কাগজের আবিষ্কারক কে ছিলেন? নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু কাগজ আবিষ্কারের ইতিহাস

কাগজের আবিষ্কারক কে ছিলেন? নিত্য প্রয়োজনীয় বস্তু কাগজ আবিষ্কারের ইতিহাস

কাগজের আবিষ্কারক কে ছিলেন

কাগজ এমন এক বস্তু যার ব্যবহার সারা বিশ্বজুড়ে করা হয়। কিন্তু ‘কাগজ প্রথম কে তৈরি করেছিল? কিভাবে কাগজ তৈরি করা হয় এবং ভারতে কবে কাগজ তৈরি শুরু হয়?‘ এরকম বেশ কয়েকটি প্রশ্ন অনেকেরই মনে আসে। বাচ্চাদের পড়াশোনা থেকে শুরু করে সমস্ত কর্ম ক্ষেত্রে কাগজের ভূমিকা অপরিহার্য। মূলত ঘাস বাঁশ কাঠ এবং সেলুলোজ জাতীয় কাঁচামাল থেকে কাগজ তৈরি করা হয়ে থাকে। কাগজের আবিষ্কারক দেশ বললে চীনের কথা বলা যায়। কারন সবার আগে চীনে কাগজের ব্যবহার করা হয়েছিল কাগজের আবিষ্কারকের নাম হল কাই লুন। তিনি চীনের অধিবাসী ছিলেন।

 কাগজ আবিষ্কারের ইতিহাস

খ্রিস্টপূর্ব ২০০ বছর আগে হান রাজবংশের আমলে কাই লুন কাগজের আবিষ্কার করেন। কাই লুনের কাগজ আবিষ্কারের পূর্বে বাঁশ অথবা রেশমের কাপড়ের উপর লেখা হতো। তবে এই দুটি পদ্ধতিতে দুটি সমস্যা ছিল। রেশম দামি বস্তু ছিল তাই এতে খরচ এর মাত্রা বেশি হতো। অন্যদিকে বাঁশ ভারী হওয়ার সমস্যায় পড়তে হতো। তাই সেই সময় কাই লুন লেখার জন্য এমন বস্তু নির্মাণ করার কথা ভেবেছিল যা হালকা ও পাতলা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেশ সস্তাও হবে। তাই ওই সময় তিনি ভাং, তুঁত, গাছের ছাল ও অন্যান্য কিছু পদার্থের সাহায্যে কাগজ নির্মাণ করেছিলেন। তিনি যে কাগজ সেই সময় তৈরি করেছিলেন সেগুলো বেশ চকচকে, কোমল ও মসৃণ হতো। এরপর থেকে ধীরে ধীরে কাগজের ব্যবহার সারাবিশ্বে ছড়াতে শুরু করে।

আরও পরুন – চকলেট কিভাবে তৈরি হয়। চকলেট তৈরির ইতিহাস

প্রথমদিকে চীনে কাগজ বানানোর জন্য নানারকম গাছপালা ব্যবহার করা হতো। গাছপালার থেকে সংগ্রহ করা কাঁচামাল জলের সাথে মিশিয়ে এক রকম ঘন তরল পদার্থ বানানো হতো। এরপর তার মধ্যে ডুবিয়ে তা তুলে নিয়ে রোদে শুকাতে দেওয়া হতো। নানা রকমের উদ্ভিদ এর সাহায্যে আলাদা আলাদা মানের কাগজ তৈরি করা হতো। এই সময় থেকেই আরো নানা পদ্ধতি ব্যবহার শুরু হয়েছি। কাগজ আবিষ্কারের পর চীন কাগজ তৈরির পদ্ধতি গোপন করে রেখেছিল। তাই বহু সময় পর্যন্ত শুধুমাত্র এই কাগজ তৈরি ও ব্যবহার করা হতো। 

ভারতের প্রথম পেপার মিল

ভারতের প্রথম কাগজ সপ্তম শতাব্দীর দিকে তৈরি হলেও এর চাহিদা বাড়তে শুরু করেছিল দ্বাদশ শতাব্দীতে। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শ্রীরামপুরে ১৮১২ সালে প্রথম পেপার মিল তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু সেই সময় কাগজের চাহিদাগত সমস্যার কারণে সেটি বন্ধ হয়েছিল। এরপর ১৮৭০ সালে আবার নতুন করে কলকাতার নিকটে বালিগঞ্জে কাগজের কারখানা তৈরি করা হয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গ ভারতের প্রধান কাগজ উৎপাদনকারী রাজ্য হিসেবে গণ্য। ভারতের প্রথম কাগজের মিলটি ১০০ বছর পুরনো।

আমেরিকার ফিলাডেলফিয়া তে কাগজ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৬৯০ তে। ১৮৩০ এর সময় চার্লস ফেনেরটি এবং ফ্রেডরিক গোটলব কেলার কাগজ তৈরির জন্য নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করেন। তারা এমন একটি যন্ত্র তৈরি করেছিলেন যার মধ্যে কাঠ থেকে তন্তু আলাদা করা যেত। সেই তন্তু দিয়ে কাগজ তৈরি করতেন। তন্তু শুদ্ধিকরণ করে চার্লস ফেনেরটি সাদা কাগজ নির্মাণের পদ্ধতি বের করেন। বর্তমানে কাগজের গুণগতমান অনেক উন্নত হয়েছে এবং উন্নত মানের সঙ্গে এটি বেশ সস্তা হয়েছে। আর কাগজ সারাবিশ্বে রোজ প্রচুর ব্যবহার হচ্ছে।

Previous articleGame Maps: ভিডিও গেমের ম্যাপ কিভাবে তৈরি হয় জানেন?
Next articleApple AirTag খুঁজে বার করল বন্যায় ভেসে যাওয়া কুকুরছানা
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

1 COMMENT

Leave a Reply