সারাবছর বরফে ঢাকা আন্টার্কটিকায় অদ্ভুত দাগ বিশেষজ্ঞ মহলে সৃষ্টি করেছে রহস্যের। মহাকাশে ঘুরে বেড়ানো কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে তোলা ছবিতে ধরা পড়লো আন্টার্কটিকার বরফের উপর প্রায় ৭ মাইল লম্বা রহসময় দাগ। জনমানব হীন ধুঁ ধুঁ বরফের উপর এত লম্বা দাগ কোথা থেকে এলো, কিভাবেই সৃষ্টি হলো তা সকলেরই অজানা। দাগটি দেখে মনে হচ্ছে যেন কোনো কিছু খুব দ্রুত বেগে চলে গিয়েছে সেখান থেকে। আর এই অদ্ভুত দাগ নিয়েই শুরু হয়ে গেছে বিশেষজ্ঞ মহলে নানান জল্পনা কল্পনা।
আন্টার্কটিকায় রহস্যময় দাগ
পৃথিবীর বুকে অবস্থিত দুর্গম এলাকা গুলির মধ্যে অন্যতম এই আন্টার্কটিকা। সেই অঞ্চলে মানুষের বসবাস তো অনেক দূরের কথা, এমনকি বিশেষজ্ঞরাও সেই অঞ্চলে পৌঁছাতে পারেন না। এখানকার এমন অনেক জায়গায় আছে যেখানকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। যে কারণে এই অঞ্চল নিয়ে গবেষণা করার জন্যে প্রয়োজন হয়ে পরে কৃত্রিম উপগ্রহ গুলির। এমনি গবেষণার কারণে ছবি তোলার সময় সামনে আসে রহস্যময় কয়েক মাইল লম্বা এই দাগটি।
আরো পড়ুন – সৌরজগতের বাইরে খুঁজে পাওয়া গেল এক নতুন পাথুরে গ্রহ
রহস্যময় দাগের উৎস :
আন্টার্কটিকার রহসময় এই দাগ দেখে সাংবাদিক জো পাপ্পালার্দো জানান, বরফের উপরদিয়ে কিছু একটা দ্রুত গতিতে চলে যাওয়ার দাগ হতে পারে এটি। তিনি বিমান দূর্ঘটনার ইঙ্গিত দেন। তবে এটি কেবল তার ধারণা মাত্র। বিজ্ঞানী মার্ক ডি’ আন্টনিও সাংবাদিক জো পাপ্পালার্দো এর তথ্যকে উড়িয়ে দিয়ে বলেন বিমান দূর্ঘটনার কোনো সম্ভাবনাই নেই। কারণ এমন কোনো কিছু ঘটে থাকলে ধ্বংসাবশেষ পরে থাকতো সেই অঞ্চলে। ইতিমধ্যেই এই নির্জন এলাকায় রহস্যে ঘেরা দাগটি নিয়ে তৈরী হয়ে গেছে নানান আজগুবি তথ্য, যেগুলিকে কন্সপিরেসি থিওরি বলছেন অনেকেই।
আন্টার্কটিকার রহসময় এই দাগ ঘিরে যেসমস্ত তথ্য বার হয়েছে সেই সবকিছুকেই পিছনে ফেলে রহস্যের সমাধান করে ফেলেছে NASA। NASA এর বিজ্ঞানী ড. কেলি ব্রান্ট দীর্ঘ সেই দাগটিকে পর্যবেক্ষণ করেন। তিনি জানান এটি কোনো বিমান দূর্ঘটনা বা কারোর দ্বারা সৃষ্টি কোনো দাগ নয়। এটি মূলত একটি বিরল হিমবাহের দাগ। অতি কম তাপমাত্রার কারণে বরফ জমতে থাকে সেই অঞ্চলে, এবং জমতে জমতে তৈরী হয় কয়েক টন বরফ। আর এই রকম বহু টন বরফ জমে হিমবাহের সৃষ্টি হয় যা ইরাবাস পর্বতের উপর থেকে ভীষণ দ্রুত গতিতে নেমে আসে নিচের দিকে। নিচের দিকে নেমে আসার পর কয়েক মাইল পর্যন্ত এগিয়ে যায় সামনের দিকে। আর এই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরেই সৃষ্টি হয় এমন অদ্ভুত দাগের। আর এমনি একটি দাগেরই ছবি তুলে পাঠায় কৃত্রিম উপগ্রহটি।
[…] […]