মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী – Mamata Banerjee in Bengali

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী: মাননীয়া শ্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫ই জনুয়ারি ১৯৫৫ সালে। তিনি একজন ভারতীয় রাজনীতিবিদ, যিনি ২০ মে ২০১১ সাল থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অষ্টম এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর পদে প্রথম মহিলা মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি মনোনীত হন। আজকের নিবন্ধে আমরা জানবো পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী সম্পর্কে। এই নিবন্ধে আলোচনা করা হবে তার প্রাথমিক জীবন, শিক্ষা, রাজনৈতিক জীবন, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে। আমরা আমাদের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে এই ধরনের বিভিন্ন তথ্যগুলি পাঠকদের উদ্দেশ্যে লিখে থাকি। বাংলা ভাষার পড়ুয়াদের জন্য এই নিবন্ধটি অত্যন্ত শিক্ষনীয় একটি বিষয় হতে চলেছে। তাই সবাইকে অনুরোধ করা হচ্ছে নিবন্ধটি সম্পূর্ণ পড়বেন। এই ধরনের বিভিন্ন শিক্ষণীয় বিষয় গুলি আরো বেশি পাওয়ার জন্য অতিঅবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটটি ফলো করুন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী, Mamata Banerjee in Bengali

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয় শ্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রীর পদে অধিষ্ঠিত প্রথম মহিলা। কেন্দ্রের ক্যাবিনেট মন্ত্রী হিসেবে তিনি বহুবার দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১১ সালে তিনি প্রথমবারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচিত হন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে ১৯৯৮ সালে অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেস প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার পূর্বে তিনি দুইবার রেলমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। এক্ষেত্রেও তিনি প্রথম মহিলা হিসেবে নির্বাচিত হন রেলমন্ত্রী পদে। এছাড়াও তিনি কয়লা মন্ত্রী, মানব সম্পদ উন্নয়ন, যুব বিষয়ক ও ক্রিয়া, মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। সিঙ্গুরে পশ্চিমবঙ্গের কমিউনিস্ট নেতৃত্বাধীন সরকারের শিল্প উন্নয়নের জন্য পূর্ববর্তী জমি অধিগ্রহন নীতির বিরোধিতা করার পর তিনি জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। এরপর ৩৪ বছর ধরে চলে আসা বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া এর নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট সরকারকে পরাজিত করে সরকার গঠন করেন।

Mamata Banerjee in Bengali: মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১১ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ভবানীপুর থেকে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে তিনি বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হন। যদিও এই নির্বাচনে তার দল সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন লাভ করেছিল। ভারতের ইতিহাসে তিনি তৃতীয় মুখ্যমন্ত্রী যিনি নিজের নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচন হেরে গিয়েছিলেন, এর পূর্বে ১৯৬৭ সালে প্রফুল্ল চন্দ্র সেন এবং ২০১১ সালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য নিজে এলাকায় নির্বাচনীতে হেরে যান। নিজে এলাকায় নির্বাচনে পরাজিত হওয়ার পরে তিনি ২০২১ সালে নন্দীগ্রাম নির্বাচনী এলাকার ফলাফল কে কলকাতা হাইকোর্টের চ্যালেঞ্জ জানান। বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত রয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া শ্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শৈশব জীবন থেকে লড়াইয়ের মাধ্যমে তৃণমূল কংগ্রেস গঠন এবং মুখ্যমন্ত্রী পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার সম্পূর্ণ ইতিহাস এখানে আলোচিত হয়েছে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

প্রারম্ভিক জীবন:

মমতা ব্যানার্জি পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান কলকাতার একটি বাঙালি হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫ জানুয়ারি ১৯৫৫ সালের। তার পিতার নাম প্রমীলেশ্বর ব্যানার্জি এবং মাতা ছিলেন গায়ত্রী দেবী। মমতা ব্যানার্জির যখন ১৭ বছর বয়স তখন তার পিতা প্রমীলেশ্বর ব্যানার্জী চিকিৎসার অভাবে মারা যান, তার পিতা ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা।

শিক্ষা জীবন:

মমতা ব্যানার্জি তার শিক্ষা জীবন শুরু করেন দেশবন্ধু শিশু শিক্ষালয় থেকে ১৯৭০ সালে। তিনি এই স্কুল থেকেই উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন, এরপর তিনি ইতিহাসের স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার জন্য যোগমায়া দেবী কলেজে ভর্তি হন। ইতিহাসে স্নাতক অর্জনের পর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক ইতিহাসের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি শ্রী শিক্ষায়তন কলেজ থেকে শিক্ষায় ডিগ্রি এবং কলকাতা যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজ থেকে আইন বিষয়ের উপর ডিগ্রি অর্জন করেন।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী: রাজনৈতিক জীবন

