লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আবিষ্কার, কেমন ছিল বিজ্ঞান ভিত্তিক লিওনার্দো?

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আবিষ্কার: পৃথিবীর সবচেয়ে বুদ্ধিমান ব্যাক্তি দের একজন ছিলেন লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি ইতালির একজন খ্যাতনামা চিত্রশিল্পী ছিলেন। শুধু চিত্রশিল্পী হিসেবে তিনি জনপ্রিয় ছিলেন তা নয়, তার সঙ্গে তিনি ছিলেন একজন মহান বিজ্ঞানী এবং আবিষ্কারক।

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির জন্ম হয় ১৪৫২ সালে ইতালির ভিঞ্চি শহরে। ফ্লোরেন্সের এক নোটারি পিয়েরে দ্য ভিঞ্চির এবং এক গ্রাম্য মহিলা ক্যাটরিনার অবৈধ সন্তান ছিলেন তিনি এমনটা জানা যায়। লিওনার্দোর নামে কোন বংশ পদবী ছিল না। “দ্য ভিঞ্চি” দিয়ে বোঝায় তিনি এসেছেন ভিঞ্চি নগরী থেকে।তার পুরো নাম “লেওনার্দো দাই সের পিয়েরো দা ভিঞ্চি” এর অর্থ হল পিয়েরোর পুত্র লিওনার্দো এবং সে জন্মেছে ভিঞ্চিতে।

১৪ বছর বয়সে তাকে ডেল ভেরোচ্চির কাছে ছাত্র হিসেবে পাঠানো হয়। যেখানে তিনি নানা শিল্প, চিত্রকলা, ভাষ্কর্য  ইত্যাদি শেখেন। দ্য ভিঞ্চি কে ইতিহাসের সেরা শিল্পী বলা হয়। তিনি কারিগরি, গতিবিদ্যা, ভাষ্কর্য, মডেলিং ইত্যাদিও শেখেন। খুব অল্প বয়স থেকেই চিএ শিল্পে তিনি দক্ষ ছিলেন।

আরও পড়ুন- রয়েস কে নত হতে হয়েছিল জয় সিং প্রভাকরের সামনে

তার আঁকা অনেক ছবিই হারিয়ে গেছে। তার আঁকা ছবির জন্য তিনি সেই সময় বিশেষ জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর আঁকা দুটি জনপ্রিয় ছবি হল “মোনালিসা এবং দ্য লাস্ট সাপার”। এগুলো ছাড়াও তিনি যেই সব বিষয়ে অধ্যায়ন করতেন সেই সমস্ত ছবিও আঁকতেন। যার মধ্যে ছিল নানা পশু ও পাখির ছবি, মানুষের অঙ্গ- নানা পেশির গঠন ইত্যাদি। এর সাথে তিনি আঁকতেন বিজ্ঞান ও যান্ত্রিক বিষয়ক নানা ছবিও।

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আবিষ্কার

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি তার যে আবিষ্কার গুলির জন্য আজও মানুষের মনে বিশেষ স্থানে রয়েছেন সেগুলির ব্যাপারে সংক্ষেপে কিছু বর্ণনা দেওয়া হল:-

সেই সময় কালে যে সকল বন্দুক ব্যবহার হতো তা একবার ব্যবহার করার পর আবার সময় লাগত এই রকম সময়ে দা ভিঞ্চি এমন একটি বন্দুক নির্মাণ করেন যাতে অনেকগুলি ব্যাড়েল ছিল যেগুলি একসাথে পারা যেত এবং চালানো যেত।

লিওনার্দো দা ভিঞ্চি প্যারাসুটের একটি নকশা বানিয়েছিল যেটি দেখতে অনেকটা পিরামিডের আকৃতির মতো। তিনি লিখেছিলেন যদি এমন একটি টেন্ট ব্যবহার করা হয় যেটি ২৩ ফুট চওড়া ও গভীর এবং সেটি দিয়ে প্যারাসুট বানানো যায় তাহলে মানুষ অনেক উঁচু থেকে খুব সহজেই আহত না হয়ে নিচে নামতে পারবে। পরীক্ষা করে দেখা গেছে তার এই নকশা করা প্যারাসুট বেশ ভালো কাজ করে।

আরো পড়ুন- বাংলাদেশের ১ নম্বর ধনী ব্যক্তি

লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আবিষ্কার

তিনি এমন একটি ডাইভিং স্যুট বানিয়েছিলেন যেটি পড়ে সমুদ্রের গভীরে না যাওয়া গেলেও একটি জাহাজের নিচে যাওয়া সম্ভব ছিল। আর এটিতে অক্সিজেন নেওয়ার জন্য দুটি রাবারের নল ব্যবহার করা হতো যেটা উপরে জাহাজে আটকানো থাকতো। লিওনার্দো উড়তে পারা যায় এমন একটি যন্ত্র বানিয়েছিলেন। এটিতে করে একজন ব্যক্তি উড়তে পারত। যন্ত্রটিতে বড় দু’টি ডানা ছিল অনেকে মনে করেন এটিকে কখনো ওড়ানো হয়নি।

দা ভিঞ্চি ব্রিজ বা সেতু নির্মাণেও তাঁর জ্ঞানের পরিচয় দিয়ে গেছেন। তার তৈরি একটি অদ্ভুত সেতু বা ব্রিজ হল স্যুইং ব্রীজ। এর মুখ এক দিক থেকে আরেক দিকে ঘোরানো যেত। বর্তমানে যে সমস্ত হেলিকপ্টার বানানো হয় তার শুরু হয়েছিল দ্যা ভিঞ্চির আবিস্কার থেকেই। তিনি হেলিকপ্টারের প্রথম মডেল ফ্লাইং স্ক্রু বানিয়েছিলেন। যা চালানোর জন্য দুজন ব্যক্তির প্রয়োজন ছিল।

এছাড়াও তিনি বানিয়েছিলেন নানা বাদ্যযন্ত্র, সামরিক হাতিয়ার, হাইড্রোলিক পাম্পও। বর্তমানে যে কাঁচি ব্যবহার করা হয় তাও নাকি লিওনার্দো দা ভিঞ্চির তৈরি এমন মনে করেন অনেকেই। ১৫১৯ সালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আর তিনি ভবিষ্যৎ কে দিয়ে যান শিল্প, কারিগরি বিদ্যা, বিজ্ঞান, ভাষ্কর্য ও নির্মাণে এক নতুন মাত্রা। কারণ তার শিল্পে ছিল গভীর দূরদর্শিতা।

“লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চির আবিষ্কার, কেমন ছিল বিজ্ঞান ভিত্তিক লিওনার্দো?”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন