তুলসীর গুণ। তুলসী গাছের উপকারিতা

তুলসীর গুণ, তুলসী গাছের উপকারিতা: তুলসী এমন একটি গাছ যা প্রায় সর্বত্রই হতে দেখা যায়। সাধারণত এটি গৃহস্থবাড়িতে রোপণ করা হয়। এবং মঞ্চ স্থাপন করে এই গাছকে পুজো করা হয়। তবে এই পুজো হিন্দুদের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু এই গাছের রয়েছে অনেক উপকারী ভেষজ গুণ।

এই ভেষজগুণের কারণেই অধিক সমাদর লাভ করেছে গাছটি। প্রাচীনকাল থেকেই চলছে তুলসী গাছের সাহায্যে নানা ভেষজ তৈরীর কাজ। বর্তমান সময়ে অ্যালোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্থার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এ ভেষজ চিকিৎসা অনেকটা ছন্দ হারিয়েছে বটে। কিন্তু তুলসী তার নিজের গুণের ছন্দে বিদ্যমান।

তুলসীর গুণ, তুলসী গাছের উপকারিতা

নিচে দেওয়া হলো এর কয়েকটি সাধারণ এবং সহজ ব্যবহার :-

১. অনেকেরই মুখে দুর্গন্ধ হয়। যাদের মুখের দুর্গন্ধ হয় তারা যদি দিনে চার থেকে পাঁচবার তুলসী পাতা চেবান তাহলে উপকার পাবেন।

২. যদি কারো খাবারে রুচির অভাব হয় তাহলে সকালে খালি পেটে তুলসী পাতা চিবিয়ে খেতে হবে এতে উপকার হবে।

৩. প্রত্যেকদিন সকালে এক গ্লাস করে যদি তুলসী পাতার রস পান করা হয় তাহলে কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা কমে যায়। তবে যাদের কিডনিতে পাথর হয় তারা যদি ছয় মাস নিয়মিতভাবে তুলসীর রস পান করতে পারে তাহলে সেই সমস্ত পাথর গলে মূত্রের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।

৪. মাথাব্যথার মতো সমস্যায় অনেকেই পড়তে হয়। তুলসী পাতা বাটা করে চন্দনের সাথে মিশিয়ে মাথায় মাখলে মাথা ব্যথা সেরে যায়।

৫. নানারকম চর্ম রোগের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে রোজ স্নান করার জলে কয়েকটি তুলসী পাতা আগে থেকে দিয়ে রাখতে হবে। এই তুলসী পাতা ভেজানো জল দিয়ে প্রত্যেকদিন স্নান করলে নানারকম চর্ম রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

৬. মুখে ব্রণ বা কোনো কালো ছোপ হলে তুলসী পাতা বাটা মধুর সঙ্গে মাখিয়ে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।

৭. তুলসী পাতা ও এলাচ জলে ফুটিয়ে নিয়ে পান করলে জ্বর সেরে যায়।

৮. গলা ব্যথা করলে তুলসী পাতা সেদ্ধ করে সেই জল দিয়ে গার্গল করলে গলা ব্যথা কমানো যায়।

৯. শরীরে কোথাও পুড়ে গেলে পোড়া স্থানে তুলসী পাতা বাটা নারকেল তেলের সঙ্গে মিশিয়ে লাগালে উপকার পাওয়া যায়। আর এতে দ্রুত জ্বালাপোড়া কমে।

Read More…

তূলসী গাছের পরিচর্যা – 

তুলসী হলো লক্ষ্মীর অবতার। আর এই তুলসী গাছ গৃহস্থ বাড়ির জন্য। তবে তুলসী গাছ শুধু বাড়িতে থাকলে হয়না। শাস্ত্রের নিয়ম মেনে পুজো করতে হয়। নিয়ম মেনেই গাছের রোপন ও পরিচর্যা করতে হয় না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে এমনটা শাস্ত্রে বলা হয়। বাড়িতে যেখানে সেখানে তুলসী গাছ রোপন করতে নেই। সব সময় তা উত্তর বা উত্তরপূর্ব দিকে রোপন করতে হয়। খেয়াল রাখতে হয় যাতে কোনরকম কাটা জাতীয় গাছ তুলসী গাছের আশে পাশে না থাকে। সবসময় গৃহস্থের উচিত একটি উঁচু স্থান বা বেদী তৈরি করে তুলসী গাছ রোপন করা। প্রতিদিন তুলসী গাছের গোড়ায় জল দিতে হবে। তুলসী গাছের আশেপাশে পরিষ্কার রাখা উচিত। এছাড়া একাদশী, গ্রহণকালে এবং বিশেষ কয়েকটি দিনে তুলসীপাতা না পারা ভালো। বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে তুলসী গাছ মরে গেলে তা বাড়িতে রাখা যাবে না। সকলের উচিত শুকনো বা মৃত তুলসী গাছ কোন পুকুর, নদী বা অন্য কোন জলাশয় ফেলা। কারণ শাস্ত্র মতে শুকনো বা মৃত তুলসী বাড়ির জন্য অমঙ্গল জনক।  ধর্ম থেকে শুরু করে চিকিৎসা তুলসীর জুড়ি মেলা ভার। এখানে সামান্য কয়েকটি গুণের কথা উল্লেখ করা হলো। তবে চিকিৎসার জগতে রয়েছে তুলসীর আরো অনেক ভূমিকা।

“তুলসীর গুণ। তুলসী গাছের উপকারিতা”-এ 2-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন