পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা | বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা। বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা, বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা: মাকড়শা এমন এক প্রাণী যাকে আমরা প্রায় সকলেই ভয় পেয়ে থাকি। আমরা আমাদের চারপাশে যেসব  মাকড়শা দেখতে পাই তার মধ্যে অধিকাংশই বিষাক্ত নয়। তবে এমন কিছু প্রজাতি রয়েছে যারা অত্যন্ত বিষাক্ত ও প্রাণঘাতী। ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারিং স্পাইডার তারই মধ্যে একটি।

ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারিং স্পাইডার এর আরেকটি নাম হল আর্মড স্পাইডার বা বানানা স্পাইডার। এটি ফোনুত্রিয়া প্রজাতির অন্তর্ভুক্ত। এর নামের অর্থ গ্রীক ভাষায় ‘খুনী’। গ্রীনিজ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের বইতে ব্রাজিলের এই মাকড়সা এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়সা খেতাব দেয়া হয়েছে এবং তা একেবারেই যথাযথ। এর কামড় মানুষের জন্য বিশেষত বাচ্চাদের ক্ষেত্রে খুবই মারাত্মক হতে পারে।

আর্চনোলজিস্ট জো আন নিনা শেয়ালাল উল্লেখ করেছিলেন এই প্রাণীর ০.০০৬ মিলিগ্রাম বিষে একটি ইঁদুরের মৃত্যু ঘটে কিন্তু তা মানুষের জন্য কতটা ক্ষতিকর তার সঠিক ধারণা তিনি দেননি।

আরো পড়ুন- বিশ্বের ১০টি বিষাক্ত বিছে

বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা, বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা
ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারিং স্পাইডার

মাকড়সা টির নাম থেকেই বোঝা যায় যে এটি ব্রাজিলের প্রজাতি এবং এর আরও আটটি প্রজাতি যেগুলি সবকটি ব্রাজিলেই পাওয়া যায়। মাকড়শাটি একটি ক্ষতিকারক কপিএনিয়াস প্রজাতির যা ফোনুত্রিয়া প্রজাতি হিসেবে ভুল পরিচয় পেয়েছে। কারণ এই দুই ধরনের মাকড়সা দেখতে প্রায় একই রকমের হয়। এগুলির আকারে অনেক বড় হয়। এর দেহ ২ ইঞ্চি (৫ সেন্টিমিটার) এবং পায়ের স্প্যান গুলি প্রায় ৬ ইঞ্চি (১৫ সেন্টিমিটার) পর্যন্ত হয়ে থাকে। এগুলির বর্ণ ভিন্ন ভিন্ন যদিও সমস্ত প্রজাতির বেশিরভাগই বাদামী এবং এদের পেটে কালো দাগ থাকে।

এদের শিকার করার পদ্ধতি অন্যান্য মাকড়সা থেকে আলাদা। এজন্য অন্যান্য মাকড়শা দের মতো জাল তৈরি করে না, এরা মাটিতে স্বীকার করতে পছন্দ করে এবং সরাসরি আক্রমণের দ্বারা শিকার করে। পোকামাকড় অন্যান্য মাকড়সা এবং কখনো কখনো ছোট সরীসৃপ, উভচর ও ইদুর স্বীকার করে থাকে। তাদের কামড়ের বিষাক্ততা এবং তাদের উদ্বেগজনক চেহারা এই মাকড়সাকে আক্রমনাত্মক করে তোলে। তবে এমন আচরণ আসলে এদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা

পৃথিবীর সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা, বিশ্বের সবচেয়ে বিষাক্ত মাকড়শা
ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারিং স্পাইডার

এদের উপর আক্রমণ হলে এরা তাদের প্রথম দুই জোড়া পা বাড়িয়ে দেবে। এই নাটকীয় এবং ভয়ঙ্কর ভঙ্গি অন্য প্রজাতির উপর একপ্রকার সতর্কবার্তা। এদের এই রকম অঙ্গভঙ্গি শিকারীদের কাছে ইঙ্গিত দেয় যে বিষাক্ত মাকড়সা আক্রমণ করতে প্রস্তুত। তাদের কামড় আত্মরক্ষার একটি মাধ্যম এবং কেবল তখনই করা হয় যদি তারা উদ্দেশ্যমূলক ভাবে বা দুর্ঘটনার দ্বারা প্ররোচিত হয়। এই মাকড়শার কামড়ে মৃত্যুর খবর আজ পর্যন্ত ১০ টি পাওয়া গেছে।

এই মাকড়সা মানুষকে কামড়ানোর পরে, ঘাম এবং আক্রমনস্থলে প্রচণ্ড জ্বলন্ত ব্যথার মতো প্রাথমিক লক্ষণগুলি অনুভব করতে পারেন। ৩০ মিনিটের মধ্যে, লক্ষণগুলি সিস্টেমেটিক হয়ে ওঠে এবং উচ্চ বা নিম্ন রক্তচাপ দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে, এছড়া ধীর হার্টবিট, বমি বমি ভাব, পেটে ক্র্যাম্পিং, হাইপোথার্মিয়া, ভার্টিগো, ঝাপসা দৃষ্টি, খিঁচুনি এবং প্রচণ্ড ঘামের সাথে শক লাগতে পারে। যাদের ব্রাজিলিয়ান ওয়ান্ডারিং মাকড়সার কামড়ায় তাদের উচিত অবিলম্বে চিকিত্সার সহায়তা নেওয়া।

এছাড়াও পৃথিবীতে আরও কিছু বিষাক্ত মাকড়সার মধ্যে রয়েছে দ্য ব্রাউন রেক্লাস স্পাইডার। ০.২৫ ইঞ্চি দেহ এবং ১ ইঞ্চি অগ্রপদ বিশিষ্ট এই মাকড়শা আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বিষাক্ত মাকড়শা। আমেরিকা, ব্রাজিল এবং অস্ট্রেলিয়ার অপর আরেক বিপদজনক মাকড়সা ফানেল ওয়েব স্পাইডার। যার কামড়ে ১৯২০ এর দশকে সিডনিতে অনেকের মৃত্যু হয়। তবে আধুনিক প্রযুক্তির এই সময়ে মোটামুটি প্রতিটি বিষাক্ত মাকড়শার ই প্রতিষেধক রয়েছে যা অনেকটাই সস্তির কারণ।

Previous articleপৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুততম বাইক
Next articleমাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট ২০২৩ কবে বেরোবে
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

Leave a Reply