পৃথিবীর বুকে এক অদ্ভুত গোলাকার পাথর

পৃথিবীর বুকে এক অদ্ভুত গোলাকার পাথর: দক্ষিণ পূর্ব ইউরোপ মহাদেশের বলকান পেনিনসুলা দেশের অন্তর্গত বসনিয়া শহরের একটি জঙ্গলে এই বৃহদাকৃতির পাথরের বলয় দেখতে পাওয়া যায়। গোলকটি অনেকটাই বড় ছিল এবং গোলকের একটি অংশ আবর্জনার স্তুপ থেকে বেরিয়ে এসেছে। গোলকটি ৪ থেকে ৫ ফুটের ব্যাসের। গবেষণা করে দেখা গেছে এটিতে লোহার পরিমাণ অনেকটাই বেশি।

অদ্ভুত গোলাকার পাথর

প্রত্নতত্ত্ববিদ ‘সেমির ওসমানাগিচ‘ এর মতে বসনিয়ার জঙ্গলের যে গোলাকার পাথরের বস্তুটি পাওয়া গেছে সেটি ১ হাজার বছর পুরনো সভ্যতার অস্তিত্ব হতে পারে। এখানে বলা যেতে পারে ‘সেমির ওসমানাগিচ‘ একজন প্রত্নতত্ত্ববিদ যিনি ১২ থেকে ১৫ বছর ধরে বিভিন্ন স্থানের গোলাকার পাথর গুলোকে নিয়ে গবেষণা করে আসছে। বসনিয়ার গোলকটি তারই আবিষ্কৃত এবং তিনি গোলকটি কে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাথরের গোলক রূপে বর্ণনা করেছেন। 

এরপূর্বে প্রত্নতাত্ত্বিক ‘সেমির ওসমানাগিচ’ এরকমই একটি পিরামিডের কথা প্রকাশ করেছিলেন যেখানে তিনি বলেছেন, বসনিয়ার মাটির ভিতরে একটি সুড়ঙ্গের মধ্যে তিনি একটি পিরামিডের অস্তিত্ব খুঁজে পেয়েছেন।  যেটি প্রায় ১২ হাজার বছর পুরনো প্রাচীন পিরামিড। কিন্তু পরবর্তীকালে অন্যান্য প্রত্নতত্ত্ববিদরা জায়গাটি পরিদর্শন করেন এবং বলেন যে এটি একটি পাহাড় যা পিরামিড ভেবে গণ্য করা হয়েছিল। 

Unesco যেটি সমগ্র পৃথিবীর শিক্ষা বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থা। যারা আমাদের পৃথিবীর সমস্ত দেশের বিভিন্ন ঐতিহ্যশালী স্থান গুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। তাদের মতে এই ধরনের গোলাকার পাথরের গোলক কোস্টারিকার বিভিন্ন স্থানে দেখতে পাওয়া যায়। গবেষকদের মতে গোলকটি প্রায় পাঁচশত বছর পূর্বের হারানো সভ্যতার অস্তিত্ব। আবর্জনা স্তুপের মধ্যে প্রথমবার এই গোলকের আংশিক অংশ দেখা গেছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে গোলক টি ১০০০ বছরের পুরনো সভ্যতার দ্বারা তৈরি। কিন্তু ভূতাত্ত্বিকরা এই তত্বকে স্বীকার করেননি। তারা এই গোলকটিকে এই ভাবে বর্ননা করেছেন যে এটি বাদামি ও লাল বর্ণের উচ্চ লোহার উপাদান দিয়ে তৈরি প্রাকৃতিক ভাবে ঘটে যাওয়া একটি গোলাকার শিলা

প্রত্নতত্ত্ববিদ ‘সেমির ওসমানাগিচ’ বসনিয়াতে আবিষ্কৃত গোলকটি কোন প্রাকৃতিক ভাবে তৈরি হওয়া গোলক বলে মনে করেন না। তিনি গোলকটিকে স্থানীয় এক হারানো সভ্যতার অস্তিত্ব বলে দাবি করেছেন। বসনিয়ার গোলকটি নিয়ে ইউরোপের প্রত্নতত্ত্ববিদ দের মধ্যে বিতর্ক রয়েছে যে এটি প্রাকৃতিক ভাবে মানুষের দ্বারা তৈরি। 

আরও পড়ুন – ভারতের এক অদ্ভুত কারাগার। সমুদ্রের মধ্যে

গোলকের সম্বন্ধে যে সমস্ত তথ্য গুলি পাওয়া গেছে তা থেকে গোলকের আবির্ভাব সম্পর্কে এটা জানা গেছে যে এগুলি খুব ছোট খনিজ দানা যা আঠালো বালি, খাদ্য শস্য, ময়লা একত্রিত হয়ে হাজার বছর ধরে পাথরের আকার ধারন করেছে। পরবর্তীকালে কোস্টারিকায় এইরকম গোলকের সন্ধান মেলে।এখানে যে শিলাটি পাওয়া গেছে তা প্রায় ৬০০ থেকে ১০০০ হাজার বছরের পুরনো বলে মনে করা হয়। একটি খাবারের কোম্পানি জমিতে চাষ করতে যাওয়ার সময় এর হদিশ পাওয়া যায়। তবে বসনিয়াতে যে গোলকটি পাওয়া গেছে সেটি কোস্টারিকার গোলকের চেয়ে তিন গুন বড়।

বিশ্বজুড়ে বসনিয়া ছাড়াও এই গোলকের অস্তিত্ব মিলেছে নিউজিল্যান্ডের ওটাগো শহরে। সমুদ্রসৈকতে এই ধরনের বোল্ডারের দেখা পাওয়া যায়। এগুলি যে শিলা দ্বারা গঠিত তা প্রাচীন যুগের শৈল। সুতরাং বলা যেতেই পারে এগুলি ৬ কোটি বছরের পুরনো এবং তাদের এত বড় আকার ধারণ করতে প্রায় কোটি কোটি বছর সময় লেগেছিল।

মন্তব্য করুন