গত কয়েকদিন ধরেই অকেজো হয়ে পড়েছে হাবল টেলিস্কোপ, জানালো নাসা

হাবল টেলিস্কোপ: একটানা গত ৩০ বছর ধরে আমাদের পৃথিবীর বাইরে যে অন্তহীন রহস্যে ঘেরা মহাকাশ তার দিকে পাখির চোখের মতো নজর রেখে চলেছে। হাবল টেলিস্কোপ আমাদের মাঝে মধ্যেই মহাকাশের এমন কিছু দৃশ্য দেখিয়েছে যা হয়তো কখনোই সম্ভব হতনা এই টেলিস্কোপ ছাড়া। মহাকাশকে এত বিস্তারিতভাবে জানতে পারার পিছনে একটি বড় কারণ এই টেলিস্কোপ, যেটি গত কিছুদিন ধরে বন্ধ হয়ে পড়েছে। গত শুক্রবার আমেরিকার স্পেস এজেন্সি ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স এন্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (নাসা) এমনটাই জানান।

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা জানিয়েছে, হাবল টেলিস্কোপে থাকা পেলোড কম্পিউটারটিতে কিছু যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে এটি কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে গত রবিবার। যদিও টেলিস্কোপে থাকা অন্যান্য বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি গুলি ঠিকঠাক রয়েছে। নাসা আরো জানিয়েছে, পেলোড কম্পিউটারটির প্রধান কাজ ছিল বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতি গুলি নিয়ন্ত্রণ এবং সমন্বিত করা, সাথেই সমস্ত রকম সুরক্ষার দিকে লক্ষ রাখা।

Naha Hubble space telescope
Image credit- @NASAHubble

গত রবিবার এই কম্পিউটার কাজ করা বন্ধ করে দেওয়ার পরে সোমবার পুনরায় চেষ্টা করা হয় পেলোড কম্পিউটারটি চালু করার। তবে সে ক্ষেত্রে শুধু ব্যর্থতাই হাতে আসে। নাসা জানায়, পেলোড কম্পিউটারের সমস্যার কারণ ইঙ্গিত করেছে কম্পিউটার মেমোরি মডিউলের দিকে। যে কারণে তারা মেমোরি মডিউলটির একটি ব্যাকআপ নেওয়ার চেষ্টা করেন, সে চেষ্টাও ব্যর্থ হয় তাদের।

পেলোড কম্পিউটারটি যে প্রযুক্তিতে চলছে সেটি ১৯৮০ এর দশকের। এর মাঝে কিছু গোলযোগের কারণে ২০০৯ সালে এটিকে ঠিক করা হয়েছিল। নাসার হাবল টেলিস্কোপ লঞ্চ করার ১৯৯০ সালে। এরপর থেকে হাবল টেলিস্কোপ নাসাকে যে পরিমান সাহায্য করেছে তা বলা বাহুল্য। মানুষ জাতির কাছে মহাকাশ সম্পর্কে ধ্যানধারণা সম্পূর্ণ পাল্টে দিয়েছে এই টেলিস্কোপ। হাবল টেলিস্কোপ দ্বারা গৃহীত মহাকাশের বিভিন্ন প্রান্তের ছবি, আমাদের আকাশগঙ্গা অর্থাৎ মিল্কি ওয়ে ছায়াপথের ছবি এবং বহু দূরে থাকা কোন অজানা অচেনা গ্রহের ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছে বারংবার। যেগুলি আমাদের বুঝতে শিখিয়েছে এই মহাকাশ অনেক অজানা রহস্য ঘেরা।

আরো পড়ুন-মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির পাশেই দৈত্যাকার ‘ব্লিঙ্কিং স্টার’, কি বলছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য হাবল টেলিস্কোপ এর থেকেও উন্নত এবং বেশি শক্তিশালী একটি টেলিস্কোপ এই বছরের মধ্যেই পাঠানো হবে মহাকাশে। যে টেলিস্কোপটির নাম জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। এই টেলিস্কোপটি ডিজাইন করা হয়েছে মহাকাশের আরো গভীরের রহস্য উন্মোচনের জন্য।

মন্তব্য করুন