ছাত্র জীবন-

মমতা ব্যানার্জি তার রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন মাত্র ১৫ বছর বয়স থেকে। ১৯৭০ সালে তিনি একজন তরুণী হিসেবে কংগ্রেস পার্টিতে যোগদানের মাধ্যমে তার রাজনৈতিক জীবন সূচনা করেন। যোগমায়া দেবী কলেজে পড়াশোনা করার সময় তিনি কংগ্রেস পার্টির ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন। এই ইউনিয়ন পরবর্তীতে সমাজতান্ত্রিক ঐক্য কেন্দ্রের সাথে অধিভুক্ত অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন কে পরাজিত করে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী, Mamata Banerjee in Bengali

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

কংগ্রেস পার্টিতে যোগদান-

১৯৭০ সালে মমতা ব্যানার্জি মাত্র ১৫ বছর বয়সে কংগ্রেস পার্টিতে যোগদান এর মাধ্যমে তিনি তার রাজনৈতিক জীবন সূচনা করেন। এরপর ১৯৭৫ সালে সমাজতান্ত্রিক কর্মী এবং রাজনীতিবিদ জয়প্রকাশ নারায়ণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ গড়ে তোলার পর মিডিয়া এবং জনগণের প্রকাশ্যে আসেন। এরপর তিনি দ্রুতই স্থানীয় কংগ্রেস গ্রুপে উঠে আসেন এবং ১৯৭৬ থেকে ১৯৮০ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন। ১৯৮৪ সালে ভারতের সবচেয়ে কম বয়সে সংসদের সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন মমতা ব্যানার্জি। এই নির্বাচনে তিনি পরাজিত করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের যাদবপুর সংসদীয় কেন্দ্রের প্রতিনিধি প্রবীণ কমিউনিস্ট সোমনাথ চ্যাটার্জিকে। এই বছরই তিনি ভারতীয় যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নির্বাচিত হন।

১৯৮৯ সালে সাধারণ নির্বাচনে মালিনী ভট্টাচার্যের কাছে তিনি তার পদ হারান। এরপর ১৯৯১ সালে সাধারণ নির্বাচনে তিনি পুনঃ নির্বাচিত হন এবং কলকাতার দক্ষিণ নির্বাচনী এলাকায় নিজের জায়গা গড়ে তোলেন। ১৯৯৬ এরপর ১৯৯৮ ১৯৯৯, ২০০৪ এবং ২০০৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে তিনি কলকাতার দক্ষিণে নিজস্ব আসনটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালে প্রধানমন্ত্রী পিভি নরসিমা রাও মমতা ব্যানার্জিকে মানবসম্পদ উন্নয়ন, যুব বিষয়ক ও ক্রিয়া এবং মহিলা ও শিশু উন্নয়নের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত করে।

Mamata Banerjee in Bengali: ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার পর তিনি কলকাতার ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ড-এর একটি সমাবেশের মাধ্যমে জানান ক্রীড়া মন্ত্রী হিসেবে তিনি পদত্যাগ করতে চলেছেন, এরপর তিনি দেশের ক্রিয়া উন্নয়নে তার প্রস্তাবের প্রতি সরকারের উদাসীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। এরপর ১৯৯৩ সালে তাকে তার পোর্টফলিও থেকে মুক্ত করা হয়। ১৯৯৬ সালের এপ্রিল মাসে তিনি অভিযোগ করেন কংগ্রেস পশ্চিমবঙ্গের সিপিআইএমের কট্টর হিসেবে আচরণ করছে এবং তিনি জানিয়েছিলেন তিনি একটি ‘পরিচ্ছন্ন কংগ্রেস’ চান।

পোর্টফোলিও থেকে মুক্তি হওয়ার আগের বছর অর্থাৎ ১৯৯২ সালে শারীরিক প্রতিবন্ধী ফেলানী বসাকে নিয়ে যান তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর কাছে, অভিযোগ ছিল ফেলানী বসাকের শারীরিক নির্যাতনের। সেখানে তাকে পুলিশ দ্বারা গ্রেপ্তার করার আগে হেনস্থা করা হয়। সেই মুহূর্তে তিনি শপথ নিয়েছিলেন শুধুমাত্র মুখ্যমন্ত্রী হিসেবেই তিনি ভবনে প্রবেশ করবেন।

এরপর ১৯৯৩ সালে ২১শে জুলাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে রাজ্য যুব কংগ্রেস রাজ্যের কমিউনিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে কলকাতা রয়টার্স বিলিং পর্যন্ত প্রতিবাদের মিছিলের আয়োজন করেন। এই মিছিল ছিল সিপিএমের বৈজ্ঞানিক কারচুপি বন্ধ করার জন্য, ভোটার দের আইডি কার্ড কে ভোট দেওয়ার জন্য একমাত্র প্রয়োজনীয় নথি হিসেবে তৈরি করার দাবিতে এই বিক্ষোভ শুরু হয়। মোট ১৩ জন পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন এবং অনেকেই আহত হয়েছিলেন। এই ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় তৎকালীন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু জানিয়েছিলেন “পুলিশ যা করেছে ভালো করেছে”।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী, Mamata Banerjee in Bengali

‘তৃণমূল’ নতুন দল তৈরি-

পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সভাপতি সোমেন্দ্র নাথ মিত্রের সঙ্গে রাজনৈতিক মতভেদের কারণে ১৯৯৭ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কংগ্রেস ত্যাগ করেন এবং মুকুল রায়কে সঙ্গে নিয়ে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দলের প্রতিষ্ঠা করেন। এই দল তৈরি হওয়ার পর খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কমিউনিস্ট সরকারের অন্যতম বিরোধী দল হিসেবে গড়ে ওঠে। ১৯৯৮ সালের ১১ ডিসেম্বর Women’s Reservation Bill এর বিরোধিতায় সমাজবাদী পার্টির সংসদ দারোগা প্রসাদের কলার ধরে লোকসভা থেকে টেনে বের করে নিয়ে আসেন তিনি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী: BJP এর সাথে জোট

১৯৯৯ সালে তৃণমূল দল গঠনের ২ বছর পর তিনি বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA) সরকারের সঙ্গে যোগদান করেন। বিজেপির সঙ্গে যোগদানের পর তিনি রেলমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত হন।

রেলমন্ত্রী প্রথম বার (১৯৯৯-২০০০)

Mamata Banerjee in Bengali: বিজেপির নেতৃত্বাধীন জাতীয় গণতান্ত্রিক জোট (NDA) সরকারের সঙ্গে যোগদানের পর তিনি রেলমন্ত্রী পদের জন্য মনোনীত হন। রেলমন্ত্রী হওয়ার পর ২০০০ সালে রেলওয়ে বাজেট পেশ করেন। এই বাজেটে তিনি পশ্চিমবঙ্গে জনগণের উদ্দেশে দেওয়া অনেক প্রতিশ্রুতি পূরণ করেন। রেলমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি দিল্লি-শিয়ালদা রাজধানী এক্সপ্রেস এছাড়াও আরো ৪টি নতুন এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করেন, যার মধ্যে রয়েছে হাওড়া-পুরুলিয়া রূপসী বাংলা এক্সপ্রেস, শিয়ালদাহ-নিউ জলপাইগুড়ি পদাতিক এক্সপ্রেস, শালিমার-আদ্রা আরণ্যক এক্সপ্রেস, অনন্যা সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস, অকাল তখত সুপার ফাস্ট এক্সপ্রেস। এছাড়া তিনি পুনে-হাওড়া আজাদ হিন্দ এক্সপ্রেস এর ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ান। এছাড়া আরো তিনটি এক্সপ্রেস ট্রেনের পরিষেবা প্রসারিত করেন। দীঘা-হাওড়া এক্সপ্রেস পরিষেবার কাজও তার রেলমন্ত্রী থাকা কালীন শুরু হয়েছিল।

এরপর তিনি পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি মন্তব্য করেছিলেন ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়েতে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে, বাংলাদেশ ও নেপালের মধ্যে রেলওয়ে যোগাযোগ পুনরায় চালু করার কথা বলেন তিনি। ২০০০ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি মোট ১৯ টি নতুন ট্রেন চালু করেন। ২০০০ সালে পেট্রোলিয়ামের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে রেলমন্ত্রী পদ থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।

রেলমন্ত্রী দ্বিতীয় বার (২০০৯-২০১১)

২০০৯ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয়বার রেলমন্ত্রী হন। পুনরায় রেলমন্ত্রী হওয়ার পর তিনি পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন শহর গুলির সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের জন্য অনেক গুলো ননস্টপ দুরন্ত এক্সপ্রেস ট্রেন চালু করেন। এর পর তিনি মহিলাদের জন্যে বিশেষ Ledis Spacial যাত্রীবাহী ট্রেন চালু করেন।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে লড়াইয়ের জন্যে তিনি তার দল থেকে দীনেশ ত্রিবেদী কে রেলমন্ত্রী হিসেবে মনোনীত করে ২০১১ সালে রেলমন্ত্রী পদ থেকে সরে যান।

কংগ্রেসের সাথে জোট (২০১১)

২০০৯ সালে নির্বাচনের প্রাক মুহূর্তে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড প্রগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স এর সঙ্গে জোটবদ্ধ হন। এই জোট মোট ২৬টি আসন জয়লাভ করে। এর পর ২০১০ সালের পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূল ৬২টি আসনে জয়লাভ করে। বিধাননগর করপোরেশনে তিনি ৭ টি আসনের ব্যাবধানে জয়লাভ করেন। ২০১১ সালে এভাবেই জোটের হাত ধরে তৃণমূল কংগ্রেস সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ গ্রহণ করে। তার দল তৃণমূল ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট শাসনের অবসান ঘটায়।

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী (২০১১-২০২৩)

২০১১ সালের বামফ্রন্ট সরকারের পতন ঘটিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস SUCI এবং INC সহ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় ২২৭ টি আসন পেয়ে ক্ষমতায় আসে।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী, Mamata Banerjee in Bengali

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী: নির্বাচনী ফলাফল

২০১১ নির্বাচন

২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস SUCI এবং INC সহ পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় ২২৭টি আসনে জয়লাভ করেছিল। ২২৭টি আসনের মধ্যে INC ৪২টি, তৃনমূল ১৮৪টি এবং SUCI ১টি আসন পায়। এই জয় বিশ্বের সবথেকে দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা ৩৪ বছরের বামফ্রন্ট সরকারের পতন ঘটায়। ২০১১ সালে নির্বাচনে জয়লাভের পর ২০ মে মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সপথ গ্রহণ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

২০১৬ নির্বাচন

২০১১ সালে মন্ত্রীত্ব লাভের পর ২০১৬ সালের পুনর্নির্বাচনে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস মমতা ব্যানার্জির নেতৃত্বে দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে ২৯৩টি আসনের মধ্যে ২১১টি আসনে জয়লাভ করেন। এই জয় তাকে দ্বিতীয় বারের জন্য পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত করে। জোট ছাড়া একা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ ১৯৬২ সালের পর এটি ছিল দ্বিতীয় বার। এই নির্বাচনের পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বারা চালু করা ‘কন্যাশ্রী প্রকল্প‘ জাতিসংঘ দ্বারা ৬২টি দেশের ৫৫২টি সামাজিক প্রকল্পগুলির মধ্যে সেরা স্থান লাভ করে।

২০২১ নির্বাচন

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করে। এই বছর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু অধিকারীর কাছে ১৯৫৬ ভোটে পরাজিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর পর তিনি এই ফলাফলকে চ্যালেঞ্জ জানান। সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস ২৯২টি আসনের মধ্যে ২১৩টি আসনে জয়লাভ করে এবং তৃতীয়বারের জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হন। এর পরে তিনি রাজভোবনে জগদিপ ধনখড়ের কাছে পদত্যাগ পত্র জমা দেন। ৫ মে ২০২১ সালে তিনি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে ২টি অবশিষ্ট আসনে জয়লাভ করেন এবং তিনি নিজে ভবানীপুর উপনির্বাচনে ৫৮,৮৩৫ ভোটে জয়লাভ করেন। ৭ অক্টোবর তিনি বিধায়ক হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন।

মমতা ব্যানার্জি অফিসিয়াল টুইটার একাউন্ট- CLICK HERE

মমতা ব্যানার্জি অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম একাউন্ট- CLICK HERE

Q&A: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জীবনী

মমতা ব্যানার্জি শিক্ষাগত যোগ্যতা কত ?

মমতা ব্যানার্জি দেশবন্ধু শিশু শিক্ষালয় থেকে উচ্চমাধ্যমিক বোর্ডে পরীক্ষা সম্পন্ন করেন, এরপর তিনি ইতিহাসের স্নাতক ডিগ্রি লাভ করার জন্য যোগমায়া দেবী কলেজে ভর্তি হন। ইতিহাসে স্নাতক অর্জনের পর তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইসলামিক ইতিহাসের স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি শ্রী শিক্ষায়তন কলেজ থেকে শিক্ষায় ডিগ্রি এবং কলকাতা যোগেশচন্দ্র চৌধুরী ল কলেজ থেকে আইন বিষয়ের উপর ডিগ্রি অর্জন করেন।

মমতা ব্যানার্জির বাবার নাম কি ?

মমতা ব্যানার্জির পিতার নাম প্রমীলেশ্বর ব্যানার্জি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কততম মুখ্যমন্ত্রী ?

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের অষ্টম এবং বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী।

মন্তব্য করুন