চুম্বকীয় পাহাড়ের রহস্য কি? যেখানে কোন গাড়ি গড়িয়ে নিচের দিকে না গিয়ে উপরের দিকে যায়

চুম্বকীয় পাহাড়ের রহস্য কি?

ম্যাগনেটিক হিল বা চুম্বকীয় পাহাড়: ম্যাগনেটিক হিল নামে পরিচিত ভারতের এমন একটি জায়গা যেখানে প্রকৃতি তার নিজের নিয়মে বিপরীতে চলে। চুম্বকীয় পাহাড় যেখানে চুম্বকের ক্ষমতা ভারতের অন্যান্য স্থানের তুলনায় বেশি বলে মনে করা হয়। ভারতের লাদাখের লে জেলায় ম্যাগনেটিক হিল নামে একটি জায়গা আছে।

যেখানে কোন বস্তু পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ এর বিপরীতে কাজ করে। এখানকার রাস্তায় যদি একটি চার চাকার গাড়ি কে নিউট্রাল করে রাখা হয় তবে দেখা যাবে গাড়িটি যেদিকে নিচু সেদিকে না গিয়ে যেদিকে উঁচু অর্থাৎ পাহাড়ের দিকে যেতে শুরু করে। ঘণ্টায় প্রায় ২০ কিলোমিটার বেগে পাহাড়ের দিকে যেতে শুরু করে। সাধারণত গাড়ি হ্যান্ডব্রেক লাগানো না থাকলে গাড়ি পাহাড়ি এলাকায় যে দিকে ঢালু হয় সেদিকে যায়। কিন্তু লাদাখের এই ম্যাগনেটিক হিল নামক জায়গায় এর বিপরীত হয়।

এটি লাদাখের অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে পর্যটকরা এখানে এসে তাদের নিজস্ব গাড়ি কে এইভাবে পরীক্ষা করে। প্রশান্ত মহাসাগরের নিচে বারমুলা ট্রাইঙ্গেল নামক জায়গায় এইরকম চুম্বকীয় শক্তির প্রভাব দেখা যায় বলে অনেকেই মনে করেন। সেখানে চুম্বকের শক্তি এতটাই শোনা যায় যে আকাশ থেকে বিমান নাকি এর প্রভাবে রহস্যজনকভাবে হারিয়ে গেছে বহুবার।

আরো পড়ুন- পৃথিবীতে এমন অনেক দেশ আছে যেখানে সূর্য অস্ত যায় না

চুম্বকীয় পাহাড়ের রহস্য কি|ম্যাগনেটিক হিল

লাদাখের এই চুম্বকীয় পাহাড় অতটা শক্তিশালী না হলেও এটি একটি গাড়িকে ২০ কিলোমিটার বেগে নিয়ে যেতে সক্ষম। ভারত সরকার এই অদ্ভুত জায়গাটির পরীক্ষা করেছে ২০০৯ সালে। ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞানির দল এই অঞ্চলে পরীক্ষা করে এবং বিজ্ঞানীরা তাদের গবেষণায় রিপোর্টে বলেন।

কোন জায়গার উচ্চতার পরিমাপ করা হয় সেই জায়গার আশেপাশের গাছগুলি কে দেখে কিন্তু লাদাখের এই অঞ্চলে কোন গাছপালা নেই। সেই কারণে বিজ্ঞানীরা মনে করেন মানুষ যে জায়গাটি উঁচু বলে মনে করেন সেটা নিতান্তই চোখের ভুল। মানুষের শরীরের ভারসাম্য থাকে মানুষের দুই কানের মাঝে কিন্তু যখন নিজের চোখ বিভ্রান্ত হয়ে যায় তখন শরীরও সেইদিকেই সায় দেয়। সেই কারণে মানুষ নিচের দিকে গেলেও তার মনে হয় সে উপরের দিকে যাচ্ছে।

কিন্তু বাস্তবে এই তত্ত্বের সঙ্গে কোনো মিল খুঁজে পাওয়া যায় না। এর আরও একটি কারণ হলো লাদাখের এই ম্যাগনেটিক হিলের উপর দিয়ে যখন কোন বিমান যায় তখন সেই বিমানের চালকরা বলেছেন যে এই অঞ্চলে উপর দিয়ে যাওয়ার সময় তারা তাদের বিমানে কম্পন অনুভূতি করেছেন। সেই কারণে অভিজ্ঞ বিমান চালকরা ম্যাগনেটিক হিলের উপর দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকটা উপর দিয়ে তারা বিমান নিয়ে যায়।

এখনো ম্যাগনেটিক হিল পর্যটকদের কাছে যথেষ্ট জনপ্রিয় এবং মানুষ জায়গাটি উপভোগ করতে এখনো সেখানে যায়। বর্তমানে ম্যাগনেটিক হিলের ক্ষমতা হ্রাস পেতে দেখা গেছে। বিভিন্ন ইউটিউব চ্যানেলের বাইক রাইডাররা যারা লাদাখ ভ্রমণে ২০১৮ এবং ১৯ সালে গিয়েছিল। তাদের ভিডিও গুলি দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন। চুম্বকীয় পাহারের যে জায়গাটিতে ঘটনাটা লক্ষ্য করা যায়, সেখানে এখন আর এই চমৎকার দেখা যায় না। গাড়ি একই জায়গাতে দাঁড়িয়ে থাকে।

Previous articleমহাকাশে খোঁজ পাওয়া গেলো সোনার খনির। নাসা আবিষ্কার করলো এমন এক গ্রহাণু যা সম্পূর্ণ সোনার তৈরি
Next articleভারতে কী পাবজি আন ব্যান হতে পারে? রিলায়েন্স-জিওর সঙ্গে পাবজি কোম্পানির অংশীদারিত্ব!
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

1 COMMENT

Leave a Reply