আমাদের পৃথিবী অন্তহীন মহাকাশে এক অতি ক্ষুদ্র গ্রহ মাত্র, যা সূর্যকে প্রদক্ষিণ করে চলেছে বাকি গ্রহগুলির মতোই। আমাদের এই ক্ষুদ্র পৃথিবীর বাইরে যে অন্তহীন রহস্যে ঘেরা মহাকাশ, সেখানে অত্যাশ্চর্য এমন অনেক কিছুই আছে যা আমাদের ধারনারও বাহিরে। এমনই আশ্চর্যজনক ৫টি বস্তু সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো।
মহাকাশে অবস্থিত ৫টি আশ্চর্যজনক বস্তু
১. রহস্যজনক রেডিও সিগন্যাল



গত ২০০৭ সাল থেকেই বিজ্ঞানীরা এমন কিছু অতি শক্তিশালী, অতি উজ্জ্বল রেডিও সিগন্যাল গ্রহণ করেছে যেগুলি কেবল মাত্র কয়েক মিলিসেকেন্ডের জন্য স্থায়ী ছিল। এই রহস্যময় অদ্ভুত রেডিও সিগন্যাল গুলিকে বলা হয় ফার্স্ট রেডিও ব্রাস্ট (FRB)। পৃথিবী থেকে প্রায় কয়েক বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূর থেকে আগত এই রেডিও সিগন্যাল গুলি। গবেষকদের মতে এই রেডিও সিগন্যাল গুলি কোন এলিয়েনদের হওয়ার সম্ভাবনা নেই। সম্প্রতি একটানা পর পর ৬ বার এই FRB ক্যাপচার করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা যা আগামীদিনে এর রহস্য উদ্ঘাটনে সহায়তা করবে।
২. একটি চাঁদের আরো একটি চাঁদ



মহাকাশে থাকা গ্রহ গুলি কে প্রদক্ষিণ করে তার উপগ্রহ অর্থাৎ চাঁদ এবং এই চাঁদকে প্রদক্ষিণ করছে আরো একটি চাঁদ। ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুত। ইন্টারনেটের জগতে এটি মুনমুন নামে পরিচিত। সাবমুন, গ্র্যান্ডমুন, মুনেটেটস, মুনিটোস এবং মুনস নামেও ডাকা হয় এই মুনমুনকে। তবে এটি এখনো পর্যন্ত কাল্পনিক। বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গণনায় দেখা গেছে এটি কাল্পনিক হলেও অসম্ভব কিছু নয়। হয়তো আগামী দিনে জ্যোতির্বিদরা এটি আবিষ্কার করতে সক্ষম হবেন।
আরো পড়ুন – নাসার Perseverance rover প্রথমবার মঙ্গল গ্রহের শব্দ গ্রহণে সক্ষম হয়েছে
৩. উচ্চ তড়িৎ যুক্ত হাইপেরিয়ন



মহাকাশে থাকা আশ্চর্য বস্তুর অভাব নেই। কিন্তু সব থেকে যেটি অদ্ভুত দেখতে সেটি হল শনি গ্রহের হাইপেরিয়ন অর্থাৎ বলয। পিউমিস পাথরের মতো অসংখ্য পাথর টুকরো দিয়ে তৈরি এই বলয় গত ২০০৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে নাসার ক্যাসিনি মহাকাশযান পর্যবেক্ষণ করেছে। শনি গ্রহের এই বলয় পর্যবেক্ষণের সময় এই তথ্য সামনে আসে যে, এটি ‘পার্টিকেল বিম’ দ্বারা চার্জড এবং প্রচুর পরিমাণ স্থির তড়িৎ নির্গত হয় এই বলয় থেকে।
মহাকাশের ৫টি আশ্চর্যজনক বস্তু
৪. অরোরাস সহ একটি দুর্বৃত্ত গ্রহ (ROGUE PLANET)



গ্যালাক্সি বা ছায়াপথের মধ্যে দিয়ে ছুটে যাওয়া এই দুর্বৃত্ত গ্রহ গুলি সাধারণত যে তারা কে কেন্দ্র করে প্রদক্ষিণ করে সেই তারার মহাকর্ষীয় বলের কারণে নিজের অরবিট থেকে ছিটকে বেরিয়ে আসা গ্রহ। এই ধরনেরই একটি গ্রহ হলো SIMPJ01365663+0933473। এই গ্রহটি পৃথিবী থেকে ২০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থান করছে, সাথেই এটির চৌম্বকীয় শক্তি বৃহস্পতি গ্রহ থেকে ২০০ গুন বেশি। এই গ্রহের বায়ুমণ্ডলের প্রচন্ড চুম্বকীয় শক্তির কারণে ফ্লাশিং অরোরাস দেখতে পাওয়া যায়। যা বেশ সুন্দর ও অদ্ভুত। তবে এটি কেবলমাত্র রেডিও টেলিস্কোপ দ্বারাই দেখা সম্ভব।
৫. নিউক্লিয়ার পাস্তা



মহাবিশ্বের সবথেকে শক্তিশালী এই পারমাণবিক পাস্তা তৈরি হয়েছে একটি মৃত তারার বাম অংশ থেকে। একটি অনুকরণ অনুযায়ী, তারাটি তে থাকা নিউট্রন এবং প্রোটন একত্রিত হয়ে কুঁচকে যাওয়ার কারণে প্রবল মহাকর্ষীয় চাপের সৃষ্টি হয়। যার ফলে সেগুলি একত্রিত হয়ে জটলা তৈরি করে যা খুব সহজেই ভেঙে ফেলা সম্ভব। তবে এটি ভাঙতে একটি ইস্পাত ভাঙার জন্য যে বল প্রয়োজন তার থেকে ১০ বিলিয়ন শক্তি প্রয়োগ করতে হবে। এটি দেখতে বেশ অদ্ভুত, খানিকটা পাস্তার মতো। যে কারণে এটিকে পারমাণবিক পাস্তা বা নিউক্লিয়ার পাস্তা ও বলা হয়।
[…] […]