আমেরিকার অন্যতম মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) এই বছরই লঞ্চ করেছিল তাদের মঙ্গল যান পার্সিভিয়ারেন্স। মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধান এবং জলের খোঁজ করতেই নাসার এই অভিনব অভিযান। সম্প্রতি নাসা মঙ্গল গ্রহের মাটি খুঁড়ে পাথরের নমুনা সংগ্রহের চেষ্টা করছিল তাদের এই মঙ্গলযানের সাহায্য। কিন্তু হাতে এসেছে কেবল অসফলতা। নাসার প্রধান লক্ষ্য ছিল মঙ্গল গ্রহে প্রাণের সন্ধান, আর এই প্রাণের সন্ধান করার কাজে অতি প্রয়োজনীয় ছিল মঙ্গল গ্রহের পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা। কারণ এই পাথরের নমুনা পৃথিবীতে নিয়ে এসে গবেষণা করলেই নির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা সে সম্পর্কে।
মার্কিন স্পেস এজেন্সি সম্প্রতি একটি ছবি প্রকাশ করেছেন, যেখানে দেখা গিয়েছে তাদের মঙ্গলযানের পাশেই একটি ছোট গর্ত। ইতিহাসে এই প্রথম কোন মনুষ্য সৃষ্ট যান মঙ্গলের বুকে গর্ত করতে পেরেছে। কিন্তু সফলভাবে গর্ত করা সম্ভব হলেও পাথর সংগ্রহ করতে পারেনি নাসার মার্স রোভার। পৃথিবীতে পাঠানো ডেটা থেকে এমনটাই জানিয়েছে নাসা কর্তৃপক্ষ। তবে বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস আগামী দিনে তারা এই কাজে সফল হবেনই।
পূর্বে নাসা কর্তৃপক্ষ দ্বারা প্রকাশিত একটি বিবৃতি অনুযায়ী তাদের মার্স রোভার নমুনা সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল এবং তারা আরও জানান যে জেজেরো ক্রেটার থেকে পাথরের নমুনা সংগ্রহ করবে পার্সিভিয়ারেন্স এবং সেই পাথরের নমুনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যাবে মঙ্গল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের কথা। বিজ্ঞানীরা প্রাণের সন্ধান করার জন্য জেজেরো ক্রেটারকেই বেছে নিয়েছিলেন। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন এই জেজেরো ক্রেটারে একসময় অবস্থিত ছিল ‘Cratered Floor Fractured Rough’। বিজ্ঞানীদের কাছে বরাবরই আকর্ষণের জায়গা এই অঞ্চল।
My first drill hole on Mars! Collecting and storing rock samples is a big and complex task, and this is a huge step. Next step: processing. #SamplingMarshttps://t.co/Ex1QDo3eC2 pic.twitter.com/JvrZcZ1NPm
— NASA’s Perseverance Mars Rover (@NASAPersevere) August 6, 2021
আরো পড়ুন-লঞ্চ হতে চলেছে ISRO-এর নয়া স্যাটেলাইট EOS-3, দৈনিক ৪-৫ টি ছবি পাঠাবে ভারতে
নাসা কর্তৃপক্ষ-এর তরফ থেকে আরও জানানো হয়েছে, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে মঙ্গল গ্রহ থেকে মোট ৩০ টি নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলের বুকে পদার্পণ করেছিল নাসার মঙ্গলযান। তারপর থেকেই মঙ্গল গ্রহের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহের কাজে লেগে পরেছে এই রোভার। মঙ্গলযান দ্বারা সংগৃহীত পাথরের নমুনা গুলির সমস্ত ধরনের রাসায়নিক গঠন খতিয়ে দেখা হবে, সেইসঙ্গে পাথরের গঠন এবং কোন কোন পদার্থ দ্বারা তৈরি সেটিও খতিয়ে দেখবেন নাসার বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের দৃঢ় বিশ্বাস জেজেরো ক্রেটার থেকে সংগ্রহীত নমুনা সফলতা এনে দেবে তাদের। কারণ এই জেজেরো ক্রেটারেই একসময় প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এখন দেখার বিষয় হল বিজ্ঞানীদের অনুমান কতটা সত্যতা লাভ করে।