ছোট ছোট ব্ল্যাকহোলের হদিশ পেল হাবাল টেলিস্কোপ, গবেষকদের ধারণা সত্য প্রমাণিত

মহাকাশে কোন দৈত্যাকার ব্ল্যাকহোল নয় ছোট ছোট অনেকগুলি ব্ল্যাকহোলের খোঁজ পেল নাসা, তাদের হাবাল টেলিস্কোপের সাহায্যে। জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে এমন খোঁজ এই প্রথম। যে জায়গায় এই ছোট ছোট ব্ল্যাকহোল গুলির হদিশ পাওয়া গেছে সেই জায়গাটির নাম ‘এনজিসি-৬৩৯৭’, এটি আমাদের সৌরমণ্ডলের পার্শ্ববর্তী নক্ষত্রপুঞ্জ গুলির মধ্যে একটি।

ছোট ছোট ব্ল্যাকহোলের হদিশ পেল হাবাল টেলিস্কোপ

পৃথিবী থেকে ৭ হাজার ৮০০ আলোকবর্ষ দূরে এনজিসি-৬৩৯৭ কে খুঁজে বার করে নাসার হাবাল টেলিস্কোপ। টেলিস্কোপটির আবিষ্কার যে নিতান্তই মিথ্যে নয় তার প্রমাণ দেয় ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সি (এসা)-এর ‘গাইয়া‘ টেলিস্কোপটি। যুগান্তকারী এই আবিষ্কারের গবেষণা পত্রটি প্রকাশ পেয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান জার্নাল ‘অ্যাস্ট্রোনমি এন্ড এস্ট্রোফিজিক্স‘-এ।

টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সেই অঞ্চলে কোন বিশাল ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব নেই, আছে কেবল ছোট ছোট ব্ল্যাকহোল। যারা সেই অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে আছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা নাসার এই আবিষ্কার গত ৪০০ বছরের জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসকে সম্পূর্ণ বদলে দিয়েছে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাসে এত বছর ধরে এই ধারণা ছিল যে, প্রতিটি গ্যালাক্সির কেন্দ্রের কাছে একটি সুপার্মাসিভ ব্লাকহোল থাকে। যে ব্ল্যাকহোলের ভর সূর্যের ভরের ১ কোটি থেকে ১০০ কোটি গুণ পর্যন্ত হতে পারে। আর এই সুপার্মাসিভ ব্লাকহোল গুলি গ্যালাক্সিতে তার আশেপাশে থাকা গ্যাসীয় পদার্থ গুলি নিজের ভিতরে টেনে নিয়ে আরো বড় হতে থাকে ধীরে ধীরে। এরা এতটাই শক্তিশালী হয় যে আলো পর্যন্ত এদের ভেদ করে যেতে সক্ষম হয় না।

আরো পড়ুন – মঙ্গলযান পার্সিভিয়ারেন্স কি মঙ্গলে অবতরণ করতে পেরেছে? কি বলছেন বিজ্ঞানীরা

সুপার্মাসিভ ব্লাকহোল গুলি ছাড়াও রয়েছে স্টেলার মাস ব্ল্যাকহোল যেগুলি আকারে সূর্যের ভরের ৫ থেকে ৬ গুণ আবার কখনো কখনো ১০০ গুন হয়ে থাকে। আর এই স্টেলার মাস ব্ল্যাকহোলের সৃষ্টি হয় তারার মৃত্যুতে।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল এই ছোট্ট স্টেলার মাস ব্ল্যাকহোল থেকে হঠাৎ করে কোনো সুপার্মাসিভ ব্লাকহোল জন্ম হতে পারে না। এই দুটির মাঝে মাঝারি কোন ব্ল্যাকহোল নিশ্চয়ই আছে যেগুলোর ভর সূর্যের ভরের ১০০ গুণ থেকে ১০০০ গুণ হয়ে থাকে। যেগুলোকে ইন্টারমিডিয়েট ক্লাস ব্ল্যাকহোল বলা হয়।

বিজ্ঞানীদের আশা ছিল এনজিসি-৬৩৯৭ নক্ষত্রপুঞ্জে তারা কোন ইন্টারমিডিয়েট ক্লাস ব্ল্যাকহোল খুঁজে পাবেন যা নক্ষত্রপুঞ্জের কেন্দ্রে অবস্থিত হবে। কিন্তু নাসার টেলিস্কোপে চমকে দিয়েছে সকল বিজ্ঞানীদের। সেই নক্ষত্রপুঞ্জের কেন্দ্রস্থল কোন মহাদৈত্যাকার বা মাঝারি ব্ল্যাকহোলের অস্তিত্ব নেই। সমস্ত নক্ষত্রপুঞ্জের জুড়েই রয়েছে কেবল ছোট ছোট ব্ল্যাকহোল। হাবাল টেলিস্কোপ-এর এই আবিষ্কার সকল বিজ্ঞানীদেরকে হতবাক করেছে।

“ছোট ছোট ব্ল্যাকহোলের হদিশ পেল হাবাল টেলিস্কোপ, গবেষকদের ধারণা সত্য প্রমাণিত”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন