পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম| আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম| কিছু তথ্য, ইতিহাস

পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম।

পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম আজ ভারতবর্ষের অধীনে। গুজরাটের আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম বা মোতেরা স্টেডিয়াম আজ সারা বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম ও ক্রিকেট ইতিহাসের দর্শক আসন বিশিষ্ট বৃহত্তম স্টেডিয়ামের তালিকায় ১ নম্বর। স্টেডিয়ামটির পুরো নাম দেওয়া হয়েছে “সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল স্টেডিয়াম“। যার আসন সংখ্যা ১ লক্ষ্য ১০ হাজার।  

১৯৮৩ সালে গুজরাটে প্রথম স্টেডিয়ামটি তৈরি হয়। তখন স্টেডিয়ামটির নাম ছিল ‘গুজরাট স্টেডিয়াম‘ ২০০৬ সালে প্রথমবার স্টেডিয়ামটি সংস্করনের পর দর্শন আসন সংখ্যা হয় ৫৪ হাজার। ২০১৫ সালে স্টেডিয়ামটির পূনঃনির্মাণের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় ও ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে স্টেডিয়ামটি পূনঃনির্মাণ সম্পন্ন হয়।  

স্টেডিয়ামটি গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন এর অধীনে রয়েছে। আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরি হতে খরচ হয়েছে ৮০০ কোটি টাকা। স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে সময় লেগেছে ৩ বছর। স্টেডিয়ামটির নির্মাণকারী সংস্থা হল ‘লারসেন ও টুব্রো'(Larsen & Toubro)। স্টেডিয়ামটি মোট ৬৩ একর জমিতে নির্মাণ করা হয়েছে। স্টেডিয়ামটিতে প্রবেশ করার জন্য মোট ৩ টি প্রবেশদার আছে।

পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম, আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম

স্টেডিয়ামটির নকশা এমনভাবে করা হয়েছে যাতে দর্শকদের খেলা দেখার জন্য কোন অসুবিধা না হয়। সেই কারণে এর সামনের দিকে কোন পিলার নেই। এখানে মোট ৯ টা পিচ তৈরি করা হয়েছে খেলার জন্য। অস্ট্রেলিয়ান ঘাসের পদ্ধতিতে নতুন ঘাস লাগানো হয়েছে। বৃষ্টি বা স্টেডিয়ামে ব্যবহৃত জল যাতে অপচয় না হয় তার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং পুনরায় সেই জল স্টেডিয়াম এর কাজে ব্যবহার করার ব্যাবস্থাও আছে।  

আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম এর প্রত্যেকটি স্ট্যান্ডে খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। খেলোয়াড়দের অনুশীলনের জন্য স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে আলাদা ব্যবস্থা করা আছে। গোস্ট গৃহ(club house) ছাড়াও আরও ৪০ ধরনের খেলাধুলার ব্যবস্থা আছে। একটা বড় সুইমিং পুল, বড় যানবাহন পার্কিংয়ের জায়গা ও আমেদাবাদ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা উপলব্ধ রয়েছে।

ভারতের অন্যান্য স্টেডিয়ামের মতো কোনো বাতিস্তম্ভ নেই এই স্টেডিয়ামে। আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামের বাতি স্টেডিয়ামের ছাদের সঙ্গে লাগানো হয়েছে। এই বাতি নেদারল্যান্ড থেকে আনা হয়েছে। এই বাতি রাতের বেলায় খেলার জন্য যথেষ্ট উপযোগী। মাঠের ভেতরে বাতির প্রভাবে কোন ছায়া পরবেনা। কোন খেলোয়ার যদি ক্রিকেট বল ক্যাচ ধরতে যায় তবে বাতির কোনো প্রভাব পড়বে না তার চোখের উপরে।  

স্টেডিয়ামে মোট ৭৫ টি ভি-আই-পি ঘর আছে। যা সম্পূর্ণভাবে এসি এবং অন্যান্য সুবিধায় পরিপূর্ণ। আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম এর পূর্বে সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট স্টেডিয়াম। যার দর্শক আসন সংখ্যা ১ লক্ষ্য। বলা যেতেই পারে আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়াম শুধু একটি স্টেডিয়াম নয় এটি ভারতবর্ষের একটি গৌরবের প্রতীক।  

আরো পড়ুন- আইপিএল দলের মালিকরা কিভাবে আয় করে 2023

পৃথিবীর বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম

আমেদাবাদ স্টেডিয়ামটির গুরুত্বপূর্ণ তথ্য

এই আমেদাবাদ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম টেস্ট খেলা হয়েছিল ১২ই নভেম্বর ১৯৮৩ সালে, প্রথম দিনের খেলাটি হয় ১৯৮৪ সালের ৫ই অক্টোবর এবং প্রথম একটি মাত্র আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি খেলাটি হয়েছে ২৮শে ডিসেম্বর ২০১২ সালে। স্টেডিয়ামটির উদ্বোধনের পর এখনো পর্যন্ত কোন ক্রিকেট খেলা আয়োজন করা হয়নি। এই মাঠে সুনীল গাভাস্কার টেস্ট ম্যাচে ১০ হাজার রান সমপূর্ণ করে, শচীন টেন্ডুলকার একদিনের ক্রিকেটে ১৮ হাজার রান সমপূর্ণ করে। এখনো পর্যন্ত সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের মোট ৫টি ম্যাচ খেলা হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম ২০১১ তে ভারত অস্ট্রেলিয়া কোয়াটার ফাইনাল, যেখানে ভারত অস্ট্রেলিয়া কে পরাজিত করেছিল।

Previous articleঅন্যান্য গ্রহগুলি থেকে সূর্য ও সূর্যাস্ত দেখতে কেমন লাগে
Next articleআন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন। ২০ বছর ধরে মানুষ এখানে বসবাস করছে
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

1 COMMENT

Leave a Reply