পৃথিবীর বুকে এক অদ্ভুত হোটেল; যা রহস্য রোমাঞ্চের সম্ভার

পৃথিবীর বুকে এক অদ্ভুত হোটেল: পৃথিবীতে ভ্রমণ প্রেমী মানুষের অভাব নেই। কম বেশি ছোট বড় সকলেই সময় সুযোগ পেলে বেরিয়ে পড়েন ভ্রমণে। অজানা কে জানতে, অদেখাকে দেখতে সামান্য সময় পেলেই সে সুযোগটি কেউই হাতছাড়া করতে চান না। আর সেই ভ্রমণের সাথে যদি একটু এডভেঞ্চার থাকে তবে ভ্রমণের মজাটাই পুরোপুরি পাল্টে যায়।

দূরে কোথাও ভ্রমণে গেলে সেখানে থাকার জন্য প্রয়োজন বাসস্থানের। পৃথিবীতে এমনই এক হোটেল রয়েছে যেখানে কখনোই অ্যাডভেঞ্চার এর অভাব হবে না। কারণ যে হোটেল সম্পর্কে এখানে বলা হচ্ছে সেটি হল পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যের হোটেলের মধ্যে একটি।

পৃথিবীর বুকে এক অদ্ভুত হোটেল

যারা অ্যাডভেঞ্চর প্রেমী, ভ্রমণের সাথে যারা রোমাঞ্চ অনুভব করতে চান তাদের জন্য একেবারে উপযুক্ত উত্তর ক্যারোলিনা উপকূল থেকে ৩৪ মাইল দূরে একেবারে সমুদ্রের মাঝখানে তৈরি এই হোটেলটি।

চার পাশে বিশাল সমুদ্রের ঘেরা এই হোটেল রীতিমতো আপনার মনে শিহরণ জাগাতে বাধ্য। সমুদ্রের মাঝে হোটেলটির অবস্থানের জন্য এখানে আসার পথে ও আছে রোমাঞ্চ। এর উপর তৈরি হেলিপ্যাড হেলিকপ্টারে করে ভ্রমণে আসা ভ্রমণার্থীদের জন্যই তৈরি। হেলিকপ্টরে আসা সম্ভব না হলে রয়েছে দীর্ঘ সমুদ্র পথ এবং নৌকা যেটি আপনাকে নিয়ে যাবে সেখানে।

আরো পড়ুন – বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর

রোমাঞ্চে ভরা এই হোটেলটির নামটাও হোটেলটির মতই অদ্ভুত। হোটেলটির নাম ফ্রাইং প্যান টাওয়ার। যদিও প্রথম থেকে এটি হোটেল ছিল না। মার্কিন কোস্টগার্ড দ্বারা ব্যবহার করা এটি একটি বাতিঘর বা লাইটহাউস হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

১৮৫৪ সালে ফ্রাইং প্যান কে জাহাজ স্কট এর সাহায্যে নির্মাণ করা হয়। পরে সামুদ্রিক দুর্যোগের জন্য এটি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং সংস্কারের প্রয়োজন হয়ে পড়ে।

১৯৬০ এর গোড়ার দিকে পুনরায় এটিকে সংস্কার করা হয়। এটিতে পুরনো কাঠের বদলে বসানো হয় ইস্পাত। এরপর প্রায় দুই দশকে ২০টি কোস্টগার্ড ক্যাডেট এই টাওয়ারে থাকতে শুরু করেছিল। কিন্তু ১৯৭০ এর দশকে প্রায় শেষের দিকে জিপিএস প্রযুক্তির আবিষ্কার হওয়ার জন্য একটি অপ্রচলিত হয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত তা পরিত্যক্ত হয়।

আরো পড়ুন- পৃথিবীর ১২ টি প্রাকৃতিক রহস্যজনক স্থান

এর কয়েক বছর পর ২০১০ সালে উত্তর ক্যারোলাইনার একজন স্থানীয় বাসিন্দা রিচার্জ মিল টাওয়ার টি কিনে নেন। এবং তার সঙ্গে সঙ্গে এদিকে পুনরুদ্ধার করেন। সমুদ্র থেকে ৮৫ ফুট উচ্চতায় নির্মিত কাঠামোটিকে পুনরায় নির্মাণ করেন তিনি। হোটেলে ভ্রমণ করতে আসা ভ্রমণার্থি দের যাতায়াতের জন্যে হেলিপ্যাড ও তৈরি করেন তিনি।

এই হোটেলে আসা থেকে শুরু করে থাকাটা ও রোমাঞ্চকর। টাওয়ারের নিচে সমুদ্র রয়েছে প্রচুর হাঙ্গর অন্যান্য সামুদ্রিক প্রাণঘাতী প্রাণী যে কারণে এটি পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ংকর হোটেলে নামেও পরিচিত। হেলিকপ্টরে করে আসাই হোক না নৌকা করেই আসা হোক দুই ক্ষেত্রেই রোমাঞ্চের অভাব হবে না।

আরো পড়ুন – পৃথিবীর সবচেয়ে সুদর্শন পুরুষ কে

রিচার্ড মিল তার এই হোটেলটি নির্মাণ করেন অ্যাডভেঞ্চরপ্রেমী মানুষদের জন্য। যেখানে চোখ মেললেই চারিদিকে ঘেরা অতল সমুদ্র। এখানে থাকা খাওয়া সব ব্যবস্থাই তিনি করে রেখেছেন। এখানে দুই রাত থাকবার জন্য ব্যাক্তি প্রতি দিতে হবে ৫৯৮ ডলার যা ভারতীয় টাকায় ৪৪ হাজার টাকার কাছাকাছি। অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দিক থেকে এই হোটেলের জুড়ি মেলা ভার। যে কারণে সমস্ত হোটেল থেকে আলাদা করে চেনা যায় ফ্রাইং প্যান হোটেলটি কে। এমন রোমাঞ্চকর জায়গা হয়তো খুব কমই আছে পৃথিবীতে।(Disclaimer: উপরে উল্লেখিত নিবন্ধটি সম্পূর্ণ বিনোদনের জন্য লেখা হয়েছে। হোটেলের বিভিন্ন তথ্য ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহিত।)

Leave a Reply