লেবুর উপকারিতা। লেবুর রসের গুণাগুণ। লেবুর অপকারিতা

লেবুর উপকারিতা, লেবুর রসের গুণাগুণ, লেবুর অপকারিতা: পুরো বিশ্বে সবচেয়ে পরিচিত একটি ফল হল লেবু। লেবু প্রায় দিনই খেয়ে থাকেন অনেকেই। আর তার কারণ হলো এর বিশেষ গুনাগুন। লেবু স্বাদে টক এবং রসালো। সারাবিশ্বে নানাভাবে খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করা হয়। তবে লেবুর শরবত বেশি জনপ্রিয়। ভারত বর্ষ এবং বাংলাদেশে শুধু লেবুর শরবত জনপ্রিয় নয়। তার সঙ্গে জনপ্রিয় লেবুর চা এবং ডালে-ভাতে লেবু। যারা ডালে ভাতে বাঙালি তাদের প্রায় রোজই খাওয়া হয়ে থাকে লেবু।

তবে যারা লেবু চা বা ডাল-ভাতে প্রতিনিয়ত লেবু খান না তারা এর গুনাগুন জানলে আশা করা যায় তারাও লেবু খাওয়ার মাত্রা বাড়াবেন। আমরা সকলেই জানি লেবু হজমের পক্ষে খুবই উপকারী একটি ফল। শুধু এটুকুতেই শেষ নয়। এর রয়েছে বেশ কিছু লেবুর উপকারিতা গুণ। সেগুলো নিচে দেওয়া হলো-

লেবুর উপকারিতা, লেবুর রসের গুণাগুণ

১.প্রায়শই অনেকেরই মুখে, ঠোটে ও মাড়িতে ঘা হতে দেখা যায়। যার ফলে খাবার খেতে প্রচন্ড সমস্যা হয়। আর এটা হয় ভিটামিন সি এর অভাবে। লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে তাই প্রতিনিয়ত লেবু খেলে এই সমস্যা দূর হয়।

২.জন্ডিস নামক রোগটির হাত থেকে রক্ষা পেতে লেবু প্রচুর সাহায্য করে।

৩.লেবুর রস পান করলে গরমের সময় তার শরীরে মিনারেল ও ভিটামিনের যোগান দিয়ে থাকে। এতে শরীর ডিহাইড্রেট হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

৪.ছত্রাক এবং ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমনের হাত থেকে রক্ষা করে লেবু। তাই গায়ে দুর্গন্ধ জনিত সমস্যা থাকলে লেবুর রস বগলে মাখলে এই সমস্যা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

৫.লেবুর জল প্রত্যেক দিন যদি পান করা যায় তাহলে শরীরে গিটে গিটে হওয়া যন্ত্রণা থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।

৬.গরমের সময় অনেকেই নানারকম ঠান্ডা পানীয় পান করে থাকে। তাতে অনেক সময় লিভারের ক্ষতি হয়। আর লেবুর শরবত পান করলে এই সমস্যা হয় না। আর যদি কোন সমস্যা থেকে থাকে তা ধীরে ধীরে নির্মূল হয়। কারণ লেবু জল লিভার থেকে দূষিত টক্সিন পদার্থ বের করে দেয়।

৭.লেবুর রস আমাদের দেহের মেটাবলিজম বৃদ্ধি করে এবং এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

৮.যারা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভোগে তারা লেবুর শরবত পান করলে সুফল পাবে।

৯.ব্রোনো এবং খুশকির মত ত্বকের সমস্যা হলে লেবুর রস নিয়ে মাখলে উপকার পাওয়া যায়।

১০.যারা ওজন কমাতে চান তারা যদি প্রতিনিয়ত স্বল্প এবং নির্দিষ্ট পরিমাণে লেবুর শরবত হালকা গরম করে পান করতে পারেন তাহলে তা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।

এই রকম নানা গুণে ভরপুর বলেই অনেকে লেবুকে রোজের খাদ্যাভাসের স্থান দিয়েছে। সারা বছরই এই লেবুর জল পান করা যায়। শরীরকে ভালো রাখতে লেবুর রস তাই প্রত্যহ পান করা উচিত।   লেবু খাওয়া যেমন ভালো তেমনি রয়েছে এর থেকে কিছু বিপদও। জেনে নেওয়া যাক সেরকমই কয়েকটি বিষয়। 

আরও পড়ুন – তুলসীর গুণ। তুলসী গাছের উপকারীতা

লেবুর অপকারিতা :

১.সাম্প্রতিক কিছু গবেষণা থেকে জানা গেছে যে সমস্ত ব্যক্তি নিত্যদিন কোন বিশেষ ওষুধ বা শরীরে ক্যালসিয়াম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খান তারা সাইট্রিক এসিড আছে এমন ফল বিশেষ করে লেবুজাতীয় ফল না খাওয়াই ভাল এতে করে শারীরিক সমস্যা হতে পারে।   

২.লেবু ভালো এবং উপকারী হলেও লেবু খেলে অ্যালার্জি হতে পারে অনেকেরই। কারো কারো ক্ষেত্রে এমন দেখা যায় লেবুর রস বা শরবত পান করে রোদে বের হলে ত্বকে লাল কালো ছোপ এবং চুলকানির সমস্যা দেখা দেয়। ডাক্তারি পরিভাষায় এটি একটি ত্বকের রোগ। তাই অতিরিক্ত লেবু খেয়ে রোদে বেরোলে ক্ষতির কারণ হতে পারে।   

৩.লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আর অতিরিক্ত ভিটামিন সি এর কারণে শরীরের আয়তনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদিও আয়রন প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান তবে বেশি পরিমাণে হলে সেটা খুব একটা ভালো নয়।   

8.যারা শরীরের অতিরিক্ত চর্বি নিবারণের জন্য লেবুর শরবত বেশি পান করেন তাদের অনেক ক্ষেত্রে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। তাই সে ক্ষেত্রে দিনে দু তিনবার দাঁত মাজা উচিত এতে করে মুখে জমে থাকা সাইট্রিক এসিড দাঁতের ক্ষতি করতে পারে না।   

৫.মেদ কমানোর জন্য রোজ বেশি করে লেবু খেলে অনেক সময় পাকস্থলী ও যকৃতের কোষের ক্ষতি হয়।   

৬.লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। আর অতিরিক্ত ভিটামিন সি এর কারণে শরীরে আয়রনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। যদিও আয়রন প্রয়োজনীয় খনিজ উপাদান তবে তা বেশি পরিমাণে হলে সেটা খুব একটা ভালো নয়।   

৭.এই সমস্ত খারাপ গুনগুলির কথা মাথায় রেখে নিয়মিত ও নিয়ন্ত্রিত উপায়ে লেবু খেলে তা উপকারে লাগে। একটা কথা জানা দরকার যে কোনো বস্তুই খারাপ নয় শুধু তার সঠিক ব্যবহারটা জানা প্রয়োজন।

“লেবুর উপকারিতা। লেবুর রসের গুণাগুণ। লেবুর অপকারিতা”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন