আমাদের সৌরজগতের আটটি গ্রহের মধ্যে সবচেয়ে বড় বৃহস্পতি। আর এই বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ ইউরোপায় নয়া অভিযান শুরু করতে চলেছে নাসা। আমেরিকার অন্যতম মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) বৃহস্পতির চাঁদ ইউরোপায় যাওয়ার দায়িত্ব দিতে চেয়েছে ইলন মাস্কের SpaceX কোম্পানীর উপর। ইউরোপায় জল ও প্রাণের সন্ধান করতেই নাসার এই নতুন অভিযান।
আমেরিকার এই মহাকাশ সংস্থা একটি বিবৃতিতে জানায় আগামী ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে তাদের মহাকাশযানকে। যে মহাকাশযান টির নাম হতে চলেছে ফ্যালকন হেভি রকেট। সম্প্রতি নাসার সঙ্গে স্পেসএক্সের একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যে চুক্তির মূল্য ছিল ১৭৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা ভারতীয় মুদ্রায প্রায় এক হাজার ১,৩২৫ কোটি টাকা।
এক কথায় বলতে গেলে নাসার এখন একমাত্র ভরসা স্পেসএক্স। ইলন মাস্কের এই কোম্পানি দ্বারা নির্মিত রকেট গুলি আগামী দিনে নাসাকে সাহায্য করবে বিভিন্ন মহাকাশ অভিযানের জন্য। পৃথিবী থেকে বৃহস্পতির চাঁদ অর্থাৎ ইউরোপার দূরত্ব প্রায় ৩৯ কোটি মাইল অর্থাৎ ৬৩ কোটি কিলোমিটার। এত বেশি দূরত্বের কারণে উৎক্ষেপণের পর থেকে সেখানে যেতে সময় লেগে যাবে প্রায় পাঁচ বছর। তাদের এই অভিযানের নাম ইউরোপা ক্লিপার। ইউরোপা ক্লিপারের মাধ্যমে বৃহস্পতির চাঁদের বিষয় বিস্তারিত গবেষণা করতে চান তারা।
ইউরোপা ক্লিপারে হাই রেজুল্যুশনের ছবি তোলার জন্য উন্নত প্রযুক্তির ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, এছাড়াও ইউরোপার পৃষ্ঠদেশ এবং বায়ুমণ্ডলের মানচিত্র তৈরি করার জন্য একটি বিশেষ ক্যামেরা থাকবে মহাকাশযানে। সাথেই থাকবে একটি স্পেকট্রোমিটার। বৃহস্পতির এই চাঁদ অর্থাৎ ইউরোপার মাটির নিচে জল আছে কিনা সে বিষয়ে অনুসন্ধান চালানোর জন্য থাকবে একটি বিশেষ ধরনের রাডার।
Launching October 2024! Our @EuropaClipper will ride on a Falcon Heavy rocket carrying a sophisticated suite of science instruments to investigate whether Jupiter’s icy moon has conditions suitable for life: https://t.co/D5QYu51YfX pic.twitter.com/eJGu2TtHLK
— Thomas Zurbuchen (@Dr_ThomasZ) July 23, 2021
নাসার এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ইউরোপার ভূপৃষ্ঠের হাই রেজুলেশন ছবি সংগ্রহ করা। এছাড়াও বর্তমানে চলা ভূতাত্ত্বিক ক্রিয়া-কলাপ এর লক্ষন পর্যবেক্ষণ, বরফের আস্তরণ এর ঘনত্ব, উপগ্রহটিতে থাকা সমুদ্রের গভীরতা, লবণের পরিমাপ ইত্যাদি তথ্য সংগ্রহ করতে চায় নাসা।
আরো পড়ুন-১০তম উড়ানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে নাসার ইনজেনুইটি হেলিকপ্টার
বৃহস্পতি গ্রহে নাসার এই অভিযান প্রথম নয়। এর পূর্বেও নাসা পরিকল্পনা করেছিল এই চাঁদে যাওয়ার। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী স্পেস লঞ্চ সিস্টেম (SLS) রকেটের মাধ্যমে উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। তবে আর্থিক এবং সময়ের অভাবে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে হয় তাদের। যেহেতু বর্তমানে বিভিন্ন মহাকাশ অভিযানে স্পেসএক্স এর রকেট ব্যবহার করা হয় সেহেতু নাসা ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিযানের জন্য SpaceX এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।
“বৃহস্পতির চাঁদ-এ নাসার নয়া অভিযানে দায়িত্ব পেলেন ইলন মাস্ক”-এ 1-টি মন্তব্য