বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে তৈরি করলেন কৃত্রিম ব্ল্যাকহোলের

বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তির বিকাশ আজ এতটা পরিমাণ যে তা কিছুদিন আগে কল্পনাতীত ছিল। আর এমনই এক অবিশ্বাস্য কান্ড করে বসলেন বিজ্ঞানীরা। যে ব্ল্যাকহোলের রহস্য এতদিন মানুষের মনে প্রশ্নের উদ্রেক ঘটিয়ে এসেছে সেই ব্ল্যাকহোল গবেষণাগারে তৈরি করে ফেললেন একদল বিজ্ঞানী। শুধু তাই নয়, প্রায় ৪৭ বছর আগের স্টিফেন হকিন্স এর দ্বারা প্রদত্ত তথ্য কে সত্যি প্রমাণিত করলেন তারা।

বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে তৈরি করলেন কৃত্রিম ব্ল্যাকহোলের

বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে কৃত্রিম ব্ল্যাকহোল তৈরি করে ব্ল্যাকহোল সম্বন্ধে আরও বিস্তারিত গবেষণা করতে চেয়ে ছিলেন। যা তারা সম্ভব করেও দেখিয়েছেন। সাথেই স্টিফেন হকিন্স এর তথ্য কেও সঠিক প্রমাণ করেছেন তারা। কিন্তু কি ছিল এই তথ্য? স্টিফেন হকিন্স জানিয়েছিলেন ব্ল্যাকহোলের থেকেও আলোর বিকিরণ হয়। যাকে বলা হয় হকিং রেডিয়েশন। আর এই গবেষণাপত্র ‘নেচার ফিজিক্সে‘ প্রকাশ করেন টেকনিয়ন-ইজরায়েল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকরা।

ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে প্রায় অধিকাংশ গবেষকদের ধারণা ছিল যে, ব্ল্যাকহোল হল এমন এক জায়গা যার অভিকর্ষের টানে সমস্তকিছুই এর ভিতরে হারিয়ে যায়। এমনকি আলোয় তাকে ভেদ করবার ক্ষমতা রাখেনা। আলোতে থাকা ফোটন কণা ব্ল্যাকহোলকে তখনই এড়াতে পারবে যখন এই কণা আলোর গতিবেগ এর চেয়ে আরো বেশি গতিতে ছুটে চলে। যা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করতেন বিজ্ঞানীরা।

আরো পড়ুন – মঙ্গলে ২১ফুট পথ অতিক্রম করল পারসিভিয়ারেন্স রোভার। দেখে নিন ভিডিও

কিন্তু ১৯৭৪ সালে স্টিফেন হকিন্স এই ধারণায় কিছু ত্রুটি খুঁজে পেয়েছিলেন। তিনি বলেন, আলো ব্ল্যাকহোল কে অতিক্রম করতে পারে, তবে তার পরিমাণ খুবই কম। তাঁর মতে আলোর দুটি ফোটন কণার মধ্যে একটি ব্ল্যাকহোল কে এড়িয়ে যেতে পারে না তবে অপরটি তা করতে সক্ষম। যাকে বলা হয় ‘হকিং রেডিয়েশন‘। তবে এই আলো দৃশ্যমান নয়, যাকে আমরা ইনফারেড রে নামেও জানি।

বিজ্ঞানীদের সম্প্রতি আবিষ্কৃত ব্ল্যাকহোলটিতে ৪৭ বছর পূর্বের এই তথ্যটি সত্য প্রমাণিত করেছে বিজ্ঞানীরা। তারা এও বলেন, এই রেডিয়েশন যেমনটি হকিন্স জানিয়েছেন ঠিক তেমনই এবং এর প্রাবল্য স্থির।

কিন্তু কিভাবে তৈরি হলো গবেষণাগারে এই ব্ল্যাকহোলের। তার বিশ্লেষণ দিতে গিয়ে বিজ্ঞানীরা বলেন, তারা আলোর কণার বদলে শব্দ তরঙ্গের কনা ফোনন কে ব্যবহার করে ৮ হাজার রুবিডিয়াম পরমাণুর গ্যাস প্রবাহকে ২৭৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা ঠান্ডা করেন। তারপর সেই গ্যাস প্রবাহকে লেজার রশ্মি দ্বারা একটি স্থানে আবদ্ধ করেন। যার ফলে হাজার হাজার পরমাণু একত্রে একটি পরমাণুর মতো আচরণ করতে থাকে। এবার বিজ্ঞানীরা লেজার রশ্মির সাহায্যে রুবিডিয়াম গ্যাসকে ঝরনার মত প্রবাহিত করতেই গবেষণাগারে তৈরি হয়ে যায় ব্ল্যাকহোল টির। যা এতদিন পর্যন্ত অকল্পনীয় ছিল তা আজ বাস্তবায়িত করেছেন একদল বিজ্ঞানী।

“বিজ্ঞানীরা গবেষণাগারে তৈরি করলেন কৃত্রিম ব্ল্যাকহোলের”-এ 1-টি মন্তব্য

মন্তব্য করুন