পৃথিবীর বয়স কত ২০২৩

পৃথিবীর বয়স কত ২০২৩: বর্তমানে আমাদের এই পৃথিবীর বয়স কত এই প্রশ্নটা হয়তো কোন একদিন আপনাদের মনের অবশ্যই এসেছে। উত্তর জানার জন্য আপনি যদি গুগল বা ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করে থাকেন তবে আপনি দেখতে পাবেন, বর্তমানে পৃথিবীর বয়স ৪.৫ বিলিয়ন বছর। কিন্তু কিভাবে পৃথিবীর এই বয়স নির্ধারণ করা হলো?, কোন প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করা হয়েছে? এই সমস্ত বিষয় জানতে আমাদের এই আজকের আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।

সায়েন্স বা সায়েন্টিফিক থিওরির বিষয়বস্তুগুলো নিয়ে আমাদের কৌতুহল সব সময় থেকে যায় সেই রকমই পৃথিবীর বয়স নিয়ে যদি আপনি একটু পর্যালোচনা করেন তবে অতি আকর্ষণীয় কিছু বিষয় আপনার সামনে আসবে এবং যেগুলি অবশ্যই আপনার জ্ঞান ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবে। আজকে আমরা পৃথিবীর যে বয়স দেখতে পাচ্ছি সেটা আজ থেকে ৭৩ বছর আগে তৈরি করা থিউরির উপর ভিত্তি করে তৈরি। ১৯৫০ সালে সায়েন্টিস্টরা প্রথমবার পৃথিবীর বয়স প্রকাশ করে যেখানে তারা এই তথ্য বিভিন্ন এক্সপেরিমেন্ট এর উপর তৈরি করে।

পৃথিবীর বয়স কত ২০২৩

পৃথিবীর বর্তমান বয়স ৪.৫৪ বিলিয়ন বছর,

পৃথিবীর বয়স নির্ধারণে কোন প্রক্রিয়াকে ব্যবহার করা হয়েছে?

১৯৫০ সালে প্রকাশিত পৃথিবীর বয়সের তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর এখনো পর্যন্ত এর কোনো পরিবর্তন হয়নি যদিও বর্তমান যুগে সাইন্স অনেক এডভান্স হয়ে উঠেছে। এবার একবার ভাবুন মানুষের বয়স জানার জন্য জন্ম সার্টিফিকেট আছে কিন্তু জীবজন্তুর বয়স জানার জন্য বিজ্ঞানীরা তাদের ডিএনএ টেস্ট পরীক্ষা করে থাকে। সেরকমই গাছের বয়স জানার জন্য গাছের একটি নির্দিষ্ট জায়গা থেকে ডাল কেটে তার গোলাকার রিং গুলি পরীক্ষা করা হয়। এবার যদি আমরা একটি পাথরের বয়স পরীক্ষা করতে চাই তবে আমরা সাহায্য নিই রেডিওমেট্রিক ডেটিং (Radiomatric Dating) পদ্ধতির। আর এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করেই আমরা পৃথিবীর প্রাচীন থেকে প্রাচীনতম শিলার খোঁজ করে তার বয়স নির্ধারণ করে পৃথিবীর বয়স অনুমান করা হয়। হ্যাঁ এটি সম্ভব কারণ পৃথিবীর এমন অনেক স্থান এখনো রয়েছে যেখানে মানুষ পৌঁছাতে পারেনি অর্থাৎ সেখানকার মাটি, শিলা, পাথর সৃষ্টির পর থেকে সভ্যতার ছোঁয়া লাগেনি। যেরকম উদাহরণস্বরূপ গভীর সমুদ্রের মাঝে যে সমস্ত পাথর বা শিলা গুলি রয়েছে সেই সমস্ত পাথরগুলি এই রেডিওমেট্রিক ডেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে সেগুলির আনুমানিক বয়স জানা সম্ভব।

কি এই রেডিওমেট্রিক ডেটিং প্রক্রিয়া –

রেডিওমেট্রিক ডেটিং প্রক্রিয়া হল এমন এক প্রক্রিয়া যেটি নির্ভর করে রেডিও একটিভ ডিকের উপর নির্ভর করে। রেডিওএক্টিভ ডিকে কার্বনের উপর নির্ভর করে, আমরা জানি পৃথিবীতে প্রায় সমস্ত বস্তুর কার্বন দ্বারা তৈরি। এই কার্বন বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, সেরকমই পাথর বা শিলা তে কার্বন উপস্থিত থাকে। তবে এই কার্বন অন্যান্য কার্বনের তুলনায় একটু আলাদা, কারণ এগুলি সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে সেই কারণে এটিকে রেডিওএক্টিভ ডিকে বলা হয়ে থাকে। এই রেডিওএক্টিভ ডিকে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাচীন পাথর গুলির বয়স আমরা নির্ধারণ করতে পারি।

১৯৫০ সালে আমেরিকার বিজ্ঞানী Clair Cameron Patterson ক্যানিয়ন ডিভাল উল্কাপিণ্ড ও মহাকাশ থেকে আগত অন্যান্য পাথরের টুকরো কে পরীক্ষা করে তথ্য একত্রিত করে এবং ১৯৫৩ সালে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো পাওয়া পাথর আকাস্তা এর পরীক্ষার মাধ্যমে পৃথিবীর বয়স আনুমানিক ৪.৫ বিলিয়ন বছর বলা হয়।

তবে এটিই শেষ পরীক্ষা নয় ১৯৫০ দশকের পর পরবর্তীকালে বহুবার পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয়েছে এবং প্রত্যেকটি পরীক্ষার ফল Cameron Patterson এর দেওয়া তথ্যের আশেপাশে এসে দাঁড়িয়েছে সেই কারণে এখনো পর্যন্ত Cameron Patterson এর দেওয়া তথ্যকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। তবে অবশ্যই পৃথিবীর বয়স কত এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী গবেষণার বিষয় যার তথ্য আমাদের কাছে ভবিষ্যতেও আছে থাকবে।

পৃথিবীর বয়স কত ২০২৩: ইতিহাস

পৃথিবীর বয়স জানার ইচ্ছা শুধুমাত্র বর্তমান সময়ে বৈজ্ঞানিকদের মধ্যেই ছিল না, অতীতে বহুবার বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে বা পুরান পুস্তকে পৃথিবীর বয়স এর উল্লেখ আছে। এমনকি অতীতে বহু দার্শনিক ও পন্ডিতরা পৃথিবীর বয়সের উল্লেখ করেছেন। গ্রীক দার্শনিক রস্তু এর মতে পৃথিবীর বয়স এতটাই বেশি যে আমরা সংখ্যায় তার গণনা করতে পারব না। কিন্তু আপনারা কি জানেন প্রাচীন ভারতের মুনিঋষিরা তাদের বিভিন্ন গ্রন্থে লিখে গেছেন পৃথিবীর কিভাবে সৃষ্টির ইতিহাস, কিভাবে সৌরমন্ডল সৃষ্টি হয় ও কিভাবে এর সমাপ্তি ঘটে। তাদের কল্পনা অনুসারে সৌরমণ্ডল সৃষ্টি হওয়ার পূর্বে বর্তমান সময়ের বিগব্যাং থিওরির মত এক্সপ্লোসন হত এবং বিভিন্ন নক্ষত্র গ্রহে ছড়িয়ে পড়ত।

Q&A: পৃথিবীর বয়স কত ২০২৩

পৃথিবীর বর্তমান বয়স কত?

৪.৫৪ বিলিয়ন বছর, তবে এই তথ্যের ৫০ মিলিয়ন বছর আগে বা পরে বয়সের মধ্যে পৃথিবীর আনুমানিক বয়স হতে পারে।

৪.৫৪ পৃথিবীর বয়স কিভাবে নির্ধারণ হল?

রুবিডিয়াম-স্ট্রন্টিয়াম এবং ইউরেনিয়াম-সীসার মতো ডেটিং পদ্ধতির মাধ্যমে অনেক উল্কাপিন্ডের আইসোটোপিক বিশ্লেষণের পাশাপাশি চাঁদের মাটি ও পাথরের নমুনা থেকে এই বয়স পাওয়া গেছে।

পৃথিবীর নামটি কোথা থেকে এসেছে?

পৃথিবী নামটি অষ্টম শতাব্দীর অ্যাংলো-স্যাক্সন শব্দ এরডা থেকে এসেছে, যার অর্থ স্থল বা মাটি।

মন্তব্য করুন