মহাকাশের সব গ্রহই গোলাকার কেন? উত্তর জানালেন বিজ্ঞানীরা

মহাকাশের সব গ্রহই গোলাকার কেন? উত্তর জানালেন বিজ্ঞানীরা

মহাকাশে গ্রহ এবং নক্ষত্রের সংখ্যা অগুন্তি। মহাকাশের সূচনা কোথায় এবং তার সমাপ্তি কোথায় তা গণনা করে বের করা গেলেও বাস্তবে জানতে পারা এখনো পর্যন্ত মহাকাশ বিজ্ঞানীদের কাছে সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে তারা একটা প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই খুঁজে পেয়েছেন। পৃথিবী সহ আমাদের মহাকাশে যত গ্রহ রয়েছে সমস্ত গ্রহই গোলাকার কেন? এরই উত্তর জানালেন মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।

মহাবিশ্বে আমরা যে গ্রহতে বসবাস করি, সেই গ্রহের নাম পৃথিবী। এই পৃথিবী যেমন গোলাকার তেমনি মহাকাশের সমস্ত গ্রহই গোলাকার। টেলিস্কোপ আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন পৃথিবীর মতোই বাকি গ্রহ, নক্ষত্র ও উপগ্রহগুলোতেও কোন ব্যতিক্রম নেই। চাঁদ, সূর্যর মতোই অন্যান্য গ্রহ, নক্ষত্র, উপগ্রহ সমস্ত কিছুই গোলাকার। কোনটাই পিরামিড আকার বা চতুষ্কোণাকার নয়। পৃথিবী থেকে দূরবীক্ষণ যন্ত্র বা মহাকাশে থাকা বড় বড় টেলিস্কোপ গুলি থেকে বিজ্ঞানীরা অসংখ্য গ্রহ পর্যবেক্ষণ করেছেন। চলতি বছরেই নাসা জানিয়েছিল তারা প্রায় পাঁচ হাজার এক্সোপ্লানেট এর তালিকা করে ফেলেছেন। তবে আশ্চর্যের ঘটনা সকল গ্রহ নক্ষত্রই গোলাকার।

পৃথিবীর বিজ্ঞানীদের দ্বারা আবিষ্কার করা এখনো পর্যন্ত যতগুলো গ্রহ দেখা গিয়েছে তার প্রত্যেকটির আকারই গোলাকার। কোনোটির আকার ঘনকাকার বা পিরামিডের মত নয়। কেন তারা সবসময় বৃত্তাকার হয়? এই প্রশ্নই জেগেছে বিজ্ঞানীদের মনে এবং তারা এর উত্তর খুঁজেও পেয়েছেন। কি বলছেন বিজ্ঞানীরা চলুন জেনে নেওয়া যাক।

জ্যোতির্বিদ্যা, জিওফিজিক্স এবং বায়ুমন্ডলীয় বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনোস পিকাজিও জানিয়েছেন- “পৃথিবী সহ মহাকাশের অন্যান্য সকল গ্রহের আকৃতি গোলাকার হয় মহাকর্ষের কারণে। এই আকৃতিকে গোলাকার বলা হয় না, একে বলা হয় ওবেল স্পেরয়েড। গ্রহের আকৃতি অ-সম্পূর্ণ গোলাকার। কারণ গ্রহগুলির মেরুর দিকে পরিমাণ করা পরিধি বিশুব রেখার পরিধির চেয়ে ছোট হয়।” তিনি আরো জানান মাধ্যাকর্ষ শক্তির কারণে পদার্থের উপরে যে টান সৃষ্টি হয় তার ফলে কণাগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ হয় যার পরিণতিতে একটি গরম ও তরল ভর তৈরি করে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ওই ভর ঠান্ডা হয়ে একটি গোলাকার বৃত্ত তৈরি হয়। এই জন্যই গ্রহ ও উপগ্রহ এবং নক্ষত্র সবকিছুই গোলাকার হয়ে থাকে।

অন্যদিকে যেসব গ্রহাণু বা অন্যান্য মহাজাগতিক বস্তুগুলি গোলাকার নয় সে বিষয়ে তিনি জানান, যেহেতু গ্রহাণুগুলির আবিষ্কর্ষ বল অপেক্ষাকৃত কম সে কারণে তারা গোলাকার রূপ নিতে পারেনা। যে সমস্ত গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ বল অতিরিক্ত বেশি হয় সেইসব গ্রহের বিশুব রেখা গ্রহের মেরুর অনুপাতে অনেকটাই বেশি হয়ে থাকে। যেমন বৃহস্পতির বিষুব রেখা। বৃহস্পতি গ্রহের বিশুররেখা মেরু রেখার তুলনায় ০.৩ শতাংশ বেশি, এমনকি এমনও গ্রহ তারা খুঁজে পেয়েছেন যে সমস্ত গ্রহগুলির বিষুব রেখা মেরুর চেয়ে ৭% পর্যন্ত বেশি।

আরো পড়ুন -Nasa News: ৫০ হাজার বছর পর আবার এই ধুমকেতু পৃথিবীর পাশ কাটিয়ে যাবে, কবে?

মহাশূন্যে শুধু গ্রহগুলি নয় উপগ্রহ, নক্ষত্র এগুলিও গোলাকার হয়ে থাকে। অন্যদিকে ধূমকেতু, গ্রহাণুগুলি তুলনামূলক ছোট, বড়, বিকৃত আকারে দেখতে পাওয়া যায়। আকার ছোট হওয়ার কারণে এই সমস্ত গ্রহাণু বা উপগ্রহ গুলির ভর কম হয় এর ফলে এদের আকারেও ভিন্নতা চোখে পড়ে

Previous articleTork Kratos X Electric Bike: দুর্দান্ত ফিচার সহ লঞ্চ হল এই ইলেকট্রিক বাইক
Next articleভারত শ্রীলংকা দ্বিতীয় একদিনের ম্যাচ 2023- Highlights
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

1 COMMENT

Leave a Reply