লালগ্রহের পাথরের নমুনা সংগ্রহে নতুন পন্থা অবলম্বন করবে পার্সিভিয়ারেন্স রোভার

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অর্থাৎ NASA তাদের অন্যতম পার্সিভিয়ারেন্স রোভার মঙ্গল গ্রহে পাঠিয়েছিল সেখানকার মাটির নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসার জন্য। যে নমুনা গুলি আগামী দিনে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে জানা যাবে মঙ্গল গ্রহে আদেও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা। মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে নমুনা সংগ্রহে একপ্রকার ‘রোবট জিওলজিসট‘ হিসেবে কাজ করছে নাসার মার্স রোভার। প্রথম পর্যায়ে নমুনা সংগ্রহের ক্ষেত্রে অসফল হলেও দ্বিতীয় বার সেই ভুল করতে চায় না নাসা। যে কারণে বিশেষ এক পদ্ধতি অবলম্বন করছেন তারা। লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে খননের সঠিক জায়গা নির্বাচন করে বিশেষ পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে নিয়ে আসা হবে এমনটাই পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।

লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে কি ধরনের নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে নিয়ে আসা হবে তা বোঝার জন্য পার্সিভিয়ারেন্স রোভারে রয়েছে একটি বিশেষ ধরনের ‘Abrasion tool‘। লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে কি ধরনের নমুনা সংগ্রহ করা উচিত অনেক ক্ষেত্রেই তা বুঝতে অসুবিধা হয় রোভারের। কারণ মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশে আবহাওয়া জনিত কারণে ভূ-গাঠনিক পরিবর্তন সব সময় লক্ষ করা যায়। যে কারণে পাথর দেখে তা সংগ্রহ করা উচিত কিনা সে বিষয়ে বুঝতে সাহায্য করবে এই টুল টি। এই টুলের সাহায্যে রোভার পাথরের উপরের আস্তরনে গর্ত খুঁড়ে ইন্টেরিয়ার অরিজিনাল ফিচারস-এর ধারণা করতে সক্ষম হবে।

মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশে থাকা পাথর এর উপরের আস্তরন খুঁড়ে অভ্যন্তরের মূল উপাদান কি বুঝে নিতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। সে ক্ষেত্রে সাহায্য করবে রোভারের উপরে থাকা একটি বিশেষ ক্যামেরা। পাথরের ভিতর থাকা উপকরণ দেখেই বিজ্ঞানীরা পৃথিবীতে বসে সিদ্ধান্ত নেবেন ওই পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা হবে কিনা। বিজ্ঞানীরা এও জানিয়েছেন পাথরের ভিতরের অংশ থাকা বিভিন্ন উপাদানের বৈশিষ্ট্য দেখে মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশ এবং ভূ-গঠন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা একটি ধারণাও করে নিতে পারবেন।

আরো পড়ুন-মহাকাশে রহস্যময় বস্তুর হদিস! গতিবেগ ঘন্টায় ৮ লক্ষ কিলোমিটার

গত ৬ আগস্ট মঙ্গল গ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে প্রথম নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল। তবে সে ক্ষেত্রে অসফলতাই হাতে আসে। ভঙ্গুর ও চূর্ণবিচূর্ণ পাথরের নমুনা সংগ্রহ করতে অসমর্থ হয় রোভার। তবে দ্বিতীয়বার সেই ভুল না করার চেষ্টা করবেন নাসার বিজ্ঞানীরা। যে কারণে নমুনা সংগ্রহের আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে পর্যবেক্ষণ এবং গবেষণা চালিয়ে নেওয়া হবে। নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করবেন বিজ্ঞানীরা। শুধু তাই নয় নমুনা সংগ্রহের জন্য নতুন একটি জায়গা বেছে নিয়েছেন তারা, যে জায়গাটির নাম ‘Rochette‘। এই অংশে থাকা পাথরের খন্ড গুলির উপর খননকার্য চালাবে পার্সিভিয়ারেন্স। এরপর সেই পাথরের নমুনা বিশ্লেষণ করেই আগামী পদক্ষেপ নেবেন নাসার বিজ্ঞানীরা।

“লালগ্রহের পাথরের নমুনা সংগ্রহে নতুন পন্থা অবলম্বন করবে পার্সিভিয়ারেন্স রোভার”-এ 2-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন