চিনের চ্যাং-৫ মিশন|Chang’e-5 mission in bengali

চীনের চ্যাং-৫ মিশন সফল ভাবে চাঁদের উত্তর-পশ্চিম ভাগ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে এসেছে ১৬ই ডিসেম্বর ২০২০। চীনের চ্যাং-৫ মিশন চীনের ‘চাঁদের গবেষণা কার্যক্রমের’ একটি অংশ। গত ১৬ই ডিসেম্বর বুধবার এই মিশনের মাধ্যমে চীন চাঁদের ‘ওসেনাস প্রসেলারারাম’ প্রদেশের কিছু মাটি ও নমুনা সফল ভাবে পৃথিবীতে নিয়ে আসতে সফল হয়েছে।

চীনের মিশন চীনের পূর্ববর্তী সফল মিশন গুলোর ফল। গত ২৪শে নভেম্বর ২০২০ ‘চীনের জাতীয় মহাকাশ সংস্থা'(CNSA) দ্বারা মিশনটি লঞ্চ করা হয়। এটি চীনের প্রথম একটি মিশন যেখানে তারা চাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে। সম্পূর্ণ মিশনটি একটি রোবোটিক মিশন ছিল। ২৪শে নভেম্বর মিশনটি লঞ্চ হবার পর ডিসেম্বরের ১ তারিখ চ্যাং-৫ এর ল্যান্ডার চাঁদে তার নির্দিষ্ট জায়গায় অবতরণ করে।এরপর সম্পূর্ণ রোবটিক সরঞ্জাম এর মাধ্যমে ড্রিলিং পদ্ধতিতে চ্যাং-৫ চাঁদের নমুনা সংগ্রহ করে।

চিনের চ্যাং-৫ মিশন|Chang’e-5 mission in bengali

এরপর ডিসেম্বরের ৩ তারিখ চ্যাং-৫ এর প্রোবটি চাঁদের থেকে লঞ্চ হয় পৃথিবীর উদ্দেশ্যে। তবে চ্যাং-৫ মিশনের এই প্রোবটি সরাসরি পৃথিবীতে আসেনি, চ্যাং-৫ মিশনটি মোট চারটি পর্যায়ে সংগঠিত হয়। 

[ ল্যান্ডার – আসেন্ডার – অর্বিটার – রিটার্নার ]

ল্যান্ডার যে মডিউলটি চাঁদে অবতরণ করে। আসেন্ডার যে অংশটি নমুনা সংগ্রহ করে পুনরায় চাঁদের কক্ষপথে ফিরে আসে এবং চাঁদ থেকে সংগৃহীত নমুনা গুলো অর্বিটারের মধ্যে থাকা রিটার্নার প্রোবটিতে স্থানান্তর করে। এরপর অর্বিটার সঠিক সময়ে রিটার্নার ক্যাপসুলটিকে ছেড়ে দেয় পৃথিবীতে ফিরে আসার জন্য। এই ক্যাপসুলটি পৃথিবীতে ১৬ই ডিসেম্বর নির্ধারিত সময়ে ফিরে আসে।

চাঁদ থেকে এই মিশনটি ১.৭কেজি চাঁদের উত্তর-পশ্চিম ভাগের মাটি সংগ্রহ করে নিয়ে আসে। ১৯শে ডিসেম্বর সংগৃহীত নমুনা গুলো চীনের গবেষকদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। চীনের এটি পঞ্চম সফল মিশন চাঁদকে নিয়ে। চাঁদের মিশন গুলিতে চীন বরাবরই সফল। 

চাঁদে চীনের পূর্ববর্তী কিছু মিশন, চীনের চাঁদের মিশন
  • চ্যাং-১: চাঁদকে নিয়ে চীনের প্রথম মিশনটি ছিল চ্যাং-১ যা ২০০৭ সালে সফলভাবে সম্পন্ন হয়। 
  • চ্যাং-২: ২০১০ সালে লঞ্চ হয় চ্যাং-২ মিশন, প্রথম এই দুটি মিশন ছিল একটি অর্বিটার মিশন। যেখানে তারা একটি অর্বিটারকে চাঁদের পরিক্রমা করার জন্য পাঠিয়ে ছিল। 
  • চ্যাং-৩: চ্যাং-৩ মিশন যা ২০১৩ সালে লঞ্চ হয়, এটি চীনের প্রথম মিশন ছিল যেখানে চীন চাঁদে ‘হালকা অবতরণ’ করে। এই মিশনটিতে ল্যান্ডারের সাথে একটি ‘রোবট গাড়ি’ ছিল যেটি চাঁদের ভূপৃষ্ঠে চলাচলের জন্য তৈরি করা হয়।
  • চ্যাং-৪: এই মিশনটি লঞ্চ হয় ২০১৮ সালে, এই মিশনটির মাধ্যমে চীন সর্বপ্রথম চাঁদের অন্ধকার অংশে অবতরন করে। এর পূর্বে মহাকাশ জগতের কোনো মিশনই চাঁদের এই অংশে অবতরন করতে পারেনি।

আরো পড়ুন- ভারতের শীর্ষ ১০টি COC গেমিং চ্যানেল ২০২০ 

চ্যাং-৫ মিশনটি এমন একটি মিশন ছিল যেটি ৪৪ বছর পর চাঁদ থেকে সফলভাবে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে এলো। শেষ যে মিশনটি চাঁদের নমুনা নিয়ে আসতে সফল হয় সেটি লঞ্চ হয়েছিল ১৯৭৬ সালে রাশিয়ার দ্বারা। আমেরিকা, রাশিয়ার পর চীন তৃতীয় দেশ যারা চাঁদ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে। চ্যাং-৫ মিশনের মাধ্যমে যে নমুনা গুলো পৃথিবীতে নিয়ে আসা হয়েছে সেটি প্রায় ১.২১ আরব সাল পুরনো বলে মনেকরা হচ্ছে। সম্পূর্ণ মিশনটি সংঘটিত হয় ২৩ দিনের।

Chang’e-5 mission in bengali

চীনের চ্যাং-৬ মিশন লঞ্চ হবে ২০২৪ সালের মধ্যে, ২০৩০ সালের মধ্যে চীন চাঁদে মানব মিশন করবে। চাঁদে মানুষ পাঠানোর পূর্বে এই সমস্ত মিশন গুলো তারই প্রস্তুতি বলা যায়। চীনের চ্যাং-৫ মিশন ২০২০ অবশ্যই মহাকাশ বিজ্ঞানে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

“চিনের চ্যাং-৫ মিশন|Chang’e-5 mission in bengali”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন