মঙ্গল গ্রহে খনিজ পদার্থ ও প্রাণের সন্ধানে প্রায় নয় বছর সময়কাল অতিক্রম করল NASA Curiosity Mars rover (কিউরিওসিটি রোভার)। বর্তমানে এই রোভারটি লালগ্রহের এমন এক অঞ্চলের অবস্থান করছে যে অঞ্চলের মাটি খনিজ পদার্থে পরিপূর্ণ। সালফেট নামের এক ধরনের লবণাক্ত খনিজের মাত্রা এই অঞ্চলে অনেক বেশি। বিজ্ঞানীরা ওই বিশেষ অঞ্চলের বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন মঙ্গলের ভূপৃষ্ঠের বেশ কিছুটা গভীর থেকে যে রহস্যময় রাডার সিগন্যাল গুলি পাওয়া যেত সেই রাডার সিগন্যাল গুলি এই মাটি থেকেই তৈরি হয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল এই রাডার সিগন্যাল হ্রদের জলের সংকেত বহন করে তবে নতুন গবেষণায় বিজ্ঞানীরা দেখেছেন জল থাকার সম্ভাবনা এখানে নগণ্য।
নাসার কিউরিসিটি রোভার মঙ্গলের পৃষ্ঠদেশের নির্দিষ্ট অঞ্চলের পাহাড়ের স্তর গুলি কিভাবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিন্যাস ঘটেছে এবং আশেপাশের পরিবেশ কিভাবে শুকিয়ে গেছে তা জানতে সাহায্য করবে বিজ্ঞানীদের। গবেষকরা প্রায় বহু বছর ধরেই এই বিশেষ অঞ্চলের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য উদ্বিগ্ন ছিলেন। মঙ্গলের জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাণের অস্তিত্ব সম্পর্কেও জানতে সাহায্য করবে রোভার।
নাসার কিউরিওসিটি রোভার ২০১২ সালে মঙ্গল গ্রহে পদার্পণ করেছিল। তারপর থেকেই এটি লালগ্রহের বিভিন্ন অঞ্চলে নিজের অনুসন্ধানের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এর পরবর্তীতে ২০১২ সালে এর সঙ্গেই আরও একটি নতুন রোভার যুক্ত হয় মঙ্গল গ্রহে অনুসন্ধানের কাজে, যে রোভারটি হল মার্স পরসিভিয়ারেন্স রোভার। বর্তমানে এটি লাল গ্রহের প্রাচীন আবহাওয়া মাইক্রোবায়ল জীবন কে সমর্থন করে কি না তা দেখার জন্য মঙ্গলের মাটি পরীক্ষা করছে।
Look at the interesting rocks and hills I’ve seen while climbing Mount Sharp. It’s winter here, so skies aren’t as dusty and I get a clear view down to Gale Crater’s floor. The changing landscape may give insight into how this ancient lake dried up. https://t.co/a3FA66Wloj pic.twitter.com/GZispjMm3l
— Curiosity Rover (@MarsCuriosity) August 17, 2021
আট বছর মঙ্গলের মাটিতে প্রায় ২৬ কিলোমিটার প্রদক্ষিণ করেছে এবং ৩২ রকমের পাথরের নমুনা সংগ্রহ করেছে নাসার এই মার্স কিউরিওসিটি রোভার। নাসার তরফ থেকে জানানো হয়েছে কিউরিসিটি রোভার দ্বারা গৃহীত ৩২ তম নমুনা যেটি ‘পন্টুরস‘ নামে পরিচিত তা থেকে বোঝা সম্ভব হবে কিভাবে মাটিতে এই বিশেষ অংশটিতে সালফেট এর প্রভাব পড়েছিল এবং এর প্রভাবে মাটির ক্ষয় কেমন পরিমাণে হয়েছে তাও জানতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন বর্তমানে এই রোভারটি যে অঞ্চলে রয়েছে সেখানকার পরিবেশ তুলনামূলক শীতল, যে কারণে আকাশ অপেক্ষাকৃত ধুলামুক্ত। কিউরিসিটি রোভার দ্বারা গৃহীত প্যানারোমা ছবিতে মঙ্গলের আকাশ এবং গ্যাল ক্রেটারের মেঝে পর্যন্ত পরিষ্কারভাবে দেখতে পাওয়া সম্ভব হবে।
I’m celebrating my 9th landiversary on Mars. In 2012, I hit the ground running. I’ve traveled a total of 16.3 mi (26.3 km), climbed 1,509 ft (460 m) in elevation & collected 32 drilled samples. Time flies when you’re doing science. Thanks for riding along! https://t.co/PXHNFvZ9wv pic.twitter.com/42naEmeSsv
— Curiosity Rover (@MarsCuriosity) August 5, 2021
আরো পড়ুন-SpaceX এর নয়া অভিযান, হতে পারে এই মাসেই
কিউরিওসিটি রোভার দ্বারা সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা জানতে পেরেছেন মঙ্গল গ্রহে এক সময় প্রাণ যুক্ত জলবায়ু ছিল। রোভার দ্বারা তৈরি করা গর্ত পরীক্ষা করার পর মার্স সায়েন্স ল্যাবরেটরির গবেষকরা নিশ্চিত করেছেন যে প্রায় ১০ মিলিয়ন বছর পর্যন্ত ওই অঞ্চলে একটি হ্রদ অবস্থান করতো, যা ইঙ্গিত দেয় যে এই হ্রদের বিশেষ কিছু অংশ বসবাসযোগ্য ছিল এবং কয়েক হাজার বছর ধরে এখানে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনাও সৃষ্টি হয়েছিল। বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস ৩.৫ মিলিয়ন বছর আগে এই হ্রদের অস্তিত্ব ছিল এবং সেই সময়ে এই গ্রহের হ্রদের জলকে বহন করার মতো আরো ঘণ জলবায়ু ছিল। তবে বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও এই বিষয়ে স্পষ্ট হয়নি যে সেই হ্রদের জলে জীবন উপযোগী পদার্থ ছিল কিনা।
[…] আরো পড়ুন-লাল গ্রহের মাটিতে ৯ বছর পূর্… […]