ইলুমিনাতি কি, ইলুমিনাতি কারা|What is illuminate?

ইলুমিনাটির অস্তিত্ব, ইলুমিনাটি কি
ইলুমিনাটির অস্তিত্ব, ইলুমিনাটি কি

ইলুমিনাতি কি: বিশ্বের সমস্ত রকম অদ্ভুত ঘটনা গুলির মধ্যে বহু আলোচিত একটি নাম হল ইলুমিনাটি। যা নিয়ে আজকের ইন্টারনেটের যুগে রয়েছে নানা রকমের প্রশ্ন। তাই সবার আগে যে প্রশ্নটি সামনে আসে সেটি হলো ‘কি এই ইলুমিনাটি? ‘ বস্তুত ইলুমিনাটি কোন ব্যক্তির নাম নয়। ইলুমিনাটি হলো একটি দল বা সংগঠন। এই সংস্থাটি গঠন করেছিলেন জার্মানির দার্শনিক অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট। এদের উদ্দেশ্য ছিল সারা বিশ্বে তাদের শাসন বিস্তার করা এবং এক নতুন সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। অ্যাডাম তার সংগঠন টির নাম রেখেছিলেন “দা অর্ডার অফ ইলুমিনাটি“। এদের প্রতিক চিহ্ন  ত্রিভুজ এর চুড়ার মধ্যে একটি চোখ বিশেষ।

ইলুমিনাতি কারা, ইলুমিনাতি কি

আজকের এই বর্তমান সময়ে ইলুমিনাটি নিয়ে নানা মতবাদ রয়েছে। ধারণা আছে এই ইলুমিনাটি দলের সদস্যরা তাদের কার্যসিদ্ধির জন্য কোন খারাপ কাজ করতেও পিছুপা হতো না। তারা ঈশ্বরকে মানত না। তার বদলে তারা উপাসনা করত শয়তান লুসিফারের। পৃথিবীতে যেমন ঈশ্বর রুপি ভালো শক্তি আছে তেমন রয়েছে শয়তান রুপি খারাপ শক্তিও। আর সেই শয়তান লুসিফারের কাছেই  ইলুমিনাটির সদস্যরা তাদের অন্তরাত্মা বেচে দিত। মনে করা হয় শয়তানের কাছে নিজের অন্তরাত্মা বেঁচে দিলে খুব সহজেই জীবনে সাফল্য লাভ করা যায়।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বিশ্বের যত রকম খারাপ কাজ করা হয় তার পেছনে ইলুমিনাটি সদস্যদের হাত থাকে। অনেকে মনে করে বিশ্বের সমস্ত সফল এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই ইলুমিনাতির সদস্য। এই সমস্ত রকম ধারণা থেকে এটাই মনে হয়। ইলুমিনাটির সদস্যরা নিজের স্বার্থসিদ্ধির জন্য শয়তানের কাছে তাদের অন্তর আত্মা বিক্রি করতো। সত্যিই কি তাই? সত্যিই কি সম্ভব ছিল শয়তান কে নিজের আত্মা বেচে জীবনে দ্রুত সাফল্য অর্জন করা। এই সমস্ত ধারণা কতটা সত্য তা পরিষ্কারভাবে বলা যায় না।

তবে এটা আজ পরিষ্কার ভাবেই বলা যায় পৃথিবীর সবচেয়ে গোপন সংগঠন গুলির মধ্যে সর্বাধিক আলোচিত এই ইলুমিনাটিতে সদস্য ছিল বিশ্বের খ্যাতনামা সম্পন্ন ব্যক্তিরা।ইলুমিনাটির সূত্রপাত ঘটেছিল জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশে। জার্মানির বাভারিয়া প্রদেশে ১৭৭৬ সালে ১লা মে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক অ্যাডাম ওয়েইশপ্ট তার বিশ্ববিদ্যালয়ের চার ছাত্রকে নিয়ে এই গোপন সংগঠনের প্রতিষ্ঠা করেন। এই সংগঠনের লক্ষ্যগুলি ছিল সমাজের সমস্ত কুসংস্কার, অশ্লীলতা, জনজীবনে ধর্মীয় প্রভাব এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অপব্যবহারের বিরোধিতা করা।তারা ইলুমিনাটির প্রতীক হিসাবে মিনার্ভার পেঁচাকে বেছে নেয়। মিনার্ভা হলো রোমান পুরাণের জ্ঞানের দেবী। ইলুমিনাটি শব্দটি ল্যাটিন শব্দ ইলুমিনেটাসের বহুবচন যার অর্থ হলো আলোকিত।

আরো পড়ুন- অন্যান্য গ্রহগুলি থেকে সূর্য ও সূর্যাস্ত দেখতে কেমন লাগে

What is illuminate in bengali

ইলুমিনাটি সদস্যরা তাদের তথ্য গোপন করতে ছদ্মনাম ব্যবহার করত। অ্যাডাম এর ছদ্মনাম ছিল স্পার্টাকাস। মাত্র চার জনকে নিয়ে অ্যাডাম এই সংগঠনটি শুরু করলেও ১৭৮৪ সালে এর সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৬৫০ জন। অ্যাডাম তার ইলুমিনাটি সংস্থাটিকে গোপন রাখতে চেয়েছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তা আর গোপন থাকেনি।

এরপর ১৭৮৫ সালে ধর্ম এবং রাজনীতির চাপে পড়ে তারা এই গোপন সংস্থাটি বন্ধ করতে বাধ্য হয়। এই সময়ের পর থেকে তাদের সম্পর্কে আর বিশেষ কোনো তথ্য পাওয়া যায় না। তবে অনেক ইতিহাসবিদরা মনে করেন যে ফরাসি বিপ্লবের পিছনে ইলুমিনাতির যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। এরপর থেকে চলচ্চিত্র, বই, নাটক ও সঙ্গিতের মাধ্যমে লেখকরা ইলুমিনাতির অস্তিত্বের আভাস দিয়ে গেছে। যেখানে দেখানো হয় বিশ্বের বড় বড় ঘটনাগুলির পিছনে গোপন ভাবে ইলুমিনাতির হস্তক্ষেপের কথা।বর্তমানে কতগুলি ইলুমিনাটি নামে সংস্থার নামও সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া যায় যাদের বিশেষ ফ্যান ফলোইং রয়েছে। এরা গোপনীয়তার কোন ধার ধারে না। তাই আদেও এদের সঙ্গে তৎকালীন ইলুমিনাতির কোন সম্পর্ক আছে কিনা সেই নিয়ে নানা জনে নানা মতভেদ রয়েছে।

তবে সব শেষে এটাই বলা যায় যে বর্তমানে যেই ধরনের গল্প ইলুমিনাতির সঙ্গে জড়িত হয়েছে সম্ভবত সেটা সেই সময়ে ধর্মীয় গোঁড়ামি ও সামাজিক দুর্নীতির বিরোধিতা করার জন্য ধর্মীয় যাজক ও রাজনৈতিক চরিত্রেরা এই সংস্থাকে কালিমালিপ্ত করার জন্যই করেছিল।

Previous articleপৃথিবীর ভেতর কি আছে। পৃথিবীর ভেতরের ভূভাগ কেমন
Next articleটাইম ক্যাপসুল কি? কি উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

Leave a Reply