বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকা ২০২৩: গরিব কথাটির সাথে ভারত ও বাংলাদেশের নাগরিকরা ওতপ্রত ভাবে জড়িত। বর্তমানে এই দুই দেশে যারা সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছে তাদের কঠোর পরিশ্রমই আজকে তাদেরকে এই স্থানে নিয়ে গেছে। স্বাধীনতার পর থেকে ক্রমাগত অর্থনৈতিকভাবে লড়াই করে যাচ্ছে আমাদের দেশ এবং অবশ্যই আজকে আমরা অনেকটাই স্বাবলম্বী হয়েছি। এখনো এই দুই দেশের অধিকাংশ মানুষ গরিব রেখার নিচে জীবন যাপন করে। তাই অর্থনীতি, গরিব, শিক্ষা ইত্যাদির ওপর আমাদের ও সরকারের নজর বেশি থাকা উচিত।
Table of Contents
আজকের এই নিবন্ধে আমরা ২০২৩ সাল অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকা, বর্তমানে বিশ্বের গরিব দেশ কোনটি, কোন দেশগুলি এখনো অর্থনৈতিকভাবে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে সাধারণ জীবন যাপনের জন্য ইত্যাদি দেশগুলি সম্বন্ধে আমরা আলোচনা করব। আশা করা যাচ্ছে আজকের এই নিবন্ধ থেকে পরীক্ষার্থী ও ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষা লাভ করার সুযোগ পাবে। এই নিবন্ধে যে তথ্যগুলি দেওয়া থাকবে এবং যে দেশের নাম উল্লেখ করা হবে সেগুলি ইন্টারনেটে এই সমস্ত বিষয়ে রিসার্চ করা ওয়েবসাইটগুলি থেকে সংগৃহীত।
বিষয় | বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকা |
বিভাগ | আন্তর্জাতিক |
তথ্যসূত্র | গুগল, ইন্টারনেট |
সাল | ২০২৩ |
নিচে আমরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ম্যাগাজিন থেকে সংগৃহীত পৃথিবীর সবচেয়ে গরীব দেশের তালিকা বর্ণনা করা হলো, এই তালিকায় মোট ১০ টি দেশের নাম, জিডিপি Rank অনুসারে দেওয়া হয়েছে,
বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকা ২০২৩
Rank | দেশ | জিডিপি (Per Capita) |
---|---|---|
১. | দক্ষিণ সুদান | $৫১৬ |
২. | বুরুন্ডি | ৮৯১ |
৩. | সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক | ১১২৭ |
৪. | সোমালিয়া | ১৩৭৪ |
৫. | রিপাবলিক অফ কঙ্গো | ১৪৭৪ |
৬. | মোজাম্বিক | ১৫৫৬ |
৭. | নাইজার | ১৬০০ |
৮. | মালাউই | ১৬৮২ |
৯. | চাদ | ১৭৮৭ |
১০. | লাইবেরিয়া | ১৭৮৮ |
- Read More, বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ১০টি দেশ ২০২৩
- Read More, বিশ্বের সেরা ১০০ ধনী ব্যক্তি ২০২৩
- Read More, এশিয়া মহাদেশে কয়টি দেশ আছে ও কি কি ২০২৩
উপরের যে ১০ টি দেশের নাম উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলি অধিকাংশ আফ্রিকা মহাদেশের অন্তর্গত। এবার এই দশটি দেশ সম্বন্ধে আমরা সংক্ষিপ্ত আলোচনা করব,
বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকা
1. দক্ষিণ সুদান- দক্ষিণ সুদান পৃথিবীর গরিবতম দেশের মধ্যে অন্যতম। এই দেশটি ২০১১ সালে সুদান থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছে। এদেশের মোট জনসংখ্যা ২ কোটি ২১ লক্ষ এবং দক্ষিণ সুদানের রাজধানীর নাম জুবা। ২০১১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশটি পৃথিবীর দড়িদ্রতম দেশের মধ্যে চলে এসেছে। তেলের ভাণ্ডারে সমৃদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত দক্ষিণ সুদান তাদের অর্থনীতি মজবুত করে উঠতে পারেনি। এখানকার মানুষ বেশিরভাগই কৃষিকাজ করে কিন্তু প্রতিকূল পরিস্থিতির জন্য প্রচুর ফসল নষ্ট হয় এখানে।
2. বুরুন্ডি- ইতিহাস দেখলে আপনি বুঝতে পারবেন বুরুন্ডি অতীতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশের অধিনায় ছিল যেমন ইংল্যান্ড, জার্মানি, বেলজিয়াম ইত্যাদি দেশের। ১৯৬৬ সালে স্বাধীনতা লাভের পর থেকে দেশটি অধিকাংশ সময় গৃহযুদ্ধের জন্য তাদের অর্থনীতি এখনো বিকশিত হতে পারেনি। বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্র সংঘ থেকে সেকশন করা হয়েছে এই দেশের উপর। এই দেশের অধিকাংশ মানুষ জীবন জীবিকার জন্য বেশি গাছের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু জল, বিদ্যুৎ ইত্যাদি সাধারণ জিনিসগুলোর জন্য এখনো লড়তে হচ্ছে বুরুন্ডিকে।
3. সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক- ১৯৭৯ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর সোনা, তেল, হীরা সমৃদ্ধ এই দেশ হলেও এই দেশের জনগণ অত্যন্ত দরিদ্রতার সঙ্গে জীবন যাপন করে। এই দেশের মোট জনসংখ্যা ৫৫ লক্ষ, ইউরোপের বর্তমান পরিস্থিতির পর সেন্ট্রাল আফ্রিকায় দ্রব্যমূল্যের দাম অত্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। এই দেশটি দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশগুলির মধ্যে একটি।
4. সোমালিয়া- ১৯৬০ সালে সোমালিয়া স্বাধীনতা লাভ করে এরপর বর্তমান সময় পর্যন্ত সোমালিয়া অর্থনৈতিকভাবে সমস্যায় রয়েছে। এই দেশের মোট জনসংখ্যা এক কোটি ২৬ লক্ষ, ২০২০ সালে করোনার প্রভাবে যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশটি। এছাড়া এই দেশের বাচ্চারা অপুষ্টির সমস্যায় রয়েছে। সোমালিয়া পৃথিবীর অন্যতম দরিদ্র দেশের মধ্যে একটি।
5. রিপাবলিক অফ কঙ্গো- ফ্রান্সের থেকে ১৯৬০ সালে কঙ্গো স্বাধীনতা লাভ করে এরপর রাজনৈতিক ও অন্যান্য কারণে দেশটি জর্জরিত রয়েছে। এদেশের মোট জনসংখ্যা ৫৬ লক্ষ, এবং বিভিন্ন সময়ে দেশটির নাম বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকায় এসেছে। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী এই দেশ প্রাকৃতিক সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ এবং এটি আফ্রিকার সবচেয়ে ধনী দেশ হওয়ার যোগ্যতা রাখে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত দেশটি গরিব রেখার নিচে অবস্থান করে।
6. মোজাম্বিক- স্বাধীনতার পর থেকেই দেশটি গৃহযুদ্ধে আচ্ছন্ন ছিল প্রাকৃতিক সমৃদ্ধ থাকা সত্ত্বেও দেশটি বিশ্বের গরীব দেশগুলির মধ্যে একটি। এই দেশের মোট জনসংখ্যা ৩ কোটি ২৫ লক্ষ, দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার ঊর্ধ্বমুখী হলেও এখন পর্যন্ত মোজাম্বিক গরিব রেখার উপরে আসতে পারেনি।
7. নাইজার- নাইজার নদীর নাম অনুসারে এই দেশটির নামকরণ করা হয়েছে। দারিদ্রতা, অনাহার ও অর্থনৈতিকভাবে দেশটি জর্জরিত রয়েছে। এই দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ অঞ্চল সাহারা মরুভূমির অন্তর্গত রয়েছে। মরুভূমির জন্য এই দেশের কৃষি ব্যবস্থায় অগ্রগতি করা সম্ভব হচ্ছে না। মূল্যবৃদ্ধি ও অন্যান্য কারণ এর জন্য দেশটি গরিব রেখার নিচে অবস্থান করেন।
8. মালাউই- ১ কোটি ৭৫ লক্ষ জনসংখ্যা বিশিষ্ট এই দেশ বিশ্বের গরিব দেশের প্রথম ১০ এর মধ্যে রয়েছে। ১৯৬০ এর দশকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে স্বাধীনতা লাভের পর মুদ্রাস্ফীতি, দরিদ্রতা ও অন্যান্য সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলে আসছে। এটি আফ্রিকা মহাদেশের আয়তনের সবচেয়ে ছোট দেশগুলির মধ্যে একটি।
9. চাদ- আফ্রিকার এই দেশটি খনিজ তেলে সমৃদ্ধ হলেও এখনো পর্যন্ত এই দেশের জনসংখ্যা বা নাগরিকরা অত্যন্ত দরিদ্রতার সঙ্গে জীবন যাপন করে। এর প্রধান কারণ সেখানকার প্রশাসন বলেই মনে করা হচ্ছে।
10. লাইবেরিয়া- আফ্রিকা মহাদেশের সবচেয়ে প্রাচীনতম প্রজাতন্ত্রের দেশ গুলির মধ্যে একটি হল লাইবেরিয়া। এর মোট জনসংখ্যা ৪৫ লক্ষ, অর্থনৈতিকভাবে দেশটি অত্যন্ত পিছিয়ে রয়েছে। এর প্রধান কারণ মুদ্রাস্ফীতি, বেকারত্ব ইত্যাদিকে দায়ী করা হয়। মনরোভিয়া হল এই দেশের রাজধানী, জনপ্রিয় ফুটবলার জর্জ ওয়েহ এই দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেই সময় তার ওপর জনগণের প্রত্যাশা আকাশ ছোঁয়া ছিল কিন্তু এর পরও বিশ্বের গরীব দেশগুলির তালিকায় এই দেশটির নাম বারবার চলে আসে।
এই ধরনের আন্তর্জাতিক শিক্ষামূলক খবরের জন্য আমাদের ওয়েবসাইট, ফেসবুক পেজ, টুইটার পেজ, ইন্সটাগ্রাম, ইউটিউব ইত্যাদি প্লাটফর্মে ফলো করতে পারেন। ধন্যবাদ।
Q&A: বিশ্বের সবচেয়ে গরিব দেশের তালিকা
পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশের নাম কি?
লাক্সেমবার্গ হলো পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ এটি ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত, এই দেশের জিডিপি পার ক্যাপিটা ১৩৫,০৪৬ ডলার।
পৃথিবীতে মোট কয়টি দেশ রয়েছে?
জাতিসংঘের তথ্য অনুসারে পৃথিবীতে মোট ১৯৫ টি স্বাধীন রাষ্ট্র রয়েছে। এগুলি ছাড়াও অন্যান্য রাষ্ট্র রয়েছে তবে সেগুলি এখনো জাতিসংঘের স্বীকৃতি লাভ করেনি।