ভারতের এমন একটি জায়গা যেখানকার বিছে, বিষাক্ত পোকামাকড় কাউকে কামড়ায় না। আমরোহা দারগার বিছা

আমরোহা দারগার বিছা

বিছা বা কাঁকড়া বিছা আমরা সবাই দেখেছি। কেউ কেউ হয়তো বা এই বিছের হুলের স্বাদও পেয়েছি কিন্তু ভারতের উত্তরপ্রদেশের আমরোহা শহরে বিষাক্ত পোকা-মাকড়,বিছা, সাপ কখনো মানুষকে কামড়ায় না। মানুষ ও বিছা এখানে বন্ধুর মতো থাকে। এর কারণ হিসেবে স্থানীয় লোকেরা মনে করে আমরোহা শহরের ৮০০ বছরের পুরনো দরগা।

সেই দরগায় এক বাবার প্রভাবে এখানে কোন বিছে কখনো কাউকে কামড়ায় না। দরগাটির নাম হল “দাদাশাহ উলিয়ত”। এই দরগার চারিপাশে কাঁকড়া বিছের মত বিষাক্ত বিছে ঘুরে বেড়াচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় এখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম হয়। এখান থেকে বিছা আপনি নিজে হাতে নিয়েও দেখতে পারেন বিছা আপনার কোন ক্ষতি করবে না।

তো চলুন এর পেছনের রহস্য কি এবার দেখে নেওয়া যাক। আজ থেকে প্রায় ৬০০-৭০০ বছর আগে সৈয়দ হোসেন শরিফউদ্দিন শাহওয়ালীয়ত নামে এক ব্যাক্তি আরব থেকে ভারতে আসেন। সৈয়দ হোসেনের এই পরিক্রমায়র পূর্বে তার পিতা তাকে বলেছিলেন। যে জায়গাতে তুমি ভাত, মাছ ও আম একসাথে খেতে পাবে সেই জায়গাটি হবে তোমার থাকার স্থান।

আমরোহা দারগার বিছা, উত্তরপ্রদেশের আমরোহা দরগা

সৈয়দ হোসেন যখন উত্তরপ্রদেশের আমরোহা শহরে এসে পৌঁছায় তখন পথের ধারে বসে বিশ্রামের সময় তিনি এক মহিলাকে যেতে দেখেন ও তাঁর কাছে কিছু খাবারের আবেদন করেন। তখন সেই মহিলা তাকে ভাত-মাছ ও আমি থালায় সাজিয়ে দেন। এটি দেখে সৈয়দ হোসেন বুঝতে পারেন এটি তার স্থান। তার আসার আগেই এখানে নাসিরুদ্দিন শাহ নামে এক ব্যক্তি দরগায় থাকতেন। সৈয়দ হোসেন যখন নাসিরুদ্দিন শাহের কাছে থাকার অনুমতি চায় তখন নাসিরুদ্দিন শাহ তাকে দরগায় স্থান হবে না বলে জানিয়ে দেন। কিন্তু সৈয়দ হোসেন এখানেই থাকবে বলে স্থির করে। সেই সময়ে নাসিরুদ্দিন শাহ তাকে অভিশাপ দেয় যে তিনি যেই জায়গায় থাকবে তার চারিপাশে শুধু কীট-পোকামাকড় থাকবে।  

আরো পড়ুন- যমজ বাচ্চার গ্রাম কেরালা। ৫০০ বেশি যমজ বাচ্চা আছে এই গ্রামে

এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে সৈয়দ হোসেন বলেন আপনি যখন বলছেন তখন সেটা তো ঘটবেই। তবে এখানে কে বিষাক্ত পোকামাকড় গুলি থাকবে তারা কোনদিন কারোর ক্ষতি করবে না। তখন থেকে আজ পর্যন্ত এই দরগায় কোন বিছা কারোর কোন ক্ষতি করেনি। আরো একটি কথা প্রচলিত আছে যে আপনি যদি মনে করেন কোন একটি বিছা কে আপনি ঘরে নিয়ে যাবেন, তবে তা নিতে পারেন কিন্তু তার জন্য দরগার বাবার কাছে আপনার অনুমতি নিতে হবে এবং কখন সেই বিছাটিকে আপনি দিয়ে যাবেন তাও বলতে হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপনি যদি বিছাটিকে না দিয়ে যান তবে বিছাটি তার নিজের রূপ ধারণ করবে।

বিজ্ঞান এখনো পর্যন্ত এর সমাধান না করতে পারলেও দরগাটি তার নিজের ঐতিহ্য এখনো বজায় রেখেছে।

মন্তব্য করুন