বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করতে মহাকাশযান পাঠাবেন বিজ্ঞানীরা, জানুন বিস্তারিত

মহাকাশে পৃথিবীর মতোই অন্য কোনো গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা সে বিষয়ে সন্ধান চলে আসছে যুগযুগান্তর ধরে, আর সেই পথে আরো একধাপ এগিয়ে যেতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। পৃথিবীর নিকটবর্তী গ্রহ মঙ্গল-এ প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা সে বিষয়ে ইতিমধ্যেই গবেষণা শুরু হয়ে গিয়েছে, আর এই তালিকায় যুক্ত হতে চলেছে আরও একটি উপগ্রহ। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন আমাদের সৌরজগতের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি এর উপগ্রহ ইউরোপা-এ প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা বা প্রাচীনকালে কখন এই উপগ্রহে প্রাণ ছিল কিনা সে বিষয়ে খোঁজ চালাবেন তারা।

বৃহস্পতির (Icy moon Europa) ইউরোপাতে প্রাণের সন্ধান করার জন্য একটি এসইউভি গাড়ির সমান আয়তনের মহাকাশযান তৈরি করতে চলেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের মূল উদ্দেশ্য ওই উপগ্রহে আগে কখনো প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা এবং আগামী দিনে সেখানে মানুষ বসবাস করতে পারবে কিনা সে বিষয়ে সন্ধান চালানো। এক কথায় বলতে গেলে প্রাণ সৃষ্টির শর্তাবলী এখানে উপস্থিত আছে কিনা তাই জানার চেষ্টা করবেন তারা। প্রাণের সন্ধান চালানোর জন্য তৈরি করা হয়েছে সেই মহাকাশযান। মহাকাশযানের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ইতিমধ্যেই একত্রিত করা শুরু হয়ে গিয়েছে (JPL) জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরি-তে। বিজ্ঞানীর এই অভিযানের নাম দিয়েছেন EUROPA CLIPPER MISSION। অভিযান চলাকালীন মহাকাশযানটি বেশ কয়েকবার প্রদক্ষিণ করবে ইউরোপকে। বিজ্ঞানীদের মতে উপগ্রহ টি একটি এলিয়ান ওয়ার্ল্ড, অজানা দুনিয়াতে প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে বেশ উৎসাহিত তারা।

ইউরোপা ক্লিপার মিশন সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, যে মহাকাশযান এর সাহায্যে অভিযানটি করা হবে তার সমস্ত যন্ত্রাংশ জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরীতে একত্রিত করা হবে, মহাকাশযানের আয়তন একটি এসইউভি গাড়ির সমান, এছাড়াও থাকছে একটি সোলার অ্যারে যা একটি বাস্কেটবল কোর্ট এর সমান বিস্তৃত হতে পারে। সমস্ত পরিকল্পনা সঠিকভাবে পরিচালিত হলে আগামী ২০২৪ সালের মধ্যেই এই অভিযান শুরু করে দেয়া হবে। অভিযানের সম্পূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (NASA)। ২০২২ সালের শেষের দিকে মহাকাশযান এর যন্ত্রাংশ গুলি একত্রিত করার কাজ সম্পন্ন হবে।

আরো পড়ুন-চাঁদের বুকে রকেট-এর ধ্বংসাবশেষ এর খোঁজ মেলেনি এখনো, চিন্তিত বিজ্ঞানীমহল

আইস মুন ইউরোপা কে পর্যবেক্ষণ করার জন্য মহাকাশ যানটি তে থাকছে ক্যামেরা ও স্পেকট্রোমিটার। বৃহস্পতির চাঁদের পৃষ্ঠদেশের হাই রেজুলেশন ছবি তোলার জন্য এই ক্যামেরা এবং স্পেকট্রোমিটার ব্যবহার করা হবে। এছাড়া মহাকাশযানটি ইউরোপা এর সাগর এবং পৃষ্ঠদেশে বরফের উপর পর্যবেক্ষণ চালাবে। পর্যবেক্ষণ চালানোর জন্য এই মহাকাশযানটি ইউরোপার পাশ দিয়ে অন্তত ৪৫ বার প্রদক্ষিণ করবে। এছাড়াও ইউরোপার ম্যাগনেটিক ফিল্ড পর্যবেক্ষণের জন্য থাকছে ম্যাগনেটোমিটার, শুধু তাই নয় এই ম্যাগনেটোমিটার এর সাহায্যে সাগরের লবনতা এবং ইউরোপার তলদেশে থাকা সাগরের উপস্থিতি নিশ্চিত করবে মহাকাশযানটি। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য বৃহস্পতির এই আইস মুন ইউরোপা বৃহস্পতির চারপাশে ঘুরে চলা ৫৩ টি চাঁদের মধ্যে অন্যতম।

“বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদে প্রাণের অস্তিত্বের সন্ধান করতে মহাকাশযান পাঠাবেন বিজ্ঞানীরা, জানুন বিস্তারিত”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন