প্রাগৈতিহাসিক পাখি কাসওয়ারী। পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত পাখি

প্রাগৈতিহাসিক পাখি কাসওয়ারী। পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত পাখি

পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত পাখি: পৃথিবী সৃষ্টির সময় কাল অর্থাৎ আজ থেকে বহু বহু বছর আগে যখন প্রথম প্রাণের সৃষ্টি হয় তখনকার সময়ে সবথেকে বড় ও হিংস্র প্রজাতি ছিল ডাইনোসর।কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আজ সবই বিলুপ্ত। তবে এই বিলুপ্ত প্রাণী দের থেকে ক্রমশ বিবর্তনের ফলে কিছু প্রাণী ও পাখি আজও পৃথিবীতে নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়েছে। ইমু পাখির বংশোদ্ভূত এমনই এক পাখি কাসওয়ারি

বিশাল আকারের এই পাখি উড়তে অক্ষম। এর বড় বড় পালক, ঠোঁট দেখে এদের আলাদাভাবে চিনে নিতে অসুবিধা হয়না। দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়া ও অস্ট্রেলিয়ার ত্রপিক্যাল ফরেস্ট এ এদের দেখা মেলে। স্থান বিশেষে এরা তিনটি পৃথক প্রজাতির।

পৃথিবীর সবচেয়ে অদ্ভুত পাখি

ক্যাসোওয়ারি পাখিদের তাকানোর ভঙ্গিমাটি আকস্মিক কৌতুহল প্রবন। এদের মুখ উজ্জ্বল নীল বর্ণের, গলার নিচের দিকে ঝুলে থাকে দুটি লাল রঙের ওয়াটলেট ( ত্বকের ফ্লাপস ) ও মাথার উপরে থাকে একটি ফাঁকা ‘ হেলমেট ‘, এটি  ক্যাক্স হিসেবে পরিচিত।ঝুটিতি কেরাটিন দ্বারা নির্মিত। এই পাখির ঝুঁটিটি নরম হয়, খানিকটা ইলাস্টিক জাতীয়। এর একজোড়া পায়ে তিনটি করে আঙ্গুল থাকে। প্রতি আঙ্গুলে ধারালো নখ থাকে। তবে তিনটি আঙ্গুলের মধ্যে মাঝের অঙ্গুলটির অগ্রভাগে প্রায় ৫ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা নখ রয়েছে, যেটি সম্পূর্ণ ছুরির মত কাজ করে। লাজুক স্বভাবের এই পাখি যদি কোনো কারণে কুকুর অথবা মানুষ দ্বারা উত্তপ্ত হয়, তবে এই ছুরির মত নখ দিয়ে এই পাখি আক্রমণ করে শিকারকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এই পাখির স্বভাবের সঙ্গে সঙ্গে ডিম গুলোও অদ্ভুদ। কাসোয়ারি পাখির ডিম গুলো হালকা সবুজ রঙের হয়। যেগুলি দূর থেকে দেখলে কাচা আম ভেবে ভ্রান্ত হতে পারেন। 

আরো পড়ুন: পৃথিবীতে মোট কয়টি দেশ আছে

প্রাগৈতিহাসিক পাখি ক্যাসওয়ারি

গ্রিনিজ বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ড অনুযায়ী এটি পৃথিবীর সবচেয়ে বিপজ্জনক পাখি হিসেবে পরিচিত। শারীরিক গঠন অনুযায়ী নিচের অংশ অর্থাৎ পা জোড়া আক্রমণের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে থাকে এই পাখিটি। পেশীবহুল পা দিয়ে এরা এক মারাত্মক লাথি মারতে সক্ষম। পায়ের আঙ্গুলের অগ্রভাগে অবস্থিত নখ গুলি ভয়াবহ। দৈর্ঘ্য ১২ সেন্টিমিটার (৫ ইঞ্চি) পর্যন্ত হয়ে থাকে। ক্যাসওয়ারি যখন বিপদ অনুভব করে তখন ধারালো ছুরির মতো পা দিয়ে আত্মরক্ষা করে। ক্যাসওয়ারি কে সবচেয়ে বিপদজনক পাখি হিসেবে বিবেচনা করা হলেও এর থেকে মানুষের মৃত্যুর খবর কমই পাওয়া গেছে। অন্যান্য পাখিদের মতো এরাও সংঘাত এড়িয়ে চলতে পছন্দ করে। যেহেতু এই পাখিটি উড়তে সক্ষম নয় সে কারণে যদি কখনো এরা বিপদ অনুভব করে, অথবা তাদের পরিবারের ছোট সদস্যদের জিবন বিপদে আছে বলে মনে করে, তখন এরা হিংস্র হয়ে ওঠে এমনকী আক্রমণ করতে দ্বিধাবোধ করে না।

আরও পড়ুন- বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহর 

বর্তমান সময়ে এদের আবাসস্থল অর্থাৎ জঙ্গল কেটে কৃষি জমিতে রূপান্তরিত হয়ে যাওয়ায়; রাস্তাঘাট নির্মাণের ফলে ধীরে ধীরে বিলুপ্তের পথে এগিয়ে চলেছে এই প্রজাতিটি।প্রতিবছর বহু ক্যাসওয়ারি পাখি মারা যায় যানবাহন ও কুকুরের দ্বারা।

অস্ট্রেলিয়ায় ক্যাসোওয়ারি পাখিটি বর্তমানে সংরক্ষণের আওতায়। এই পাখিটি সংরক্ষণের জন্য অস্ট্রেলিয়ার বন্যপ্রাণী সংগঠন কতগুলি পন্থা অবলম্বনের কথা বলেছে। যা মেনে চললে মানুষ ও পাখি দুটি প্রজাতিই সংরক্ষিত ও সুরক্ষিত থাকবে। মানুষ হিসেবে সকলেরই অবশ্যকর্তব্য বিলুপ্ত প্রায় প্রাণী ও পাখিদের চিরতরে পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করা।

Previous articleপ্রাচীনকালে নির্মিত বিশ্বের ৫ টি বিখ্যাত প্রাচীর যা আজও আশ্চর্যের
Next articleভারতে ওয়েস্টার মাশরুম চাষ, ওয়েস্টার মাশরুম এর চাহিদা বৃদ্ধির কারন
আমরা Extra Gyaan এর সদস্যরা পেশাগতভাবে ব্লগিং এর সঙ্গে যুক্ত। আমরা ইন্টারনেট, প্রযুক্তি, নাসা, মহাকাশের বিভিন্ন তথ্য, শিক্ষাগত দিক ও খেলাধুলার বিষয়ে নিবন্ধ লিখে থাকি সম্পূর্ণ বাংলা ভাষায়। আমাদের উদ্দেশ্য হলো বাংলা ভাষায় আপনাদের সামনে সেরা তথ্য তুলে ধরা।

Leave a Reply