ঞতার।

Leave a Reply