গ্রিনল্যান্ডে আছড়ে পড়েছে গ্রহাণু, ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কি বলছেন বিজ্ঞানীরা

কিছুদিন আগে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) জানিয়েছিল পৃথিবীর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাবে মোট ৪টি গ্রহাণু। নাসার কথা অনুযায়ী পরপর চারটি গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাবে, তবে তিনটি গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে গেলেও একটি গ্রহাণু আছড়ে পড়েছে পৃথিবীর বুকেই। পূর্বে পরপর তিনটি গ্রহাণু থেকে রক্ষা পেয়েছিল পৃথিবী, তবে শেষ গ্রহাণুটি অবশেষে পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন গত ১১ ই মার্চ এই গ্রহাণু পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে, পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধে থাকা গ্রীনল্যান্ডের একটি পরিত্যক্ত অঞ্চলে আছড়ে পড়েছে এটি। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছিলেন যে গ্রহাণুটি পৃথিবী থেকে মাত্র ১৮৯০ কিলোমিটার দূর দিয়ে বেরিয়ে যাবে, কিন্তু মধ্যাকর্ষণের কারণে সেটি পৃথিবীতে সরাসরি ধাক্কা মারে। গ্রীনল্যান্ডের যে পরিত্যক্ত অঞ্চলে এটি আছড়ে পড়েছে সেই অঞ্চলের মারাত্মক কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

গ্রহাণু সম্পর্কে অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন এই ধরনের গ্রহাণু থেকে পৃথিবীতে ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা খুব কমই থাকে, এক্ষেত্রেও তাদের একই ধারণা ছিল। পৃথিবীতে এটি আছড়ে পড়ার পরে বিজ্ঞানীরা বুঝতে পেরেছেন এই ধরনের গ্রহাণু যদি আকারে বড় হয় এবং পৃথিবীতে দিকভ্রান্ত হয়ে আছড়ে পড়ে তাহলে অনেক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই গ্রহাণুগুলি দিকভ্রষ্ট হয়ে পৃথিবীতে আছড়ে পড়তে পারে, সেগুলির আকার যদি মাত্রাতিরিক্ত বড় হয় সেক্ষেত্রে পৃথিবীতে বেশ বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায়।

যে গ্রহাণু গুলির পৃথিবীর পাশ কাটিয়ে চলে যাওয়ার কথা ছিল সেগুলি নিয়ে গবেষণা করছিল নাসার জেট প্রপুলসন ল্যাবরেটরি। এই সংস্থাটি এই ধরনের হাজার-হাজার গ্রহাণু সম্পর্কে পর্যবেক্ষণ করে এবং রিয়েল-টাইমে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কেমন তা খতিয়ে দেখেন। গত শুক্রবার অর্থাৎ ১১ই মার্চ তারা পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে জানতে পারেন যে চারটি গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তার মধ্যে প্রথম তিনটি থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা একেবারে ছিল না বললেই চলে, তবে চতুর্থ গ্রহাণু ২০২২ইবি৫ এর তীব্র মাত্রায় পৃথিবীতে প্রভাব পড়ার কথা ছিল, কারণ এটি পৃথিবীর খুব কাছ দিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল পৃথিবীর পাশ কাটিয়েই গ্রহাণুটি বেরিয়ে যাবে, তবে সেটি পৃথিবীর পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার বদলে মাধ্যাকর্ষণ টান এর প্রভাবে গতিপথ পরিবর্তন করে এবং পৃথিবীতে আছড়ে পড়ে।

আরো পড়ুন-পিরামিডের আকারের ৩ গুণ বড় গ্রহাণু পাশ কাটিয়ে যাবে পৃথিবীর! কি বলছেন বিজ্ঞানীরা?

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে চারটি গ্রহাণু পৃথিবীর পাশ কাটিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তার মধ্যে সবচেয়ে ছোট গ্রহাণু ছিল এটি, এর আয়তন ছিল মাত্র ১.২ মিটার। ১২ই মার্চ গ্রীনল্যান্ডের পরিত্যক্ত এলাকায় এটি আছড়ে পড়েছে, সেটির সন্ধানও পায় বিজ্ঞানীরা। আকার এবং আয়তনে গ্রহাণুটি অনেক ছোট হওয়ায় ওই এলাকায় কোনো ক্ষয়ক্ষতি চোখে পড়ে নি তাদের। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন আকার ছোট ছিল বলেই হয়তো অনেক বড় বিপদ থেকে এড়ানো সম্ভব হয়েছে।

“গ্রিনল্যান্ডে আছড়ে পড়েছে গ্রহাণু, ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে কি বলছেন বিজ্ঞানীরা”-এ 2-টি মন্তব্য

Leave a Reply