ভারতের এক অদ্ভুত কারাগার সমুদ্রের মধ্যে। কালাপানির জেল কাকে বলা হয়

কালাপানির জেল বা সেলুলার জেল

ভারতে এখনো এমন এক কারাগার আছে যেখানে ১ জন মাত্র বন্দী আছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখাগেছে ভারতে কারাগারের চেয়ে অপরাধীর সংখ্যা অনেক বেশি। কিন্তু এমন একটি কারাগার যেটি সমুদ্রের মধ্যে রয়েছে, কারাগারটি দেখতে অনেকটা পুরোনো কেল্লার মতো আগে এখানে বহু অপরাধীকে রাখা হতো কারাগারটি ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল দিউ তে অবস্থিত, এটি প্রায় ৪০০ বছরের পুরনো স্থাপত্য।

এই জেলে যে একমাত্র অপরাধী থাকে তার নাম দীপক কামছি। স্ত্রী হত্যার জন্য তাকে আটক করা হয়। জেল থেকে সমস্ত অপরাধীদের গুজরাঠের বিভিন্ন জেলে স্থানান্তর করা হয় কিন্তু দীপককে এখনো স্থানান্তর করা হয়নি। সরকার এই কারাগারের রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়বহুল হওয়ায় এই কারাগার বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এই জেলের একমাত্র অপরাধী দীপকের জন্য এখনো এই জেলে একজন জেলার ও পাঁচ জন জেল পুলিশ এখনও এখানে নিয়োগ আছে। দীপকের আদালতের বিচার শেষ হলেই তাকে স্থানান্তর করা হবে। জেলের কর্মীদের মতে এই জেলে থাকা খুবই কষ্ট পূর্ন এবং অবসাদে যাবার সম্ভাবনা থাকে। সেই কারণে দীপককে দু-ঘন্টা দুরদর্শন টিভি দেখার, একবার খবরের কাগজ পরার ও একবার কিছু সময়ের জন্য বাইরে হাঁটার অনুমতি আছে।

২০১৩ সালে আদালত এই জেলটিকে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে। সরকার এটিকে ভ্রমণ এর উপযগি করার চেষ্টা করছে। দূর থেকে দুর্গটিকে খুব সুন্দর দেখায়।

আরো পড়ুন- অস্ট্রেলিয়ার 10 টি ঐতিহ্যবাহী স্থান

কালাপানির জেল বা সেলুলার জেল:

ভারতবর্ষে ব্রিটিশ রাজ চলাকালীন ১৮৯৬ সালে কালাপানির জেল তৈরি শুরু হয় এবং এর নির্মাণ কার্য সম্পন্ন হয় ১৯০৬ সালে। ব্রিটিশরা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের কয়েদ করার জন্য এই জেল নির্মাণ করে। জেলটি আন্দামান নিকোবর দ্বীপপুঞ্জতে অবস্থিত। জেল থেকে পালানোর কোন রাস্তা ছিল না কারণ জেল থেকে বাইরে গেলেই সমুদ্রের মুখোমুখি হতে হবে। শুধুমাত্র ভারতেই নয় বর্তমান বাংলাদেশ, বর্মা এবং শ্রীলঙ্কা থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক স্বাধীনতা সংগ্রামীদের এই জেলে রাখা হত।

জেলটিতে প্রত্যেকটি ঘর একে অপরের সঙ্গে সংযুক্ত থাকলেও ঘরগুলি এতটাই ছোট যে কয়েদিরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলতে পারতো না। এই জেল নির্মাণের সময় মোট ৭টি শাখা থাকলেও বর্তমানে তা ৩টি তে এসে দাঁড়িয়েছে। জেলটিতে প্রত্যেকটি ঘরে একটি করে কয়দি থাকত, এই কারণে একে সেলুলার জেল বলা হয়। কয়েদি দের একা থাকাটাই জেলটিতে সংঘর্ষপূর্ণ ছিল। জেলটিতে প্রচুর ভারতীয় কয়েদি কে প্রাণদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।

বলাহয় যে ১৯৪২ সালে জাপান আন্দামান-নিকোবর আক্রমণ করলে ব্রিটিশদের এই দ্বীপ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল এবং নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু সেই সময় এই দ্বীপে আসার কথাও বলা হয়েছে। বর্তমানে কারাগারের একটি অংশের সরকারি হাসপাতাল তৈরি করা হয়েছে। যেখানে ৪৫ জন ডাক্তার কাজ করেন। হাসপাতাল ছাড়াও কারাগারটির অপর অংশটিতে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। এর ভিতরে একটি মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে যেখানে ২০ জন স্বাধীনতা সংগ্রামী নাম উল্লেখ করা হয়েছে, যাদের এই জেলে প্রানদন্ড দেওয়া হয়েছিল।

Previous articleহসপিটাল থেকে ছাড়া পেলেন শচীন টেন্ডুলকার। সুখবর দর্শকদের জন্য
Next articleজাহ্নবী কাপুরের অত্যাশ্চর্য ফটোশুট মালদ্বীপে। দেখুন সেই ছবি গুলি
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

1 COMMENT

Leave a Reply