হায়াবুসা-২ এর সংগৃহীত নমুনা বিজ্ঞানীদের কপালে ভাঁজ ফেলল। লম্বা অপেক্ষার পর কেবলই কালো চারকোল

বিশ্বের উন্নতশিল দেশগুলির মধ্যে জাপানের স্থানটি যে ঠিক কোথায় তা সকলেরই জানা। এত উন্নত একটি দেশে মহাকাশকে নিয়ে চলা গবেষণায় আশার আলো দেখতে শুরু করেছিল জাপান; তাদের হায়াবুসা-২ (Hayabusa-2) মহাকাশযানটি লঞ্চ করার পর থেকেই। তবে সে আশায় কিছুটা জল ঢেলে দিলো তাদের মহাকাশঅভিযান। যা হাতে পেলেন তাতে লাভ তেমন একটা হয়নি বিজ্ঞানীদের।

হায়াবুসা-২ এর সংগৃহীত নমুনা

জাপান দ্বারা নির্মিত মহাকাশযান হায়াবুসা-২ গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে মহাকাশে প্রেরণ করা হয়। পৃথিবী থেকে যাত্রা শুরু করে এটি মহাকাশে প্রায় ১৯০ মিলিয়ন মাইল দূরে চলে যায়। এত দূরে অবস্থিত একটি গ্রহানুর থেকে নমুনা সংগ্রহের জন্য। বিজ্ঞানীরা আশাবাদী ছিলেন তাদের এই মহাকাশযানটি সেই গ্রহানু যেটির নাম ‘রায়াগু‘ (RYUGU); সেখান থেকে যে নমুনাগুলো আনবে সেগুলি থেকে হয়তো এমন কোন তথ্য সামনে আসবে যা আগামী দিনে মহাকাশকে আরো ভালোভাবে জানবার জন্য ব্যবহৃত হবে। রায়াগু গ্রহাণুটিতে জাপানের মহাকাশযান হায়াবুসা-২ কে দুটি অংশে নমুনা সংগ্রহের জন্য পাঠানো হয়েছিল। যে দুটি অংশে গেলে সৌর বিকিরণ এর ক্ষতির সম্ভাবনা কম। সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহের পর সম্প্রতি পুনরায় পৃথিবীতে নিরাপদে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয় এটিকে।

হায়াবুসা-২ মহাকাশযান,Hayabusa-2

জাপান থেকে মহাকাশযানটি গ্রহাণুতে পাঠানোর পর সেখানে দুটি ধাপে নমুনা সংগ্রহ করে এটি। যেটি বহন করে সরাসরি পৃথিবীতে এটিকে ফিরিয়ে আনা হয়। মহাকাশযানের ভিতরে থাকা ক্যাপসুলটি থেকে গ্রহাণুর নমুনাগুলো যখন বিজ্ঞানীরা একে একে বার করে আনেন, তখন নমুনা দেখে বিজ্ঞানীরা খানিকটা হতাশ হয়ে পড়েন। ক্যাপসুল থেকে কেবলমাত্র যৎসামান্য কফির মতো কালো টুকরো ছাড়া আর কিছুই হাতে পাননি তারা।

মহাকাশযান থেকে পাওয়া নমুনাগুলো গবেষণার জন্য গবেষণাগারে পাঠানো হয়। গবেষণায় যে তথ্য সামনে আসে, সেখানে চারকোল ছাড়া আর কিছুই হাতে পাননি তারা। যে চারকোল গুলির মধ্যে সবচেয়ে বড় দানাটি ছিল ১ সেন্টিমিটার এর মতো লম্বা এবং খুবই শক্ত। গ্রহাণু থেকে সংগৃহীত চারকোল দানা থেকে বিজ্ঞানীদের একটি মতামত সামনে আনেন; যেখানে তারা জানান, এই সংগৃহীত চারকোল সম্ভবত কোনো বড় অংশের টুকরো। তবে সামান্য চারকোলগুলি থেকে যে সৌরজগতের আদিমকাল সম্পর্কে কোন তথ্যই বিজ্ঞানীরা খোঁজ করতে অসমর্থ হয়েছেন সে বিষয়ে বলা বাহুল্য। আগামী দিনে হায়াবুসা টু এর মত আরো মিশন গুলির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।

মন্তব্য করুন