নাসার ভয়েজার-১ ১৪ বিলিয়ন মাইল দূর থেকে প্লাজমা তরঙ্গের তথ্য পাঠালো পৃথিবীতে

নাসার ভয়েজার-১ মহাকাশযানটি পৃথিবী থেকে পাঠানো এমন একটি মহাকাশযান যার দূরত্ব এখনো পর্যন্ত সবথেকে বেশি। ৪৪ বছর আগে সৌরজগতের বাইরে থাকা বিশাল গ্যাসীয় স্তরকে পর্যবেক্ষণের জন্য এটি পাঠানো হয়েছিল। যেটি আন্ত: কেন্দ্রিক মাধ্যম (Interstellar Medium) পার করে প্রায় ১১ বিলিয়ন পথ অতিক্রম করে ফেলেছে। এরপরে আরো তিন মিলিয়ন মাইল পথ অতিক্রম করেছে গ্যাসীয় স্তরকে আরো ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ এর জন্য। এত দূরে থাকা সত্ত্বেও এটি পৃথিবীতে তথ্য পাঠিয়ে চলেছে; যা এক আশ্চর্যের বিষয়।

জার্নাল নেচার পত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী গবেষকরা ভয়েজার-১ দ্বারা প্রেরিত প্লাজমা ওয়েভ সিস্টেম (PWS) নিয়ে পর্যবেক্ষণ চালিয়ে যাচ্ছিল অনেক আগে থেকেই। তবে তারা এই গবেষণায় আরও জোর দেয় যখন এই মহাকাশযানটি সৌরজগতের সীমানা অতিক্রম করে।

আরো পড়ুন- ভয়েজার মিশন কি, মানব সভ্যতার সবচেয়ে বড় মহাকাশ মিশন

সৌরজগতের এই সীমানা এক অদ্ভুত জায়গা। যেখানে সূর্য সম্পূর্ণভাবে অদৃশ্য হয়ে যায় এবং এখান থেকে সূচনা ঘটে আত্মকেন্দ্রিক মাধ্যমের (Interstellar Medium)। এই জায়গাটি একপ্রকার শূন্য, নির্জন ও অন্ধকারাচ্ছন্ন। কিন্তু এই শূন্যে ভয়জার-১ খুঁজে পেয়েছে খুব অল্পমাত্রায় প্লাজমা ওয়েভ বা আত্মকেন্দ্রিক গ্যাস। গবেষণায় দেখা গেছে এই মাধ্যমেই রয়েছে নিম্ন এবং অবিচ্ছিন্ন হাম। কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই আন্তঃকেন্দ্রিক গ্যাস বা গ্যাসীয় হাম বিশ্লেষণ করে বলেছেন যে, ভয়জার-১ থেকে পাঠানো ডেটা সিগন্যালটি এতটাই দুর্বল যে তা কারসাজি ছাড়া শ্রবণযোগ্য নয়।

এই সমস্ত তথ্য গুলি ভয়েজার-১ পৃথিবীতে পাঠিয়েছে প্রায় ১৪ বিলিয়ন মাইল দূর থেকে। এই মহাকাশযানটি গত ২০১২ সালের আগস্ট মাসে আন্ত: কেন্দ্রিক মাধ্যমে পৌঁছায় এবং তথ্য সংগ্রহ করতে থাকে। এখনো পর্যন্ত অন্য কোন মনুষ্যসৃষ্ট বস্তু এতদূর যাত্রা করতে পারেনি। সাথেই এটি এলিয়েনদের জন্য বার্তাও বহন করে নিয়ে গেছে, যেখানে রয়েছে মানুষের ছবি, বিভিন্ন স্থানের ছবি ও ৫৫ টি ভাষায় লেখা শুভেচ্ছা পত্র।

“নাসার ভয়েজার-১ ১৪ বিলিয়ন মাইল দূর থেকে প্লাজমা তরঙ্গের তথ্য পাঠালো পৃথিবীতে”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন