ব্ল্যাকহোল-এর মাঝে কি প্রবেশ করা সম্ভব? কি জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা

ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে প্রায় সকলেই কম বেশি আকর্ষণ অনুভব করেন, কারণ রহস্যের সাথে সাথে এটি মানুষের মনে নানান প্রশ্নের জাগরন ঘটায়। এর মাঝে গভীর অন্ধকার আলোকেও পারাপারে বাধা দেয়। কি আছে সেই অন্ধকারে? উত্তরের খোঁজ চলে আসছে বহুদিন ধরে। বিশ্বের বড় বড় বিজ্ঞানীরা যেমন স্টিফেন হকিং, অ্যালবার্ট আইনস্টাইন থেকে শুরু করে অনেকেই এটিকে অধ্যায়ন করেছেন। তবে ব্ল্যাকহোলকে পুরোপুরি বুঝে ওঠা এখনো সম্ভব হয়ে ওঠেনি।

ব্ল্যাকহোল-এর মাঝে কি প্রবেশ করা সম্ভব

ব্ল্যাকহোলকে অধ্যায়ন করা কালীন অনেকের মনে প্রশ্ন উঠে এসেছে যে, এই ব্ল্যাকহোল-এর মাঝে কি প্রবেশ করা সম্ভব? একজন মহাকাশচারী কি ব্ল্যাকহোলের মাঝে প্রবেশ করতে পারবে? আর এই প্রশ্নের উত্তরই তুলে ধরেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীরা বলেছেন, হ্যা! এটি করা সম্ভব। তবে ব্ল্যাকহোলের মাঝে যাওয়ার যাত্রাপথ হতে পারে ইতিহাসের সবচেয়ে একাকীত্ব ভরা যাত্রা।

গ্রিনেল কলেজের দুইজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ফিজিক্স প্রফেসর লিও এবং শানশান রডরিকিজ দুই ধরনের ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে জানিয়েছেন এবং দুটির মধ্যে তুলনা করেছেন। তারা জানান, ব্ল্যাকহোলের মধ্যে একটি তারার আকারের এবং অপরটি সুপারমাসিভ হয়ে থাকে। যেখানে তারার আকারের ব্ল্যাকহোলটি কেবলই একটি সূর্যের আকারের হয়ে থাকে এবং সুপারমাসিভ ব্ল্যাকহোল টি ৪ মিলিয়ন সূর্যের একত্রিত আকারের সমান।

আরো পড়ুন – পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে গ্রহাণু, যার আকার স্ট্যাচু অফ লিবার্টির দ্বিগুণ

প্রতিটি ব্ল্যাকহোলের একটি দিগন্ত বলয় থাকে। যে দিগন্ত বলয় স্পর্শ করলে কোনো কিছুই আর ফিরে আসে না। ব্ল্যাকহোলটি তার দিগন্তের কাছে থাকা যে কোন বস্তুই তার গভীর অন্ধকারের মাঝে বিশাল মহাকর্ষীয় বল দ্বারা টেনে নেয়। যে কারণে এ অঞ্চলে যাওয়াটা খুব একটা ভালো পথ নয়।

তারার আকারের ব্ল্যাকহোল গুলির বলয় মাত্র কয়েক কিলোমিটার দীর্ঘ হয় যে কারণে এটিতে থাকে অতিরিক্ত পরিমাণে মহাকর্ষীয় বল। আর এই মহাকর্ষীয় বলের কারণে যদি কোন মহাকাশচারী এর মাঝে প্রবেশ করে তবে তার দেহের সমস্ত পরমাণু ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তবে অপরদিকে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির মাঝে গড়ে ওঠা সুপারমাসিভ ব্লাকহোল গুলির বলায় কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার দীর্ঘ হয়ে থাকে। যে কারণে তারার আকারের ব্ল্যাকহোল গুলির তুলনায় এই সুপারমাসিভ ব্লাকহোল-এর মহাকর্ষীয় বল কম হয়। যেহেতু এই ব্ল্যাকহোলের মহাকর্ষীয় বল কম সে কারণে একজন মহাকাশচারী অনায়াসেই নিরাপদে এটির ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে।

সুপারমাসিভ ব্ল্যাকহোল গুলির মহাকর্ষীয় বল কম থাকায় একজন মহাকাশচারী নিরাপদে এটির মাঝে প্রবেশ করতে সক্ষম হলেও, যদি কখনো এমন ঘটনা ঘটে তবে ভেবে দেখুন সেই মহাকাশচারী কে পার হতে হবে কয়েক মিলিয়ন কিলোমিটার পথ। আর এতটা পথ অতিক্রম করতে হবে একাকী। যে কারণে মানব ইতিহাসে এই যাত্রাপথ ইতিহাসের সবচেয়ে একাকিত্বে পূর্ণ যাত্রা হবে বলেই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা।

“ব্ল্যাকহোল-এর মাঝে কি প্রবেশ করা সম্ভব? কি জানাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন