মঙ্গলে মানুষ বসবাসের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পেল নাসা

পৃথিবীর আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কি হতে চলেছে তা কারোর পক্ষে বলা সম্ভব নয়। তবে প্রযুক্তির উন্নতি যে গতীতে এগোচ্ছে তাতে ভবিষ্যৎ নিয়ে সাধারন একটি ধারণা করা অবশ্যই সম্ভব। বহুদিন ধরেই মঙ্গল অর্থাৎ ‘লালগ্রহে‘ বসতি স্থাপনের চিন্তাভাবনা করছেন বিজ্ঞানীরা। আর মঙ্গলে বসতি স্থাপনের জন্য উপযুক্ত জায়গা সন্ধান ইতিমধ্যে খুঁজে বার করে ফেলেছে নাসা।

মঙ্গলে মানুষ বসবাসের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পেল নাসা

নাসা মঙ্গলে বসতি স্থাপনের জন্য বেশ বহুদিন ধরেই নানান মিশন গুলি করে আসছে। আর তাদের এই মিশনগুলোর সাহায্যে মঙ্গলের বুকে বসতি স্থাপনের একেবারে উপযুক্ত জায়গা খুঁজে বার করেছে নাসা। শুধু তাই নয় সেই জায়গার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের দিকনির্দেশ, কোথায় কিভাবে বাসস্থান বানানো এবং সম্পূর্ণ জায়গার একটি নিখুঁত মানচিত্র তৈরি করেছে নাসা। আর এই ধরনের মানচিত্র এই প্রথম বারের জন্য তৈরি করা সম্ভব হয়েছে। মঙ্গলে বসতি নির্মাণের সম্পূর্ণ গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশ করা হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি‘তে।

আরো পড়ুন – লালগ্রহে ভূমিধ্বস, গলে যাওয়া বরফ এবং ভূপৃষ্ঠের নিচের লবণকে দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা

বিজ্ঞানীদের বিভিন্ন পর্যবেক্ষন ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা থেকে জানা গিয়েছে বাসস্থান নির্মাণ ও বসবাসের জন্য প্রধান প্রয়োজনীয় বস্তু অর্থাৎ জল মঙ্গলের দুই মেরুতে সবচেয়ে বেশি পরিমাণে রয়েছে। এমনকি মঙ্গলে জলস্তর পৃথিবীর তুলনায় অনেকটা ওপরে। যে কারণে ভূপৃষ্ঠের জল পর্যন্ত পৌঁছানোর খুব একটা কঠিন কাজ হবে না। তবে ভূপৃষ্ঠের জল বার করে ব্যবহারযোগ্য করাটা সহজ নয়। কারণ বেশিরভাগ জল বরফে জমে রয়েছে যে কারণে এই জাল ব্যবহার করতে গেলে প্রথমে গলিয়ে নেওয়া প্রয়োজন।

পৃথিবীর বাইরে অর্থাৎ মঙ্গলে বসতি স্থাপনের পর সেই অঞ্চলকে বসবাসের যোগ্য করে তোলার জন্য প্রয়োজন জলের। আর ভবিষ্যতে যদি এই বসতি গড়ে তোলা সম্ভব হয় তবে জলকে কি কি ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব সে বিষয়ে বিজ্ঞানীরা বলেন- ভবিষ্যতে জল পানীয় এর অভাব তো মেটাবেই, শুধু তাই নয় এই জল চাষবাসেও ব্যবহার করা যাবে। এমনকি এই জলে থাকা অক্সিজেন ও হাইড্রোজেন কে জল থেকে আলাদা করে রকেট ফিউল হিসেবে ব্যবহারের কথা বলেছেন তারা। এই রকেট ফিউল্ ভবিষ্যতে মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে যাতায়াত করতে সাহায্য করবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

মঙ্গলে বসতি স্থাপনের উপযুক্ত স্থানটি খুঁজে পাওয়ার জন্য গত দুই থেকে তিন দশক ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল নাসা এবং এসা (ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি)। নাসার পাঠানো তিনটি মহাকাশযান- ‘মার্স ওডিসি‘ ‘মার্স গ্লোবাল সার্ভেয়ার‘ ও ‘মার্স রিকনাইস্যান্স‘ সাহায্য করে মঙ্গলের মানচিত্রকে সম্পূর্ণভাবে তৈরি করতে। নাসার এমন প্রচেষ্টা অদূর ভবিষ্যতে হয়তো মঙ্গলকে মানুষের বসবাসের উপযুক্ত করে তুলবে, আর এমনটি ঘটতে খুব বেশি সময় লাগবে না।

“মঙ্গলে মানুষ বসবাসের উপযুক্ত জায়গা খুঁজে পেল নাসা”-এ 2-টি মন্তব্য

Leave a Reply