তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা, Bengali essay for class 3: বাংলা বিষয়ে তৃতীয় শ্রেণীর জন্য প্রবন্ধ রচনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। বিদ্যালয় পঠন পাঠন এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্রবন্ধ লিখতে হয়। তৃতীয় শ্রেণীর ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে নিম্নে বেশ কয়েকটি অতি প্রয়োজনীয় বাংলা বিষয়ের প্রবন্ধ রচনা সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা
প্রবন্ধ কাকে বলে:
যেকোনো প্রবন্ধ রচনার আগে অবশ্যই জেনে নেওয়া প্রয়োজন প্রবন্ধ কাকে বলে? যে কোন একটি বিষয়কে ভাব ও চিন্তার মধ্যে দিয়ে ভাষায় প্রকাশ করে সেই বিষয়কে প্রাণবন্ত করে তোলাই হলো প্রবন্ধ।
প্রবন্ধ কত প্রকার:
প্রবন্ধকে বিষয় ভেদে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা হয়। যেগুলি হল-
১. বর্ণনামূলক
২. ঘটনামূলক
৩. চিন্তামূলক
- Read More, দূর্গা পূজা রচনা class 3
- Read More, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা
- Read More, শঙ্খ ঘোষ প্রবন্ধ রচনা
তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বিশেষ কয়েকটি তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা নিম্নে আলোচনা করা হলো। যে বিষয়গুলোর উপরে প্রবন্ধ রচনা এখানে দেওয়া হয়েছে সেগুলি হল:
১. আমাদের দেশ ভারতবর্ষ রচনা

“সকল দেশের রানী সে যে আমার জন্মভূমি“
সূচনা:
সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা আমাদের দেশ ভারত বর্ষ। আমাদের দেশ সবুজে ঘেরা বিভিন্ন জাতি, ধর্ম ও বর্ণের মানুষের দেশ।
অবস্থান:
ভারতবর্ষ এশিয়া মহাদেশের একটি স্বাধীন দেশ। ভারতবর্ষের আয়তন বিশাল। ২৯টি রাজ্য এবং ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে ভারতে। ভারতের উত্তরে পৃথিবীর সবচেয়ে উঁচু হিমালয় পর্বত আছে, দক্ষিণে রয়েছে ভারত মহাসাগর, পূর্বে বাংলাদেশ ও চীন এবং পশ্চিমে পাকিস্তান ও আরব সাগর।
ভূ-প্রকৃতি:
আমাদের দেশের উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্রর মত নদ-নদী, এই নদ-নদী হিমালয় থেকে উৎপন্ন হয়ে ভারতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে পড়েছে। দাক্ষিণাত্যের মালভূমি উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে কৃষ্ণা, কাবেরী, নর্মদা ও গোদাবরী। এত নদী থাকার জন্য ভারতকে নদীমাতৃক দেশ বলা হয়। আমাদের ভারতবর্ষর আয়তন বিশাল হওয়ার কারণে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম জলবায়ু দেখতে পাওয়া যায়। কোথাও শীত থাকে, আবার কোথাও প্রচন্ড গরম এবং কোন কোন অঞ্চলে প্রবল বর্ষাও দেখতে পাওয়া যায়। প্রকৃতির বৈচিত্রের কারণে ভারতবর্ষে বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ জন্মায়।
জনজীবনের বৈচিত্র্য:
আমাদের দেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করেন। হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান, জৈন প্রভৃতি ধর্মাবলম্বী মানুষরা ভারতে বসবাস করেন। ভারতবর্ষের কিছু মহান ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন বুদ্ধ, মহাবীর, চৈতন্য, নানক, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, শ্রী অরবিন্দ, স্বামী বিবেকানন্দ, মহাত্মা গান্ধী, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু, ক্ষুদিরাম বসু প্রভৃতি বিখ্যাত বিশ্ব বরেণ্য মানুষেরা।
উপসংহার:
ভারত আমাদের গর্ব। আমরা আমাদের দেশকে মায়ের মতই ভালোবাসি।
২. ভারতের জাতীয় পশু রচনা

সূচনা:
ভারতের জাতীয় পশু বাঘ। বাঘ একটি বিড়াল জাতীয় বন্যপ্রাণী ভারতের সব রাজ্যেই বাঘ পাওয়া যায়।
বিবরণ:
ভারতের জাতীয় পশু বাঘ দেখতে খুবই সুন্দর। এর গায়ের রং হলুদ এবং তার উপরে কালো ডোরাকাটা দাগ থাকে। পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের পৃথিবী বিখ্যাত ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ দেখতে পাওয়া যায়। বাঘের তীক্ষ্ণ দাঁত আর থাবায় থাকে ধারালো নখ। বাঘের দৃষ্টিশক্তি ও শ্রবণ শক্তি খুব প্রখর। বাঘ চুপিসারে স্বীকার করে এবং শিকারের কাছাকাছি পৌঁছিয়ে তার উপরে লাফ দিয়ে শিকার করতে পছন্দ করে। বাঘ খুব ভালো সাঁতার কাটতে পারে। ভারতের বিভিন্ন ঘন জঙ্গলে বাঘ দেখতে পাওয়া যায়।
উপসংহার:
বাংলার রয়েল বেঙ্গল টাইগার বর্তমানে বিলুপ্তির দিকে চলে যাচ্ছে। ভারতের এই জাতীয় পশুকে রক্ষা করা প্রয়োজন।
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা, Bengali essay for class 3
৩. ভারতের জাতীয় পাখি রচনা

সূচনা:
ময়ূর ভারতের জাতীয় পাখি। পাখিদের দের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ময়ূর।
বিবরণ:
আকাশে মেঘ করলে ময়ূর তার সুন্দর পাখা মেলে আনন্দে নাচ করতে থাকে। তখন ময়ূরকে দেখতে সবচেয়ে সুন্দর লাগে। ময়ূরের পেখম থাকে কিন্তু ময়ূরীদের পেখম থাকে না। ময়ূরকে অনেকেই পোষ মানায়। এদের পালক দিয়ে সৌখিন পাখা তৈরি করা হয়। আমাদের দেশে বর্তমানে ময়ূর শিকার সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ।
ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে ময়ূর দেখতে পাওয়া যায়। ভারতের বিহার, উত্তর প্রদেশ, ওড়িশা প্রভৃতি রাজ্যগুলিতে প্রচুর পরিমাণ ময়ূর পাওয়া যায়।
উপসংহার:
ভারতের জাতীয় পাখি ময়ূর পাখিদের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর। আমরা বন্ধুর মতই এই পাখিকে ভালোবাসবো এবং রক্ষা করব।
৪. গরু রচনা

সূচনা:
গরু একটি গৃহপালিত পশু। গৃহপালিত পশুদের মধ্যে গরু অন্যতম। গরু আমাদের বিভিন্ন উপকারে আসে। গরু শান্তশিষ্ট ও নিরীহ প্রাণী হিসেবে পরিচিত।
বিবরণ:
গরু একটি চারপাওয়ালা প্রাণী। উচ্চতায় তিন থেকে চার হাত এবং দৈর্ঘ্যে পাঁচ থেকে ছয় হাত হয়ে থাকে। গরুর মাথায় দুটি চোখ, দুটি কান, দুটি শিং এবং পিছনে একটি দীর্ঘ লেজ রয়েছে। গরুর সারা শরীর ছোট ছোট ঘন লোম দ্বারা ঢাকা থাকে। গরুর বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে যেমন সাদা, কালো, লাল ইত্যাদি। পৃথিবীর সব জায়গায় গরু দেখতে পাওয়া যায়।
খাদ্য:
গরুর একটি তৃণভোজী প্রাণী। গরু ঘাস, খড়, গাছের পাতা ইত্যাদি খেতে পছন্দ করে। ভাতের ফ্যান এবং শুকনো দানা জাতীয় খাবারও খেয়ে থাকে গরু।
উপকারিতা:
গরু একটি উপকারী প্রাণী। গরু আমাদের দুধ দেয় যা আমাদের জন্য খুব পুষ্টিকর। এই দূধ থেকে দই, ছানা, মাখন ইত্যাদি নানান ধরনের মিষ্টান্ন দ্রব্য তৈরি করা হয়। এছাড়াও জমি চাষ করতে, পরিবহনের জন্য গরু অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি প্রাণী। গরুর গোবর কৃষিক্ষেত্রে উপকারী সার হিসাবে ব্যবহার করা হয়।
উপসংহার:
গরু অত্যন্ত উপকারী একটি প্রাণী, আমাদের উচিত গরুর প্রতি যত্নশীল হওয়া।
৫. আমাদের গ্রাম রচনা

সূচনা:
আমাদের গ্রামের নাম কালীনারায়নপুর। আমাদের গ্রাম নদীয়া জেলায় অবস্থিত। আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে চূর্ণী নদী।
সৌন্দর্য:
আমাদের গ্রামটি খুবই ছোট এবং সুন্দর একটি গ্রাম। আম, কাঁঠাল, বট গাছের মতো বিভিন্ন গাছে ঘেরা আমাদের এই ছোট্ট সবুজ গ্রামটি।
বিবরণ:
আমাদের এই ছোট্ট গ্রামে অনেক মানুষ একসাথে মিলেমিশে বসবাস করেন। আমাদের গ্রামে একটি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে, যেখানে আমরা পড়াশোনা করি। গ্রামের বেশিরভাগ মানুষেরাই শহরে চাকরি এবং চাষবাস করেন। গ্রামের অনেকে ব্যবসাও করেন। গ্রামের মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে পাকা রাস্তা, পাকা রাস্তার দুই ধার ঘেঁষে কাঁচাপাকা দুই ধরনের এই বাড়ি রয়েছে আমাদের গ্রামে। একটি ছোট্ট হাসপাতালও রয়েছে। হাসপাতালে অনেকেই চিকিৎসা করাতে আসেন।
উপসংহার:
আমাদের গ্রামকে আমরা মায়ের মতই ভালবাসি আমরা সকলে মিলে গ্রামের উন্নতির জন্য সর্বদা চেষ্টা করি।
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা, Bengali essay for class 3
৬. আমাদের বিদ্যালয় রচনা

সূচনা:
বিদ্যালয়কে বলা হয় মানুষ গড়ার কারখানা। আমি যে বিদ্যালয় পড়াশোনা করি সেই বিদ্যালয়ের নাম কালীনারায়নপুর নিম্ন-বুনিয়াদি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
অবস্থান:
আমাদের বিদ্যালয় নদীয়া জেলার তাহেরপুর থানার কালিয়ানপুর গ্রামে অবস্থিত।
বিদ্যালয় ভবন:
আমাদের বিদ্যালয় ভবনটি পাকা, আমাদের বিদ্যালয় মোট বারোটি কক্ষ আছে, এছাড়াও আছে একটি প্রধান শিক্ষকের কক্ষ, একটি শিক্ষকদের কক্ষ এবং একটি লাইব্রেরীর কক্ষ। অন্য কক্ষ গুলিতে আমাদের বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা হয়ে থাকে।
বিবরণ:
আমাদের বিদ্যালয় ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ১৫০ জন। প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষিত করার জন্য ১২ জন শিক্ষক রয়েছেন। তারা আমাদের খুব ভালোবাসেন এবং আন্তরিকভাবে পড়াশোনা শেখানো। পাঠ্যবই ছাড়াও অন্যান্য বই পড়ার জন্য আমাদের বিদ্যালয়ের একটি লাইব্রেরী রয়েছে। আমাদের লাইব্রেরীতে বিভিন্ন ধরনের বই রয়েছে পড়ার জন্য। আমাদের বিদ্যালয়ের সামনে একটি বড় খেলার মাঠ আছে। খেলার মাঠে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলা ও শরীরচর্চা পরিচালনা করে থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারা।
উপসংহার:
আমাদের বিদ্যালয় একটি আদর্শ প্রাথমিক বিদ্যালয়। আমরা সকলেই এই বিদ্যালয় পড়াশোনা শিখতে পেরে খুবই গর্বিত।
৭. শীতকাল রচনা বাংলা

সূচনা:
ছয়টি ঋতুর মধ্যে শীতকাল পঞ্চম স্থানে রয়েছে। পৌষ ও মাঘ এই দুই মাস মিলিয়ে শীতকাল হয়।
শীতকাল কালের রোদ খুবই আরামদায়ক। আমাদের দেশে গরম অনেক বেশি তাই অনেকের কাছে শীতকাল খুব প্রিয়। শীতকালের সকালে কুয়াশা পরে এবং রাতে শিশির পরে। শীতকালে দিন ছোট হয় এবং রাত বড় হয়। এই সময় চাষীরা নতুন ধান কেটে আনে। শীতকালে সবচেয়ে বেশি শাকসবজি পাওয়া যায়। বিভিন্ন ধরনের ফুল ফোটে শীতকালে। এই সময় সকলেই চড়ুইভাতি করতে যায়।
উপসংহার:
শীতকাল একটি আনন্দে ভরপুর ঋতু। এই সময় সকলেই চড়ুইভাতিতে মেতে ওঠেন। শীতকাল আমার প্রিয় ঋতু।
৮. গ্রীষ্মকাল বাংলা রচনা

সূচনা:
বৈশাখ ও জৈষ্ঠ্য এই দুই মাস নিয়ে হয় গ্রীষ্মকাল। ছয়টি ঋতুর প্রথম ঋতু এটি।
গ্রীষ্মকালে খুব গরম পড়ে। বৈশাখ মাসের শুরুতে বিকেলবেলায় কালবৈশাখী ঝড় হয়। গ্রীষ্মকালে গরমে ও সূর্যের তাপে পুকুর, খল, বিল, নদী সমস্তই শুকিয়ে যায়। জলের জন্যে এই সময় সকলেই খুব কষ্ট পায়।
গ্রীষ্মকালে আম, জাম, কাঠাল প্রভিতি ফল দেখতে পাওয়া যায়। এই সময় বেলি, জুঁই ফুল ফুটতে দেখা যায়। গ্রীষ্মকালে আমরা বাংলার নববর্ষ, রবীন্দ্রজয়ন্তী উৎসব পালন করে থাকি।
উপসংহার:
গ্রীষ্মকাল খুব কষ্টের সময় হলেও আমরা গরমকাল খুব উপভোগ করি।
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা, Bengali essay for class 3
৯. রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বাংলা রচনা

সূচনা:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘বিশ্বকবি’ নামে পরিচিত। তাঁর রচিত সাহিত্য সারা বিশ্বে এক অমূল্য সম্পদ।
জন্ম ও বংশ পরিচয়:
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬১ খ্রিস্টাব্দের ৭ই মে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাবার নাম ছিল মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মায়ের নাম সারদা দেবী।
ছাত্র জীবন:
ছাত্র জীবনে রবীন্দ্রনাথ ওরিয়েন্টাল সেমিনারি ওনর্মাল স্কুলে লেখাপড়া শুরু করেছিলেন। অল্প বয়সে তিনি বিদ্যালয় ছেড়ে বাড়িতে পড়াশোনা শুরু করেন। পড়াশোনার জন্য বিদেশে যাওয়ার পর সেখান থেকে কিছুদিনের মধ্যে ফিরে আসেন বাড়িতে। এবং দেশে ফিরে তিনি কবিতা, গান, গল্প, নাটক ইত্যাদি লেখা শুরু করেন।
কর্মজীবন:
তিনি তার জীবনের অধিকাংশ সময় গান, কবিতা, নাটক, গল্প ইত্যাদি লিখেছেন। তাঁর লেখা অন্যতম কাব্যগ্রন্থের নাম ‘গীতাঞ্জলি’, যার জন্য তিনি নোবেল পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। তিনি বঙ্গভঙ্গ স্বদেশী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। এছাড়াও ‘রাখি বন্ধন’ উৎসব প্রচলন করেন তিনি। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি ইংরেজ সরকারের দেওয়া ‘নাইট’ উপাধি ত্যাগ করেছিলেন।
উপসংহার:
১৯৪১ খ্রিস্টাব্দের ৭ আগস্ট বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর মৃত্যুবরণ করেন। প্রতিবছর পঁচিশে বৈশাখ আমরা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করি।
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা, Bengali essay for class 3
১০. নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু বাংলা রচনা

সূচনা:
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে অন্যতম অবদান যারা রেখেছিলেন তাদের মধ্যে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু অন্যতম। ভারতবর্ষের মানুষ আজও তাকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করে।
জন্ম ও বংশ পরিচয়:
সুভাষচন্দ্র বসু ১৮৯৭ খ্রিস্টাব্দের ২৩ শে জানুয়ারি উড়িষ্যার কটক শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ছিল জানকীনাথ বসু এবং মাতার নাম প্রভাবতী দেবী। সুভাষ চন্দ্রের পিতা জানকীনাথ বসু কটক শহরে ওকালতি করতেন।
ছাত্র ও কর্মজীবন:
সুভাষচন্দ্র বসু ‘রাভেনাস’ কলেজিয়েট স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন। তিনি অনেক মেধাবী ছাত্র ছিলেন। এরপর তিনি কলকাতার কটিস চার্চ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন এবং বিদেশে গিয়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ স্থান অধিকার করেন।
সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় পাশ করার পর তিনি দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি ইংরেজ সরকারের অধীনে চাকরি করতে পছন্দ করেননি। ইংরেজদের হাত থেকে দেশকে স্বাধীন করার জন্য তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগদান করেন। এরপর তিনি জাতীয় কংগ্রেসের একজন নেতা হয়ে ওঠেন। ইংরেজ সরকার যখন তাকে বাড়িতে নজরবন্দি করে রেখেছিল তখন তিনি ছদ্মবেশ ধারণ করে জার্মানিতে এবং এরপর জাপানে পালিয়ে যান। রাসবিহারী বসুর সাথে যুক্ত হয়ে তিনি তৈরি করেন ‘আজাদ হিন্দ ফৌজ’। আজাদ হিন্দ ফৌজ ভারতের মনিপুর দখল করেন। এরপর আজাদ হিন্দ সরকারের পতন হয় এবং কেউ কেউ মনে করেন নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন। এই রহস্য আজও রহস্যই রয়ে গিয়েছে।
উপসংহার:
ভারতের অন্যতম স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সর্বদা আমাদের মনে উচ্চস্থানে বিরাজ করবেন।
১১. ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর বাংলা রচনা

সূচনা:
ঈশ্বরচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় যাকে আমরা ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর নামে চিনি। আমরা তাঁকে করুণাসাগর এবং দয়ারসাগর নামেও জানি।
জন্ম ও বংশ পরিচয়:
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর মেদিনীপুর জেলার বীরসিংহ গ্রামে ১৮২০ খ্রিস্টাব্দের ২৬শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। ঈশ্বরচন্দ্রের মাতা ছিলেন ভগবতী দেবী এবং পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।
শিক্ষা ও কর্মজীবন:
ঈশ্বরচন্দ্র পাঁচ বছর বয়সে গ্রামের পাঠশালায় পড়াশোনা শুরু করেন। এরপর আট বছর বয়সে পিতা ঠাকুরদাস বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কলকাতায় চলে আসেন এবং সংস্কৃত কলেজে ভর্তি হন। ছোটবেলা থেকেই ঈশ্বরচন্দ্র খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ছোটবেলায় তিনি রাস্তার আলোতে পড়াশোনা করেছেন। সংস্কৃত কলেজ থেকে তিনি ‘বিদ্যাসাগর’ উপাধি লাভ করেন। লেখাপড়া শেষ করে তিনি চাকরিতে যোগ দেন। তিনি সংস্কৃত কলেজের অধ্যাপক ছিলেন। তিনি ”বর্ণপরিচয়’, ‘কথামালা’, ‘সীতার বনবাস’ ইত্যাদি বই লিখেছেন। তিনি সর্বদা তার মায়ের আদেশ মেনে চলতেন। তিনি একজন তেজস্বী পুরুষ ছিলেন। গরীব দুঃখীদের প্রতি তার অসীম দয়া ছিল। তিনি গরিব দুঃখীদের জন্য অকাতরে দান করতেন।
উপসংহার:
১৮৯১ খ্রিস্টাব্দের ২৯শে জুলাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর পরলোক গমন করেন।
তৃতীয় শ্রেণীর বাংলা প্রবন্ধ রচনা, Bengali essay for class 3 PDF – Click Here
আরো পড়ুন – স্বামী বিবেকানন্দের জীবনী রচনা
[…] […]
[…] […]