চাঁদে জলের খোঁজ পেলো নাসা (NASA)। সূর্য কিরণ বিশিষ্ঠ চন্দ্রপৃষ্ঠে অল্প পরিমাণ জল খুঁজে পেয়েছে নাসা স্পেস এজেন্সি

চাঁদে আমেরিকা স্পেস এজেন্সি NASA অনেক বড় সফলতা অর্জন করেছে। সম্প্রতি নাসার থেকে জানানো হয়েছে নাসা দ্বারা মহাকাশে প্রেরিত স্যাটেলাইট দ্বারা চাঁদে জলের সন্ধান পেয়েছে তারা। নাসার সোফিয়া (SOFIA) অর্থাৎ স্ত্রাটস্ফেরিক অবজারভেটরি ফর ইনফ্রারেড অ্যাস্ট্রোনমি (Stratospheric Observatory for Infrared Astronomy) এই কথার সত্যতা যাচাই করে জানায় যে- প্রথমবার চাঁদে যেসব অঞ্চলগুলিতে সূর্য রশ্মি পরে সেখানে জল খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। এত বড় একটি খোঁজ থেকে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এর ফলে চাঁদে ভবিষ্যতে জল কে আরও বিস্তারিত করা সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা এও জানায় যে, যেহেতু চাঁদের খুঁজে পাওয়া জল সূর্যকিরণ বিশিষ্ট এলাকায় পাওয়া গেছে তার থেকে এটা বুঝে নেওয়া সম্ভব যে চাঁদে প্রাপ্ত জল কেবল ঠান্ডা ও অন্ধকার জায়গাতে সীমাবদ্ধ নেই।

নাসা দ্বারা নির্মিত সোফিয়া (SOFIA) এ দ্বারা চাঁদের দক্ষিণ গোলার্ধে অবস্থিত সবচেয়ে বৃহৎ গর্তগুলোর একটি ক্লেভিয়াস ক্রেটার ভিতর জলের অনু অর্থাৎ h2o এর খোঁজ পাওয়া গেছে। এই গহবর পৃথিবী থেকেও দেখা সম্ভব। এর পূর্বে চন্দ্রপৃষ্ঠে হাইড্রোজেন এবং হাইড্রোজেনের সামঞ্জস্যপূর্ণ কিছু অনুর খোঁজ পাওয়া যায়। কিন্তু জল এবং তার কাছাকাছি রাসায়নিক হাইড্রোস্কিলের ভিতরে তফাৎ খুঁজে বের করতে অসমর্থ ছিল নাসার পূর্বে স্যাটেলাইটগুলো।

আরও পড়ুন- আফ্রিকার ৮ টি বিপদজ্জনক প্রানী।

চাদের দক্ষিণ গোলার্ধের এই স্থান থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ১০০ থেকে ৪০০ প্রতি মিলিয়ন ঘনত্বে জলের খোঁজ পাওয়া গেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে এই জলের পরিমাণ মাত্র ১২ বোতল জলের সমান। যে জল চন্দ্রপৃষ্ঠের উপরে চাঁদের মাটির ভিতরে আবদ্ধ আছে বলে মনে করছেন তারা। নাসা সাইন্স মিশন এর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ডিভিশনের ডিরেক্টর ড: পল হার্টজ (dr. Paul hartz) জানান- নাসা H2O এর সংকেত পেয়েছে চন্দ্রপৃষ্ঠে এবং তা চাঁদের সেই দিকে অবস্থিত যে দিকটিতে সূর্যকিরণ এসে পরে। তিনি আরো বলেন নাসার বিজ্ঞানীরা জানেন যে সেখানে জলের অবস্থান নিশ্চিত, তবে এটি তাদের কাছে আরও বড় একটি চ্যালেঞ্জ। নাসা থেকে জানানো হয় সোফিয়া চন্দ্রপৃষ্ঠে যে পরিমাণের জলের খোঁজ করেছে তা আফ্রিকার সাহারা মরুভূমির জলের পরিমাণের চেয়ে ১০০ গুন কম পরিমাণে রয়েছে। জলের এত অল্প পরিমাণে থাকা সত্ত্বেও যেহেতু চাঁদের পৃষ্ঠ বায়ুমণ্ডলহীন ও কঠোর ভূপৃষ্ঠ দ্বারা নির্মিত, সেখানে থাকা অল্প পরিমাণ জলের উপস্থিতি ও বিশেষজ্ঞদের হতবাক করেছে।

বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম গুলি দ্বারা প্রচারিত নাসা দ্বারা এই আবিষ্কার কে প্রথম বারের জন্য চন্দ্রপৃষ্ঠে পাওয়া জলের আবিষ্কার হিসেবে প্রচারিত হলেও, যারা এই বিষয়ে একটু খোঁজ রাখেন তারা অবশ্যই জানেন চাঁদে প্রথম জলের খোঁজ নাসা দ্বারা হয়নি। আমাদের ভারতীয় হিসেবে গর্ববোধ হওয়া উচিত, কারণ চাঁদে প্রথম জলের খোঁজ ISRO দ্বারা হয়, ২০০৯ সালে ভারতীয় স্পেস এজেন্সি ইসরো দ্বারা প্রথমবারের জন্য জানানো হয়, চাঁদে জলের কিছু পরিমাণ অনু থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ চাঁদে জল পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটিকে একপ্রকার চাঁদে জলের খোঁজ পাওয়া গেছে বলা যেতেই পারে। ইসরো এই তথ্য প্রদান করে তাদের প্রথম চন্দ্র অভিযানের পরে, যেটি হয়েছিল চন্দ্রযান-১ দ্বারা। যদিও চন্দ্রযান-১ এ যেটির সাহায্যে জলের খোঁজ পাওয়া যায় সেটি নাসা থেকেই সরবরাহ করা হয়। নাসা দ্বারা সরবরাহ করা মাপার জলের খোঁজ করলেও সেটি ভারতীয় মিশন হওয়ায় নাসা থেকে সম্বর্ধনা জানানো হয় এত বড় একটি খোঁজ করবার জন্য। সেহেতু বলা যেতেই পারে চন্দ্রপৃষ্ঠে প্রথম জলের খোঁজ ও খোজের জন্য অভিযান ইসরো দ্বারাই করা হয় এবং এর সম্পূর্ণ সম্মান পাওয়া উচিত ইসরো (ISRO) এরই।

“চাঁদে জলের খোঁজ পেলো নাসা (NASA)। সূর্য কিরণ বিশিষ্ঠ চন্দ্রপৃষ্ঠে অল্প পরিমাণ জল খুঁজে পেয়েছে নাসা স্পেস এজেন্সি”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন