রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা: বাংলা সাহিত্যে সকল সাহিত্যিক, লেখক, কবি সকলের মধ্যে সবচেয়ে শীর্ষস্থানে যিনি বিরাজমান তিনি হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর রচিত গ্রন্থ, কবিতা, উপন্যাস গুলি বাঙালির মনে আজীবন থেকে যাবে। তাঁর লেখা নাটক, কবিতা, গান, গল্প, উপন্যাস প্রত্যেকটি বাঙালির কাছে এক অমূল্য সম্পদ। শুধু বাঙালি নয় পৃথিবীর প্রত্যেকটি শিল্পী মানুষদের কাছে তাঁর লেখনি আজও অমূল্য। আজকের নিবন্ধে আমরা আলোচনা করব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা সম্বন্ধে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা এবং জীবনী সম্পর্কে জানা প্রত্যেকটি পড়ুয়ার কাছে একটি অতিপ্রয়োজনীয় বিষয়। যারা বাংলা ভাষায় পড়াশোনা করেন তাদের অবশ্যই এই ধরনের প্রবন্ধ গুলি জেনে রাখা প্রয়োজন। আজকে আমরা আলোচনা করব এরকম একটি প্রবন্ধ নিয়ে। আজকের প্রবন্ধের বিষয়ে ‘রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর’, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা। শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করা হচ্ছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা নিবন্ধটি সম্পূর্ণ পড়বেন। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায় এই ধরনের বিভিন্ন তথ্য পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি। অতএব আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করবেন ভবিষ্যতে এই ধরনের পোস্ট আরো বেশি করে পাওয়ার জন্য। চলুন তাহলে শুরু করা যাক আজকের আলোচ্য বিষয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা

বিষয়: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রবন্ধ রচনা

ভূমিকা:

বাঙালি জাতির কাছে একজন বিখ্যাত সাহিত্যিক এর কথা জিজ্ঞাসা করলে সবার আগে যে নামটি উঠে আসে তিনি হলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। প্রত্যেকটি বাঙালির মনে প্রাণ ছেয়ে আছেন তিনি, তাঁর লেখনীর মধ্যে দিয়ে। তার অন্যতম সৃষ্টি গুলোর জন্য ‘কবিগুরু‘ আখ্যা দেয়া হয়ে থাকে। বাংলা ভাষাকে তিনি নিয়ে গেছেন বিশ্ব দরবারে, শুধু কবি হিসেবেই নন কিংবা বাংলা সাধক হিসেবে নন, তিনি একজন চিন্তাবিদ এবং দার্শনিকও বটে। তিনি ছিলেন মনুষ্যত্বের সাধক, তার লেখনীর মধ্য দিয়ে তিনি ছেয়ে গেছেন প্রত্যেক মানুষের হৃদয়ে।

বাংলা সাহিত্যের এমন কোনো অংশ নেয় যেখানে তার লেখনী স্পর্শ হয়নি। সুদীর্ঘ জীবনে তিনি সমাজকর্ম, জমিদারির সাথে সাথেই তাঁর লেখনি মাধ্যমে প্রত্যেকের মনে জায়গা করে নিয়েছেন। কবি হয়েও তিনি মানুষকে কর্মে অনুপ্রাণিত করেছেন। বাংলা সাহিত্যে ‘নোবেল জয়ী কবি‘ রবীন্দ্রনাথ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা: জন্ম ও বংশ পরিচয়

বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন কলকাতার অন্যতম জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে। ইংরেজি ৭ মে, ১৮৬১ সালে (বাংলায় ২৫ বৈশাখ, ১২৬৮ বঙ্গাব্দ) জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তার পিতার নাম মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, মাতা ছিলেন সারদা দেবী। রবীন্দ্রনাথ ছিলেন তার পিতামাতার চতুর্দশ সন্তান। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শৈশব বেলায় কখনোই বিদ্যালয়ে শিক্ষা গ্রহণ করেননি, পারিবারিক রীতি মেনে চার বছর বয়স থেকেই গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াশুনা শুরু করেন তিনি। শৈশব কাল থেকেই তিনি বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান, সংস্কৃত বিষয়ে শিক্ষাগ্রহণ করেন। ছয় বছর বয়সে তিনি ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে ভর্তি হন।

শৈশব ও কৈশোর জীবন:

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং সারদা দেবীর চতুর্দশ সন্তানদের মধ্যে কনিষ্ঠতম সন্তান ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। বাল্যবয়স থেকেই তার ছিল সাহিত্য ও সংস্কৃতির উপর অধিক আগ্রহ। যেহেতু তার পরিবার সাহিত্য ও সংস্কৃতি চর্চার জন্য বেশ পরিচিত ছিল সেই সময়। সে কারণে রবীন্দ্রনাথের মধ্যেও সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি ছিল বিশেষ আগ্রহ দেখা দেয়। তাঁর দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন সম্মানীয় দার্শনিক এবং কবি। অন্যদিকে রবীন্দ্রনাথের মেজ দাদা সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর ছিলেন বাঙালি লেখক এবং ইন্ডিয়ান সিভিল সার্ভিসের প্রথম ভারতীয় সদস্য। রবীন্দ্রনাথের দিদি স্বর্ণকুমারী দেবী ছিলেন স্বনামধন্য উপন্যাসিক, অর্থাৎ ঠাকুর পরিবার সেই সময় সাহিত্য শিক্ষা এবং সংস্কৃতির দিক থেকে অনেকটাই এগিয়ে ছিল। যার প্রভাব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপর ভীষণভাবে পড়েছিল যা লক্ষ্য করা যায় তার লেখনীর মধ্য দিয়ে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনার পিছনে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরনার কারণ ছিলেন যতীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রী কাদম্বরী দেবী।

শৈশবকালে রবীন্দ্রনাথ তাঁর পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সান্নিধ্য খুব একটা পাননি। ১৮৭৫ সালে রবীন্দ্রনাথ তার মাকেও হারিয়েছিলেন মাত্র ১৪ বছর বয়সে। এত বড় পরিবার হওয়া সত্ত্বেও তিনি বড় হয়েছেন পরিবারের ভৃত্য দের কাছে। পারিবারিক গণ্ডির মধ্যেই তার শৈশব এবং বাল্য জীবন অতিবাহিত হয়েছে।

শিক্ষা জীবন:

জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারের রীতিনীতি অনুযায়ী চার বছর বয়স থেকে রবীন্দ্রনাথ গৃহশিক্ষকের কাছ থেকে তার শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। তিনি ওরিয়েন্টাল সেমিনারিতে ভর্তি হন, তার কিছু বছর পর তিনি নরমাল স্কুল, বেঙ্গল একাডেমী এবং সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে কিছুদিন পড়াশোনা করেছিলেন। শৈশব বয়স থেকেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার প্রতি আগ্রহ ছিল অনেকটাই কম। বাড়িতেই গৃহশিক্ষকের কাছেই তিনি বিদ্যা অর্জন করেন।

১৮৭৬ সালে ১১ বছর বয়সে তার উপনয়ন অনুষ্ঠিত হলে পিতার সাথে কয়েক মাসের জন্য তিনি দেশ ভ্রমণে বেরিয়েছিলেন। এরপর তিনি বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘুরে তার সাহিত্য সৃষ্টি করেন। একবার শান্তিনিকেতনে অপরূপ সৌন্দর্যে তিনি মুগ্ধ হয়ে অনেক রচনার সৃষ্টি করেছিলেন।

দেবন্ড্রনাথ ঠাকুরের কাছে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, জ্যোতির্বিজ্ঞান, সাধারণ বিজ্ঞান, ইতিহাস পাঠ নিতে শুরু করেছিলেন। এরপর ১৮৭৮ সালে তিনি ব্যারিস্টার পড়ার উদ্দেশ্যে লন্ডনে যান। লন্ডনে তিনি ব্রাইটন ও উবের মদিনা বিলায় ঠাকুর পরিবারের একটি বাড়িতে বসবাস শুরু করেন এবং সেখান থেকে পড়াশোনা শুরু হয়। পড়াশোনা চালু হওয়ার পর তিনি লন্ডনে ইউনিভার্সিটি কলেজ ভর্তি হন। তবে ১৮৮০ সালে তিনি কোন ডিগ্রী ছাড়াই ভারতে পুনরায় ফিরে আসেন। লন্ডন থেকে ফিরে আসার পরেই তার ভিতরে সাহিত্য প্রতিভার বিকাশ ঘটে এবং তিনি বিভিন্ন পত্রিকায় তার লেখা প্রকাশ করতে শুরু করেন।

কর্মজীবন:

১৮৮০ সালের লন্ডন থেকে ফিরে আসার তিন বছর পর অর্থাৎ ১৮৮৩ সালের ৯ই ডিসেম্বর ঠাকুর বাড়ির অধস্থন কর্মচারী বেণীমাধব রায়চৌধুরীর কন্যা ভবতারানীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিবাহ সম্পন্ন হয়। বিবাহ সম্পন্ন হওয়ার পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর স্ত্রীর নাম পরিবর্তন করে রাখেন মৃণালিনী দেবী। মৃণালিনী দেবী এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মোট পাঁচ সন্তান ছিলেন যারা হলেন মাধুরীলতা, রেনুকা, রথীন্দ্রনাথ, শমীন্দ্রনাথ, মীরা।

পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের নির্দেশে ১৮৯১ সালে তিনি অধুনা বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলা পাবনা উড়িষ্যা ঠাকুর পরিবারের জমিদারির তদারকি শুরু করার জন্য বাংলাদেশে যান। বাংলাদেশে গিয়ে কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠির বাড়িতে তিনি দীর্ঘ সময় অতিবাহিত করেছিলেন তার জীবনের।

সাহিত্য চর্চা:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনের অধিকাংশ সময় সাহিত্য চর্চার মধ্যে দিয়ে অতিবাহিত করেছেন। তার দাদার অনুপ্রেরণায় তিনি মাত্র ১৪ বছর বয়সে ‘বনফুল’ নামক একটি কাব্য রচনা করেছিলেন। দাদা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পাদনায় ১৮৭৭ সালে মাসিক ভারতী পত্রিকায় প্রকাশিত হয় তারা লেখনি। এরপর তার রচিত ‘কবি কাহিনী’, ‘প্রভাত সঙ্গীত’, ‘ছবি ও গান’, ‘সন্ধ্যা সঙ্গীত’ ‘কড়ি ও কমল’ ইত্যাদি কাব্য একের পর এক প্রকাশিত হতে থাকে। তিনি তার কাব্যের মধ্য দিয়ে ছবি তুলে ধরেছিলেন সমাজের বিভিন্ন সৌন্দর্যের।

১৮৮২ সালে কলকাতার ১০ নম্বর সদর স্ট্রিটের বাসস্থানে রবীন্দ্রনাথ ‘নিঝরের স্বপ্নভঙ্গ’ কবিতাটির রচনা করেন। এটি ছিল তার সমগ্র সৃষ্টিকর্মের ইঙ্গিত। এই সময়কালে তিনি রচনা করেছিলেন ‘মানসী’, ‘সোনার তরী’, ‘চিত্রা’ প্রভৃতি বিখ্যাত কাব্যগুলো। তিনি তার লেখনীর মধ্যে দিয়ে তুলে ধরেন গ্রামবাংলার সৌন্দর্য, সাধারণ মানুষের মাঝে গড়ে ওঠা রোমান্টিকতা, সুখ দুঃখের কাহিনী। তিনি এই কাব্য, গান, নাটক, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা রচনা করে গেছেন মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত। বাংলা সাহিত্য ভান্ডার তার লেখনী জুড়েই পরিপূর্ণতা লাভ করেছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের উপন্যাস সমুহ:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার জীবনে মোট ১৩ টি উপন্যাস রচনা করেছিলেন। এই ১৩টি উপন্যাস হল রাজর্ষি, বউ ঠাকুরাণীর হাট, নৌকাডুবি, চোখের বালি, প্রজাপতির নির্বন্ধন, ঘরে বাইরে, গোরা, যোগাযোগ, চতুরঙ্গ, শেষের কবিতা, মালঞ্চ, দুই বোন, চার অধ্যায়।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প সমুহ:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার সাহিত্য জীবনে বিভিন্ন ধরনের ছোট গল্পের রচনা করেছিলেন। তার রচিত ছোট গল্পের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু হলো ‘হৈমন্তী’, ‘দেনা পাওনা’, ‘নষ্টনীর’, ‘কাবুলিওয়ালা’, ‘মনিহারা’, ‘নিশীথে’, ‘কঙ্কাল’, ‘স্ত্রীর পত্র’ ইত্যাদি। এছাড়াও তিনি অনেক ছোট গল্পের রচনা করেছেন যেগুলি আজও বাঙালি সাহিত্যে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অর্জিত পুরস্কার সমূহ:

১৯১৩ সালে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তারা রচিত ‘গীতাঞ্জলি’ কাব্যের জন্য বাংলা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন। তার রচিত সাহিত্য ভান্ডারের মধ্যে গীতাঞ্জলি ছিল অন্যতম। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধি দান করেন, কিন্তু ১৯১৯ সালের জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেছিলেন। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে তার আঁকা একটি ছবি লন্ডন ও প্যারিসে প্রদর্শিত হয়েছিল। এর দশ বছর পর অর্থাৎ ১৯৪০ খ্রিস্টাব্দে ‘ডক্টরেট অফ লিটারেচার’ সম্মান পেয়েছিলেন তিনি। ১৯৬১ খ্রিস্টাব্দে সম্মান জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যে তার ছবি একটি ডাক টিকিটের প্রকাশ করা হয়েছিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামাঙ্কিত বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে কলকাতাতেই যার নাম বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। বীরভূমের রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। এছাড়াও রয়েছে রবীন্দ্রনাথের ঠাকুরবাড়ি, জমিদার কুঠিবাড়ি, যা শিলাইদহের কুঠিবাড়িতে অবস্থিত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামে নামাঙ্কিত ভারতের একটি জাতীয় হ্রদ ‘রবীন্দ্র সরোবর’।

বাঙালির জীবনে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব:

বাংলা সাহিত্যে তথা বাঙ্গালীদের জীবনে রবীন্দ্রনাথের প্রভাব নিয়ে বলাই বাহুল্য। বাংলা সাহিত্যকে তিনি এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন যা হয়তো আগামী দিনেও কেউ পৌঁছাতে পারবে না। নোবেল বিজয়ী দার্শনিক অমর্ত্য সেন বলেছিলেন “রবীন্দ্রনাথ একজন হিমালয় প্রতিম ব্যক্তিত্ব”। ভারতের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কবি হিসেবে বর্ণনা করা হয় তাকে। আজও বাঙালি পঁচিশে বৈশাখ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকী পালন করে এবং বাইশে শ্রাবণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ বার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে।

শেষ জীবনে রবীন্দ্রনাথ:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনের সূচনা লগ্ন বাংলা সাহিত্যের মধ্যে দিয়ে হলেও তার জীবনের মাঝামাঝি পথ থেকেই নেমে এসেছে তার জীবনে নানান রকম বেদনাদায়ক ঘটনা। ১৯০২ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বর মাত্র ৩০ বছর বয়সে তার পত্নী মৃণালিনী দেবী মারা যান। এরপর ১৯০৩ সালে ১৯ সেপ্টেম্বর তার কন্যা রেনুকা, ১৯০৫ সালের ১৯শে জানুয়ারি পিতা দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রয়াণ ঘটে। ১৯০৭ সালের ২৩ শে নভেম্বর তার কনিষ্ঠপুত্র শমিন্দ্রনাথ এর মৃত্যু হয়। এত বেদনা যন্ত্রনা সহ্য করার পরেও তার সাহিত্য কখনোই থেমে থাকেনি। জীবনের শেষ দশকে অর্থাৎ ১৯৩২ থেকে ১৯৪১ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথ মোট ৫০ টি গ্রন্থ প্রকাশ করেন। ১৯৩৭ সালের তিনি বিজ্ঞান বিষয়ক একটি প্রবন্ধ সংকলন প্রকাশ করেন যার নাম ছিল ‘বিশ্বপরিচয়’।

জীবনের শেষ চারটি বছর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ধারাবাহিকভাবে অসুস্থ হয়েছিলেন। দুইবার তিনি শয্যাশায়ী ছিলেন। ১৯৩৭ সালে একবার অজ্ঞান হয়ে গেলে কবিগুরুর অবস্থা বেশ আশঙ্কা যেন হয়ে পড়েছিল। ১৯৪০ সালে তিনি পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়েন কিন্তু এইবার আর সুস্থ হয়ে ওঠা হয়নি তার। ১৯৪১ সালে ২২ শ্রাবণ ৮০ বছর বয়সে জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়িতে নিজে বাসভবনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

উপসংহার:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিভা বিচিত্র্যতায় ও বিভিন্নমুখিতায় পরিপূর্ণ। মানুষের প্রতি তার প্রেম, প্রকৃতির প্রতি তার ভালোবাসা সর্বদাই ফুটে উঠেছে তার লেখনীর মধ্যে। তিনি আমাদের মাঝে থাকবেন চিরকাল, বেঁচে থাকবে তার সৃষ্টি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আজ হয়তো আমাদের মাঝে নেই তবে তারা রচিত প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি কবিতা, প্রতিটি গান, প্রতিটি গল্প উপন্যাস বাঙালির মনে প্রাণে বেঁচে রয়েছে আজও।

আজকের প্রবন্ধে আমরা জানলাম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচনা সম্বন্ধে। এই ধরনের সম্পূর্ণ বাংলায় বিভিন্ন তথ্য পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ফলো করতে পারেন।